আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে ছোট ভাই আব্দুল কাদের মির্জা বলেছেন, ‘আমার মুখ বন্ধ করার জন্য ওবায়দুল কাদের সাহেব ষড়যন্ত্র করছে, চক্রান্ত করছে।’ তিনি বলেন, ‘রাসেল নামে একজন আছে, ঢাকায় ধান্দা করে খায়, তাকে দিয়ে আমাকে ধমক দিয়েছে। এ ছাড়া সরকারি বিভিন্ন সংস্থা থেকে আমাকে ধমক দেওয়া হয়েছে। বিভিন্নভাবে আমাকে ধমক দেওয়া হয়েছে, যেন এই সংবাদ সম্মেলন না করি।’ গতকাল বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মির্জা কাদের।
‘ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে দেখা করার পর আপনার ঘোষিত যেসব কর্মসূচি স্থগিত করেছিলেন, সেগুলো আবার দেবেন কিনা’- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে মির্জা কাদের বলেন, ‘শুনতেছি আওয়ামী লীগের একটা মিটিং হবে। আমি সেই মিটিং পর্যন্ত দেখব। যদি এগুলোর সমাধান না হয়, তাহলে পরবর্তীতে আপনারাই সব দেখবেন। আমি কখনো এখান থেকে সরব না। আমি কোনো পদ-পদবিকে হাজির-নাজির মানব না। এগুলো আমি ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করব। আমি এগুলোর সঙ্গে নেই।’
নিজের ও পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলাসহ পরিবারকে রাজাকার পরিবার বলার প্রতিবাদে এবং ভোটারবিহীন নির্বাচন বন্ধে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
মির্জা কাদের বলেন, ‘আমরা নাকি রাজাকার পরিবারের সন্তান! ১৯৭১ সালে ওবায়দুল কাদের সাহেব আমাদের এলাকার মুজিব বাহিনীর অধিনায়ক ছিলেন। আমি আব্দুল কাদের মির্জা তখন ছোট ছিলাম, ক্লাস সেভেনের ছাত্র। আমি আমার স্কুল থেকে মোহাম্মদ আলী জিন্নার ছবি পানিতে ফেলে দিয়েছিলাম। বেত্রাঘাত করে আমাকে স্কুল ছাড়া করেছিল। আর এখন বলে আমরা নাকি রাজাকার পরিবারের সদস্য! এত বছর এই দলের পেছনে সময় দিয়েছি, অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছি। আজ অনেক কষ্ট লাগে।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘আমার পরিবারের কেউ রাজাকার ছিল? আপনারা তদন্ত করে দেখেন। আমাদের রাজাকার পরিবার বলে! সন্ত্রাসী বলা হয়। ওবায়দুল কাদের তার পদ-পদবির জন্য মাথা নত করতে পারে, কিন্তু আমি আব্দুল কাদের মির্জা একদিনের জন্যও তাকে ছেড়ে দেব না। আমি অস্ত্রবাজি করব না, আমি তার বিরুদ্ধে কথা বলে যাব। সে তার ছেলের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে, কিন্তু আমি অস্ত্রের রাজনীতি করি না। নিচে আমার গাড়িগুলো দেখেন, কয়েকটা লাঠি হয়তো থাকতে পারে, এর বাইরে কিছু পেলে এর বিচার আপনারা করবেন।’
এ বিষয়ে বড় ভাই ওবায়দুল কাদেরের কাছে বিচার চেয়ে বিচার পাননি জানিয়ে মির্জা কাদের বলেন, ‘জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে ওই আক্রমণের বিষয়ে। উনি আমাকে বলেছিলেন যে, দেখতেছি। কিন্তু আজ চারটা দিনে একটা পিঁপড়াও গ্রেপ্তার হয়নি। সেজন্য আমি এখানে আসতে বাধ্য হয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘আমার মুখ বন্ধ করার জন্য ওবায়দুল কাদের সাহেব ষড়যন্ত্র করছে, চক্রান্ত করছে। আমি শুনতেছি আওয়ামী লীগের একটা মিটিং হবে। সেদিন আমি দেখব ওবায়দুল কাদের আমার ভাই, নাকি ওবায়দুল কাদেরের ভাই একরামুল করিম চৌধুরী আর নিজাম হাজারী। এটা সেদিন আপনারাও দেখবেন।’