অর্থনীতিতে চাহিদার স্থিতিস্থাপকতা নামে খুব সহজ ও মজার একটা বিষয় আছে । এই স্থিতিস্থাপতা বিষয়টা কী সেটা একটু বুঝে নেই। সাধারণত দ্রব্যের দাম যখন বাড়ে সেই দ্রব্যের জন্য মানুষের চাহিদা কমে যায় এবং উল্টাভাবে দাম কমলে চাহিদা বেড়ে যায়। স্থিতিস্থাপকতা হলো, এই বাড়া-কমার সময় চাহিদার পরিমাণের হারের মধ্যে যে পার্থক্য তৈরি হয় তাকেই চাহিদার স্থিতিস্থাপতা বলে। চাহিদার স্থিতিস্থাপতা সাধারণত দুই রকম হয়। স্থিতিস্থাপক ও অস্থিতিস্থাপক চাহিদা। যেমন, চালের দাম বাড়লেও, যেহেতু ভাত না খেয়ে থাকা যায় না, তাই চালের দাম বাড়লেও, এর চাহিদা কমে না। আবার দাম কমে গেলেও চাহিদা খুব বেশি বাড়ে না। কারণ মানুষ যেটুকু ভাত খাওয়ার সেটুকুই সে খায়, দাম কমে গেলে তার খুব একটা পরিবর্তন হয় না। এই যে দাম বাড়া বা কমা সত্ত্বেও চাহিদার পরিমাণের হারের মধ্যে যে খুব একটা হেরফের হয় না, এটাকে বলা হয় অস্থিতিস্থাপক চাহিদা। উল্টাভাবে, দাম একটু কমে গেলে বা বেড়ে গেলে চাহিদার বিশাল পরিবর্তন হলে সেটাকে তখন স্থিতিস্থাপক চাহিদা বলা হয়। বিলাস জাতীয় পণ্যের ক্ষেত্রে সাধারণত এটা ঘটে। যেমন দামি মোবাইলের দাম কমার সাথে সাথে মানুষ সেটা কেনার জন্য ছোটে, আবার দাম বাড়লে কেনা বন্ধ রাখে। কারণ দামি মোবাইল এমন কোনো প্রয়োজনীয় বস্তু না যে সেটা বেশি দামে কিনতেই হবে ( ব্যতিক্রম ছাড়া)। এই দুটি ছাড়াও আরো তিন ধরনের চাহিদার স্থিতিস্থাপতা আছে, তার মধ্যে দুটি নিয়ে আমরা আলোচনা করব। এই দুই ধরনের স্থিতিস্থাপকতা, বেশ উদ্ভট ও বিরল। এই দুটি স্থিতিস্থাপকতা নিয়েই আমাদের আজকের আলোচনার প্রস্তাবনা।
এই দুটি হলো- সম্পূর্ণ স্থিতিস্থাপক ও সম্পূর্ণ অস্থিতিস্থাপক চাহিদা। দামের ওঠানামা ছাড়াই মানে একটা নির্দষ্ট দামে চাহিদা যখন বেড়েই চলে, অনন্তকাল ধরে, সেটাকে তখন সম্পূর্ণ স্থিতিস্থাপক চাহিদা বলে। আবার দামের ওঠানামা সত্ত্বেও চাহিদার যখন কোনো পরিবর্তন হয় না, একইরকম থাকে অর্থাৎ অনড় অবস্থানে থাকে তখন তাকে সম্পূর্ণ অস্থিতিস্থাপক চাহিদা বলে। সাধারণত বাস্তব অর্থনীতিতে এই দুই ধরনের স্থিতিস্থাপকতা দেখা যায় না। কিন্তু আমাদের জাতীয় জীবনে খুব সক্রিয়ভাবে দেখা যায়।
আমাদের বহুধা বিভক্ত সমাজ ইতিমধ্যে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। একদিকে আলেম সমাজ অন্যদিকে সাধারণ মানুষের সমাজ। সাধারণ মানুষের সমাজে আবার হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, ধনী, গরিব, তৃতীয় লিঙ্গ, রাজনীতিবিদ, শিল্পী-সাহিত্যিক, সরকারি-বেসরকারিসহ নানা কিসিমের মানুষজন আছে। সাধারণ মানুষ সাধারণত আলেমদের সম্পর্কে এমন ধারণা পোষণ করে যে এদের নামাজ-কালাম করা ছাড়া আর কোনো কাজ নেই। এরা আনন্দ-ফুর্তি, প্রেম-ভালোবাসা কিছুই করে না। দিনরাত দীনের কাজে ব্যস্ত থাকে। অর্থাৎ ওই সম্পূর্ণ অস্থিতিস্থাপক চাহিদার মতো। বাইরের পৃথিবীর যতই পরিবর্তন ঘটুক না কেন, তারা নিজের অবস্থানে থাকে অনড়, স্থির।
অন্যদিকে, আলেমসমাজ সাধারণ মানুষ সম্পর্কে মনে করে, এদের দীনের কাজের প্রতি (ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের বাদ দিয়ে) কোনো মন নেই। দুনিয়ার আনন্দ-ফুর্তি, নোংরামি ইত্যাদি নিয়ে অত্যন্ত ব্যস্ত। আখিরাতের চিন্তাও করে না। অর্থাৎ অনেকটা সম্পূর্ণ স্থিতিস্থাপক চাহিদার মতো। এই দুই বিভক্তি ছাড়াও, সাধারণ মানুষের ভেতরেও নানারকম বিভক্তি দেখা যায়। এসব বিভক্তি থেকে কিছু মনগড়া ধারণার সৃষ্টি হয়। যেমন, সাধারণ মানুষের মধ্যে এমন ধারণা গেঁথে গেছে যে পুলিশ মানেই খারাপ, সন্ত্রাসী; রাজনীতিবিদ মানেই হিপোক্রেট; সরকারি চাকরি মানেই দুর্নীতি-ঘুষ; মোল্লা-মাওলবি মানেই তালেবান-সন্ত্রাসী; শিল্পী-সাহিত্যিক মানেই চরিত্রহীন-নোংরা ইত্যাদি। সবচেয়ে ভয়ঙ্কর দিকটা হলো, এসব মনগড়া ধারণাগুলো সাধারণ অবস্থায় ঘুমিয়ে থাকে, যখন কোনো ঘটনা ঘটে, তখনই অবচেতনে থাকা সেই ঘুমন্ত ধারণাগুলো হঠাৎ জেগে ওঠে। এই কারণে কোনো শিল্পী বা সেলিব্রিটির নামে যখন কোনো গুজব ছড়ায় (আর সত্য ঘটনা হলে তো কথাই নেই) পুরো শিল্পীগোষ্ঠীকে নিয়ে মিডিয়া ও সাধারণ পাবলিক শিল্পীদের গুষ্ঠি উদ্ধার করে। অন্যদের বেলায়ও একই ঘটনা ঘটে। এই যে এক ধরনের ‘Extremism’, অর্থনীতির ভাষায় যাকে ‘সম্পূর্ণ স্থিতিস্থাপক’ বা সম্পূর্ণ অস্থিতিস্থাপক অবস্থান বলা চলে, এই অবস্থানের কারণে, আমাদের ভেতরের পারস্পরিক দূরত্ব বাড়ে, যা শেষ পর্যন্ত শত্রুতায় পর্যবসিত করে। আমরা চরমের বাইরে কিছু ভাবতেই পারি না।
আলেমসমাজ যেমন মানুষ গোত্রভুক্ত, সাধারণ মানুষও ঠিক তাই। আলেমদের মধ্যে যেমন দুনিয়াদারির সত্যগুলো অর্থাৎ ক্ষুধা, তৃষ্ণা,আনন্দ করার চাহিদা আছে, ঠিক তেমনি সাধারণ মানুষের ভেতরেও আছে আধ্যাত্মিক চিন্তা করার বাসনা। তারাও ধর্মকর্ম করে এবং ওইসব নিয়ে ভাবে। কয়েকজন আলেমকে দিয়ে যেমন গোটা আলেমসমাজকে বিচার করা যায় না, ঠিক তেমনি কয়েকজন আলেমসমাজের বাইরে আরো যেসব সাধারণ মানুষ আছে, তাদের কয়েকজনকে দিয়ে গোটা সাধারণ মানুষের সমাজকে বিচার করা যায় না। এই যে বারবার এখানে আলেমসমাজ এবং সাধারণ সমাজ নামে একটা বিভক্তির রেখা টানা হচ্ছে, এরা কারা? এরা তো সবাই এই দেশেরই নাগরিক। তাহলে একই দেশের নাগরিকের দুই ধরনের নাম দেয়া হচ্ছে কেন? আলেম এবং সাধারণ? এর উৎপত্তিস্থল কোথায়? এই আলেমসমাজ কি হঠাৎ গড়ে উঠেছে? আমরা কি এর আগে কখনো আলেম সমাজ দেখিনি? আমাদের আশেপাশে, পাড়া বা মহল্লায় কি আমরা মাওলানা-হুজুরদের দেখিনি? অবশ্যই দেখেছি। কিন্তু যে আলেম সমাজ এতকাল পর্দার বাইরে ছিল, হঠাৎ করে ওরা পর্দা তথা পত্রিকা-ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এত দৃশ্যমান হয়ে উঠলো কেন?
কারণ আর কিছুই না। এই আলেমসমাজকে আমরাই পুনঃনির্মাণ করেছি। তারা নিজেরা নিজেদের পুনঃনির্মাণ করেনি। সাধারণত মাদরাসা থেকেই এই আলেমসমাজের উৎপত্তি ঘটে এবং সত্যিকার একজন আলেম হিসেবে গড়ে ওঠার জন্যে চলে তাদের নির্মাণ। মাদরাসায় কারা লেখাপড়া করতে যায়? সাধারণত সমাজের সব থেকে গরিব শ্রেণি, যারা তাদের সন্তানদের সাধারণ বিদ্যালয়ে পড়াবার সামর্থ্য রাখে না, তারা তাদের সন্তানদের মাদরাসায় পাঠায়। অনেকটা বাধ্য হয়ে এবং অনেকটা ইসলাম ধর্মের প্রতি গভীর বিশ্বাস এবং আস্থার কারণে মাদরাসায় পাঠানো হয়। এখন প্রশ্ন হলো, ইতিমধ্যে নির্মিত এই আলেমসমাজকে আমরা কিভাবে পুনঃনির্মাণ করলাম?
পুনঃনির্মাণের বিষয়টা বোঝার জন্যে আমাদের একটু ইতিহাসের দিকে তাকাতে হবে। ইতিহাস মানে হাজার বছরের ইতিহাস না। একেবারে চোখের সামনে গড়ে ওঠা ইতিহাস। আশির দশকে খুব জনপ্রিয় একটা শব্দ ছিল ‘মৌলবাদ’। এই মৌলবাদ শব্দটা ওই সময় পুরোপুরি একটা গালিগালে পরিণত হয়েছিল। মোল্লা মানেই মৌলবাদী। আর মৌলবাদ মানেই মধ্যযুগের (অন্ধকার যুগ নামে যাকে আখ্যা দেয়া হয়) বর্বরতা, নিষ্ঠুরতা ইত্যাদি। বলাইবাহুল্য, মৌলবাদ বলতে ধর্মীয় তথা ইসলামী মৌলবাদকেই বোঝানো হয়েছে সবসময়। ১৯৭৯ সালে ইরানের ইসলামি বিপ্লবের পর, পশ্চিমা দেশগুলো বেশ নড়েচড়ে ওঠে। এটা কি করে সম্ভব হলো? ফলে সারা বিশ্বে ইসলাম ধর্মকে এবং তাদের অনুসারীদের যথাক্রমে মৌলবাদ ও মৌলবাদী আখ্যা দিয়ে ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে এক ধরনের প্রপাগান্ডা শুরু হয় তখন থেকেই। কিন্তু আমাদের দেশে এই ইসলামি মৌলবাদ ঢুকল কিভাবে? এই মৌলবাদ আমাদের এখানে ঢুকেছে ধর্মনিরপেক্ষতার অ্যান্টি থিসিস আকারে। ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’র ঐতিহাসিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বুঝে ওঠার আগেই আমরা জনগণের ওপর মুখস্ত বিদ্যার মতো ধর্মনিরপেক্ষতার বিদ্যা চাপিয়ে দিয়েছিলাম। পশ্চিমা ইতিহাস থেকে ধার করা এই ধর্মনিরপেক্ষতা আর আমাদের ধর্মনিরপেক্ষতার প্রেক্ষাপট কোনোভাবেই এক অর্থ বহন করে না। আগ্রহীরা কষ্ট করে পশ্চিমা ধর্মনিরপেক্ষতার ইতিহাসটা একটু জেনে নেবেন। ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে যেসব নষ্ট তর্ক আমাদের মিডিয়াতে প্রচলিত আছে, সেসব তর্কে না যেয়েও শুধু এইটুকু বলা যায়, কোনো রাষ্ট্র নিজেদের ধর্মনিরপেক্ষ ঘোষণা না দিয়েও যেমন ধর্মকে রাষ্ট্র থেকে আলাদা রাখতে পারে, সব ধর্মীয় সম্প্রদায়ের প্রতি সমান শ্রদ্ধা রাখতে পারে ঠিক একইভাবে ঘোষণা দিয়েও ধর্মকে রাষ্ট্রের সাথে জড়াতে পারে, পারে সাম্প্রদায়িক সম্পর্ক নষ্ট করতে। এই মৌলবাদ শব্দের উৎপত্তির পর থেকেই ধীরে ধীরে খুব সুকৌশলে, আমাদের নাটক, সিনেমা থেকে শুরু করে বিভিন্ন লেখালেখিতে দাঁড়ি-টুপির বিরুদ্ধে প্রচারণা শুরু হয়।
একটা অন্যরকম উদাহরণ দেই। এখন যদি দেখা যায়, খ্রিস্টান পাদ্রিরা যে পোশাক পরে, সেটা নিয়ে ধরে নেই ক্রমান্বয়ে কটাক্ষ করা হচ্ছে, সিনেমা, টিভির পর্দায়, বিভিন্ন কার্টুনে। ওইসব জায়গায় এই পাদ্রিদের বীভৎস আকারে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে। একটা সময় দেখা যাবে, মানুষ খ্রিস্টান পাদ্রিদের দেখলে খুব স্বাভাবিক কারণেই আঁতকে উঠেছে। আমাদের আলেমসমাজের ঠিক তাই হয়েছে। ধর্মনিরপেক্ষতাকে সাজিয়ে গুছিয়ে সুপার হিরো করতে যেয়ে দাঁড়ি-টুপিধারীদের এমন ভিলেইন বানানো হয়েছে যে সাধারণের ধারণা হচ্ছে, দাঁড়ি-টুপি মানেই দানব আকৃতির কেউ। আবার ইতিহাসের দিকে ফেরা যাক।
মৌলবাদ পর্বের পর শুরু হয়েছিল ‘রাজাকার’ অধ্যায়। একটা সময় চারদিকে শুধু রাজাকার ধ্বনি শোনা যেত। আর এসব রাজাকার কারা ছিল? ওই দাড়ি-টুপি। লক্ষ্য করবেন, আলেমসমাজ, ধীরে ধীরে সমাজে প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে কীভাবে। রাজাকার পর্বের পর শুরু হলো তালেবান-সন্ত্রাসীর যুগ। সন্ত্রাসী কারা? ওই দাড়ি-টুপি। এভাবে একসময় যারা ছিল মসজিদের অন্দরমহলে, মাদরাসার অন্তঃপুরে, তাদেরকে আমরা ধীরে ধীরে রাস্তায় টেনে নিয়ে এসে নতুন করে নতুন এক আলেমসমাজ পুনঃনির্মাণ করলাম। সমাজের একটা নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে ক্রমাগতভাবে যখন ভিলেইন বানানো হয়, নেগেটিভ ইমপ্রেশান দেয়া হয়, তখন ওই নির্দিষ্ট গোষ্ঠী চুপ করে থাকতে পারে না। তাদের শরীরের চামড়া আমাদের মতোই পাতলা। সেখানে বারবার আঘাত করলে ক্ষত সৃষ্টি হবেই। এভাবে, সম্পূর্ণ অস্থিতিস্থাপক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে, একপেশে ধারণা দিয়ে আলেমসমাজের পুনঃনির্মাণ করা হলো। শুধু পুনঃনির্মাণে এসে বিষয়টা থেমে থাকেনি।
আলেমসমাজও, আলেমসমাজের বাইরে যারা আছে অর্থাৎ সাধারণ মানুষ, তাদেরকেও সম্পূর্ণ স্থিতিস্থাপক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে পুনঃনির্মাণ করা শুরু করল। তাদের মনে এই ধারণা শুরু হলো, আলেমসমাজের বাইরে যারা আছে, সব পাপীর দল। বেহেশতে যাবার অধিকার শুধু আলেমসমাজের এখতিয়ার। ফলে ভাস্কর্য ও মূর্তির ভেদাভেদ অর্থাৎ শিল্প ও পূজার ভেদাভেদ গুলিয়ে ফেলল। শিল্পকর্মের কাজ মানুষকে আনন্দ দেয়া, যা মূর্তি বা ভাস্কর্য গড়ার মধ্যে দিয়ে করা হয়। একটা ভালো গল্প বা সিনেমা বা গান যেমন মানুষকে আনন্দ দেয়, তৃপ্তি দেয়, দেয় শান্তি, শিল্প সৃষ্টির জন্যে গড়া (শিল্প শব্দটা লক্ষ্য করবেন) কোনো মূর্তি বা ভাস্কর্য ঠিক ওই কাজটাই করে। পূজা হলো একটা নির্দিষ্ট ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর ভক্তির জায়গা। ভাস্কর্য আর ভক্তি কখনই এককথা না। কিন্তু আলেমসমাজ এই ভক্তির জায়গা থেকেই মূর্তি বা ভাস্কর্যকে বিচার করল। প্রতিবাদে ফেটে পড়ল। যা ঠিক হয়নি। এই ধরনের আরো ধারণা তাদের ভেতর আছে।
আমাদের মূল সমস্যা আমরা স্থিতিস্থাপক বা flexible হতে পারি না। না আলেমসমাজ না সাধারণ মানুষ। চরিত্রের এই rigidity বা অস্থিতিস্থাপকতার কারণে, মৌলবাদ বিষয়টা ধর্মকে ছাড়িয়ে সমাজের সব ক্ষেত্রে ঢুকে গেছে। মতের অমিল হলেই আমরা তাই মারমুখী হয়ে পড়ি। ঝগড়াবিবাদ শুধু বিবাদ বাড়ায়। বিবাদ ডেকে আনে বিভক্তি। সমাজ যত বিভক্ত হয়, সমাজপতি তত শোষণ করার সুযোগ পায়। কাজেই আমাদেরকেই এখন ভাবতে হবে, আমরা কি শোষিত হতে চাই নাকি সবাই মিলেমিশে শান্তিতে থাকতে চাই?
লেখক : শিক্ষাবিদ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব