করোনায় তছনছ গোটা বিশ্ব। প্রতিমুহূর্তে বিদেশ থেকে দুঃসংবাদ আসছে। করোনা প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের জীবন তছনছ করে দিয়েছে। অনেকে কাজ হারিয়ে দিশেহারা। কেউ কেউ আক্রান্ত স্বজনদের জন্য হাসপাতালে ছোটাছুটি করছেন। আবার অনেকে ‘শোক সংবাদ’ হয়ে গেছেন। দেশে করোনা ভাইরাসে প্রথম মৃত্যু হয় ১৮ মার্চ। সেদিনই জানা যায় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এক প্রবাসী বাংলাদেশির মৃত্যুর খবর। করোনায় দেশের বাইরে প্রথম কোনো বাংলাদেশির মৃত্যুর ঘটনাও ছিল সেটি।
এরপর প্রায় প্রতিদিনই যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশির মৃত্যু হচ্ছিল। একই সঙ্গে যুক্ত হচ্ছিল নতুন নতুন দেশ, যেখানে একের পর এক প্রবাসী আক্রান্ত ও মারা যাচ্ছিলেন। কিন্তু একসময় করোনায় প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধার মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্রকে টপকে যায় সৌদি আরব। এখন পর্যন্ত সৌদি আরবসহ বিশ্বের ২৩টি দেশে ২ হাজার ৭৩৫ জন প্রবাসী বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে করোনায়। শুধু সৌদি আরবেই মারা গেছেন ১ হাজার ২৩০ জন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর দূতাবাস ও প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, করোনার সংক্রমণে
সৌদি আরবে ১ হাজার ২৩০, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২৬৫, কুয়েতে ১০৭, ওমানে ৭০, কাতারে ৩৫, জর্ডানে ১৫ ও বাহরাইনে ৩১ জন বাংলাদেশি মারা গেছেন। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে ৪৪৫, যুক্তরাজ্যে ৪১২, ইতালিতে ৩৫, দক্ষিণ আফ্রিকায় ৩০, লেবাননে ১৫, কানাডায় ৯, সুইডেনে ৮, ফ্রান্স ও স্পেনে ৭ জন করে, বেলজিয়ামে ৩, পর্তুগালে ২ এবং ভারত, মালদ্বীপ, কেনিয়া, লিবিয়া ও গাম্বিয়ায় ১ জন করে বাংলাদেশি মারা গেছেন। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে যেসব প্রবাসী করোনার সংক্রমণে মারা গেছেন তাদের অধিকাংশই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নাগরিক।
ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শামীম আহসান বলেন, ইতালির স্বাস্থ্যব্যবস্থা যথেষ্ট উন্নত। তার পরও দেশটিতে করোনায় অনেকে মারা গেছেন। তিনি বলেন, প্রবাসী কর্মীদের চিকিৎসাসেবার বিষয়টি স্থানীয় কর্তৃপক্ষ দেখভাল করছে। নাগরিকদের মতোই বিদেশিরা সেবা পেয়েছেন। ইতালি সরকার তাদের নাগরিক এবং প্রবাসী কর্মীদের টিকা দেওয়ার পাশাপাশি আক্রান্তদের হাসপাতালে চিকিৎসার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় আবার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় নতুন করে বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ জর্ডানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নাহিদা সোবহান বলেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। আগামী ঈদুল ফিতর পর্যন্ত এই বিধিনিষেধ চলবে।