আন্তর্জাতিক রুটের যেকোনো ফ্লাইট ছাড়ার এক ঘণ্টা আগে বিমানের চেকিং কাউন্টার বন্ধ হয়ে যায়। নির্ধারিত সময়ের মাত্র পাঁচ মিনিট দেরিতে যাত্রী হিসেবে বিমানবন্দরে গিয়ে হাজির হন হাসিব নামের বিমানের একজন পাইলট। ফ্লাইটে উঠতে তিনি কাউন্টারে দায়িত্বরতদের কাছে বারবার অনুরোধও জানান। সেখান থেকে যোগাযোগ করা হয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে। কিন্তু সেখান থেকে ক্লিয়ারেন্স না আসায় পাইলটকে সিঙ্গাপুরগামী ফ্লাইটে উঠতে দেয়া হলো না। এক পর্যায়ে তাকে রেখেই গন্তব্যের উদ্দেশ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ড্রিমলাইনার (বোয়িং ৭৮৭) ফ্লাইটটি উড়ে যায়।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বোর্ডিং ব্রিজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গতকাল মঙ্গলবার রাত ৭টা ২৫ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলট ক্যাপ্টেন হাসিবের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি টেলিফোন ধরেননি।
তবে পাইলট হাসিবকে বিলম্বের কারণে অফলোড করার কথা স্বীকার করে গতকাল মঙ্গলবার রাতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো: মোকাব্বির হোসেন নয়া দিগন্তকে বলেন, সেফটি ইস্যুতে আন্তর্জাতিক রুটের ফ্লাইট ছাড়ার এক ঘণ্টা আগে এবং অভ্যন্তরীণ রুটে আধঘণ্টা আগে চেকিং কাউন্টার বন্ধ হয়ে যায়। কারণ এরপর ইমিগ্রেশন আছে সিকিউরিটিজের বিষয় আছে। এ ক্ষেত্রে কেউই ব্যতিক্রম নয় জানিয়ে তিনি বলেন, আমি যোগদান করার পর ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে এই নিয়ম স্ট্রিকলি মেইনটেইন করা হচ্ছে। এর ফলে বিমানের ফ্লাইটগুলো টেকিনিক্যাল ছাড়া টাইমলি ছেড়ে যাচ্ছে। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, পাইলট হাসিব সিঙ্গাপুরে একটি ট্রেনিংয়ে অংশ নিতে যাত্রী হিসেবে ওই ফ্লাইটের যাত্রী ছিলেন। এটা তদন্তের বিষয় না। তবে কি কারণে তিনি টাইমলি বিমানবন্দরে যেতে পারেননি সেটি দেখা হতে পারে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলট ক্যাপ্টেন হাসিব সিঙ্গাপুরে একটি ট্রেনিংয়ে (আইএফএম) অংশ নেয়ার উদ্দেশ্যে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হাজির হন। কিন্তু তিনি উপস্থিত হওয়ার পাঁচ মিনিট আগেই বিমানের চেকিং কাউন্টার বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় তিনি এয়ারপোর্ট ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকা ডিউটি ম্যানেজারের কাছে বিলম্বের কারণ জানিয়ে বোর্ডিং কার্ড ইস্যুর অনুরোধ জানান। তখন ডিউটি ম্যানেজার পাইলটের অনুরোধ বিবেচনার জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো: মোকাব্বির হোসেনের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করেন। তখন এমডি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে বলে দেন, বিলম্বের কারণে পাইলটকে সিঙ্গাপুরগামী ফ্লাইটে যাওয়ার ক্লিয়ারেন্স দেয়া হবে না। এরপরই ফ্লাইটটি তাকে রেখেই উড়ে যায়।
গতকাল বিমানবন্দর টার্মিনালে কর্তব্যরত একজন কর্মকর্তা নয়া দিগন্তকে বলেন, পাইলট হাসিবের সিঙ্গাপুরগামী ফ্লাইট ছিল সকাল ৮টা ২৫ মিনিটে। আর তিনি চেকিং কাউন্টারে হাজির হন ৭টা ৩০ মিনিটে। অর্থাৎ এক ঘণ্টার বদলে ৫৫ মিনিটে হাজির হন তিনি। এর জন্যই তাকে ওই ফ্লাইটে উঠতে বোর্ডিং পাস দেয়া হয়নি বলে জানান তিনি।