দ্বিতীয় প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় কুটির, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি (সিএসএমই) খাতের জন্য ৫৭০ কোটি টাকা ছাড়ের সংবাদ ইতিবাচক। আটটি প্রতিষ্ঠানকে বরাদ্দ দেওয়া এ অর্থ দিয়ে প্রান্তিক পর্যায়ে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত কুটির, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি (সিএসএমই) উদ্যোক্তাদের স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করতে সর্বশেষ ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকার ‘দ্বিতীয় প্রণোদনা প্যাকেজ’ ঘোষণা করেছে সরকার।
এর আগে শুরুতে করোনা মোকাবিলায় ‘প্রথম প্রণোদনা প্যাকেজ’ হিসাবে ১ লাখ ২১ হাজার কোটি টাকার ২১টি প্রণোদনা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল। বলার অপেক্ষা রাখে না, ব্যাংকগুলোর কঠিন শর্তের কারণেই প্রথম প্রণোদনা প্যাকেজের অর্থ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের কাছে পৌঁছায়নি।
এবার ব্যাংকিং পদ্ধতির বাইরে ভিন্ন পদ্ধতিতে প্রণোদনার অর্থ সিএসএমই খাতে পৌঁছানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। নিঃসন্দেহে এটি একটি ভালো উদ্যোগ। আমরা আশাবাদী, এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত কুটির, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি (সিএসএমই) উদ্যোক্তারা উপকৃত হবে; পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতেও গতিসঞ্চারে এটি সহায়ক হবে।
দেশে হোটেল-রেস্তোরাঁ, মুদি দোকানপাট, খুচরা-পাইকারি দোকানি, মিষ্টির দোকানি ও মার্কেট বিপণিবিতানে ছোট ব্যবসায়ীসহ অন্তত ৭৮ লাখের বেশি কুটির, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তা রয়েছেন এবং এ খাতে এক কোটিরও অধিক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। বাংলাদেশ ইনিশিয়েটিভ অ্যান্ড লিডিং ডেভেলপমেন্টের এক জরিপে দেখা গেছে, করোনায় এ খাতে প্রায় ৬৫ শতাংশ আয় কমার পাশাপাশি ৫৮ ভাগ সিএসএমই ব্যবসা বন্ধের ঝুঁকিতে পড়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝুঁকিতে থাকা ট্রেডিং ব্যবসায়ীসহ কুটির, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তারা ইতঃপূর্বে সরকার ঘোষিত প্রথম প্রণোদনা প্যাকেজের কোনো সুবিধা না পেলেও দ্বিতীয় প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ছাড়কৃত অর্থে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ পাবেন, যা স্বস্তিদায়ক।
অতীতে আমাদের অর্থনীতি নানামুখী প্রাকৃতিক ও রাজনৈতিক দুর্যোগ অতিক্রম করে এগিয়েছে; দেশের পরিশ্রমী মানুষ বেঁচে থাকার তাগিদে কঠোর পরিশ্রম করে অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছেন।
আশা করা যায়, এবারও এর ব্যত্যয় ঘটবে না। তবে এজন্য বিভিন্ন প্রণোদনার আওতায় প্রদেয় ঋণ সহায়তার সুষ্ঠু ব্যবহারের পাশাপাশি সঠিক সমস্যা চিহ্নিত করে সেগুলো মোকাবিলার উদ্যোগ গ্রহণ ও প্রকৃত উদ্যোক্তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। তা না হলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হবে।