‘বৃক্ষ বিস্ময়’ বলা হয় সুন্দরবনকে। প্রচলিত ধারণা মতে, সুন্দরী গাছের নামানুসারে এই বনের নামকরণ। অথচ সুন্দরবনের সুন্দরী গাছ মরে যাচ্ছে। জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ, অবাধে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় চলাচল, গোলপাতা সংগ্রহসহ বিভিন্ন সম্পদ আহরণের কারণে ভবিষ্যতে সুন্দরবনে গাছের পরিমাণ এবং বনের ঘনত্ব আরো কমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হয়েছে আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়, ১৯৮৯ সুন্দরী গাছ ছিল বনের এক লাখ ৬৬ হাজার ৬৪৫ হেক্টরজুড়ে। ২০১৪ সালে তা কমে গিয়ে এক লাখ ১২ হাজার ৯৯৫ হেক্টর হয়ে যায়। গাছ মরে যাওয়ায় বিগত ২৫ বছরে এখানে ২৫ শতাংশ বন ফাঁকা হয়ে গেছে। এতে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। ফলে অবস্থা আরো করুণ হয়ে দেখা দিয়েছে।
বৈচিত্র্যময় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, বাহারি গাছপালা, বন্য পশু-পাখি ও জীবজন্তু ঘেরা এই সুন্দরবন। এই বনভূমি গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রের মোহনায় অবস্থিত এবং বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গজুড়ে বিস্তৃত। ১০ হাজার বর্গকিলোমিটারজুড়ে গড়ে ওঠা সুন্দরবনের ছয় হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার রয়েছে বাংলাদেশে। সুন্দরবন ১৯৯৭ সালে ইউনেস্কো দ্বারা ‘বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান’ হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
বরাবর সুন্দরবন আমাদের সাথে মাতৃসুলভ আচরণ করছে। গত বছর ঝড় আমফানের আঘাত হানার আগে তার প্রবল শক্তি হ্রাস করে গতিমাত্রা কমিয়ে দিয়েছিল এই সুন্দরবন। সুন্দরবন যে কতবার ঘূর্ণিঝড়সহ প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে আমাদের রক্ষা করেছে, তার কোনো পরিসংখ্যান নেই। অত্যন্ত শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘আমফান’ থেকে রক্ষা করার জন্য আবার বুক পেতে দিলো সুন্দরবন। সুন্দরবন দেশের সব উপকূলকে ইতিহাসের কালাপাহাড়ের মতো আগলে রেখেছে সবসময়। দিয়েছে সুন্দরী, গেওয়াসহ নানা বৃক্ষের মজবুত বেষ্টনী। আর অসংখ্য নদীনালা এখানে বছরের পর বছর ধরে প্রাণী ও সম্পদ রক্ষা করে আসছে। সুন্দরবন নিজে ক্ষতবিক্ষত হয়ে উপকূলবাসীকে রক্ষা করেছে। এ বনের কারণে বিগত পাঁচ-ছয়টি ভয়াবহ ঝড়ের গতিবেগ কমে যায়। ভয়ঙ্কর ঝড় এ বনের উপর আঘাত করার পর দুর্বল হয়ে পড়ে। উপকূল রক্ষায় এ বন তাই ঢাল হিসেবে কাজ করছে। বিশেষ করে ২০০৭ সালের ১৫ নভেন্বর ঘূর্ণিঝড় সিডর এবং ২০০৯ সালের ২৫ মে’র ঝড় আইলার তাণ্ডব থেকে এ বন পরম করুণাময় আল্লøাহর ইচ্ছায় উপকূলবাসীকে রক্ষা করেছে। এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড় বুলবুল ও ফণী থেকেও রক্ষা করেছে সুন্দরবন। তবে গাছপালার কিছু ক্ষতি হচ্ছে। অবশ্য বন্যপ্রাণীদের ওপর তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। বেশ কয়েকটি ঝড়ের সময় বাতাসের তীব্রতা বেশি থাকায় উপকূলীয় এলাকায় জলোচ্ছ্বাস দেখা দেয়। জোয়ারের লবণাক্ত পানিতে সুন্দরবনের অভ্যন্তরের গাছপালা ডুবে যায়। বনের ভেতরের মিষ্টি পানির পুকুরগুলো লবণাক্ত পানিতে ভরে গিয়েছিল। এতে ক্ষতি হয়েছে বেশি।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি অ্যান্ড উড টেকনোলজির সাবেক ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর মো: ইনামুল কবীর বলেন, ‘সুন্দরবন আমাদের রক্ষাকবচ। সুন্দরবনের জন্ম হয়েছে আমাদের রক্ষা করার জন্য। এ বন আমাদের কাঠসম্পদ দেবে, এ জন্য এর জন্ম হয়নি। এগুলো আমাদের বাড়তি পাওনা। গাছের মূল ভূমিকা হলো অক্সিজেন দেয়া, ঝড় বৃষ্টি থেকে রক্ষা করা; সম্পদ আহরণ করা। অষ্টাদশ শতাব্দীর শুরুতে সুন্দরবনের আয়তন বর্তমানের প্রায় দ্বিগুণ ছিল। বনের ওপর মানুষের অধিক চাপ ক্রমান্বয়ে এর আয়তন সঙ্কুচিত করেছে। ১৮২৮ সালে ব্রিটিশ সরকার সুন্দরবনের স্বত্বাধিকার অর্জন করে। ১৮৭৮ সালে সমগ্র সুন্দরবন এলাকাকে সংরক্ষিত বন হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের সময় সুন্দরবনের ছয় হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার বাংলাদেশ অংশে পড়ে যা বাংলাদেশের আয়তনের ৪.২ এবং দেশের সমগ্র বনভূমির প্রায় ৪৪ শতাংশ।
গাঢ় সবুজ রঙের সুন্দরবন যার উত্তর দিকে ঘিরে আছে হালকা সবুজ রঙের কৃষিজমি, তামাটে রঙের শহর এবং নদীগুলো নীল রঙের। পুরো পৃথিবীর মধ্যে সর্ববৃহৎ তিনটি ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের একটি হচ্ছে গঙ্গা অববাহিকায় অবস্থিত সুন্দরবন। এর বাস্তু সংস্থান খুব জটিল। দুই প্রতিবেশী বাংলাদেশ এবং ভারতজুড়ে বিস্তৃত সুন্দরবনের বৃহত্তর অংশটি (৬২শতাংশ) বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিম দিকে অবস্থিত। দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর; পূর্বে বলেশ্বর নদী আর উত্তরে বেশি চাষ ঘনত্বের জমি বরাবর সীমানা। উঁচু এলাকায় নদীর প্রধান শাখাগুলো ছাড়া অন্য জলাধারগুলো সর্বত্র বেড়িবাঁধ ও নিচু জমি দ্বারা বহুলাংশে বাধাপ্রাপ্ত। প্রকৃতপক্ষে সুন্দরবনের আয়তন হওয়ার কথা ছিল প্রায় ১৬ হাজার ৭০০ বর্গকিলোমিটার (২০০ বছর আগের হিসাব)। কমতে কমতে বর্তমান রূপ নিয়েছে। তা আগের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের সমান। বর্তমানে মোট ভূমির আয়তন চার হাজার ১৪৩ বর্গকিলোমিটার এবং নদী, খাড়ি ও খালসহ বাকি জলধারার আয়তন এক হাজার ৮৭৪ বর্গকিলোমিটার। এটা আগের প্রায় এক তৃতীয়াংশ সমান। সুন্দরবনের নদীগুলো নোনা পানি ও মিঠা পানির মিলন স্থান। সুতরাং গঙ্গা থেকে আসা মিঠা পানির বঙ্গোপসাগরের লোনা পানি হয়ে ওঠার মধ্যবর্তী স্থান হলো এ এলাকাটি। এটি সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পটুয়াখালী অঞ্চলজুড়ে রয়েছে বাংলাদেশে। সুন্দরবনের প্রধান বৈচিত্র্যের মধ্যে রয়েছে প্রচুর সুন্দরী, গেওয়, গরান ও কেওড়া গাছ। ১৯০৩ সালে প্রকাশিত প্রেইনের হিসাব মতে, সর্বমোট ২৪ শ্রেণী এবং ৩৩৪টি প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে সুন্দরবনে।
সুন্দরবনে ব্যাপক প্রাণিবৈচিত্র্য বিদ্যমান। প্রাণিবৈচিত্র্য সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনা সুন্দরবনের কিছু এলাকায় শিকার নিষিদ্ধ করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ অভয়ারণ্যের মতো, যেখানে শর্তহীনভাবে বনজ সম্পদ সংগ্রহ করা যায় না এবং বন্যপ্রাণীর জীবনে সামান্য ব্যাঘাত ঘটে। তবে সম্প্রতি বাংলাদেশে প্রাণিসম্পদ হ্রাস পেয়েছে। তার পরও অনেক প্রাণী প্রজাতির সুন্দরবনকে আল্লাহ টিকিয়ে রেখেছেন। এর মধ্যে বাঘ, শূকরকে প্রাধান্য দিয়ে পরিকল্পনা করা হচ্ছে প্রাণিবৈচিত্র্য সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনা ও পর্যটন উন্নয়নের লক্ষ্যে। ঝুঁকিপূর্ণ ও সম্পূর্ণ বিপরীত পরিবেশে থাকা এ দু’টি অবস্থা এবং সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনা সামগ্রিক প্রাণিবৈচিত্র্য এবং সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনার শক্তিশালী সুচক। ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দের হিসাব মতে, ৫০০ বাঘের আবাসস্থল সুন্দরবন। সুন্দরবনের মাছের ওপর আজো কোনো গবেষণা হয়নি। ফলে মাছের বর্তমান অবস্থা, বিলুপ্ত মাছ এবং বিলুপ্তপ্রায় মাছের ওপর নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া যায় না। শুধু মানুষ যেসব মাছ খায় এবং যেসব মাছ রফতানি উপযোগী, সেসব মাছ চিহ্নিত করা হয়েছে। ধারণা করা হয়, সুন্দরবনে শিরদাঁড়াওয়ালা মাছ রয়েছে ৩০০ প্রজাতির। সাইডেন স্টিকার ও হাইয়ের (পরিপ্রেক্ষিত ১৯৭৮) মতে, এর মধ্যে বাণিজ্যিক মাছ ১২০ প্রজাতির; অবশ্য বার্নাকসের মতে, বাণিজ্যিক মাছ ৮৪ প্রজাতির,কাঁকড়া-চিংড়ি ১২ প্রজাতির ও ৯ প্রজাতির শামুক রয়েছে। সুন্দরবনের মৎস্যসম্পদকে দুইভাগে ভাগ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে হয় সাদা মাছ, আরো আছে বাগদা, গলদা, কাঁকড়া।
এ দিকে পর্যটনের এক আদর্শ ‘স্পট’ সুন্দরবন। প্রতি বছর এই খাত থেকে আয় হয় প্রায় ৪১৪ কোটি টাকা। প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে প্রায় ৩৫ লাখ মানুষ এই বনের ওপর নির্ভরশীল। এই বনের জ্বালানি, নদীগুলোর বিশাল মৎস্যসম্পদ, মধু ও মোম এবং বণ্যপ্রাণী থেকে বাংলাদেশের গড় বার্ষিক আয় প্রায় এক হাজার ১৬১ কোটি টাকা। প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয়াবহতা থেকে প্রতিনিয়ত আমাদের রক্ষা করে যাচ্ছে সুন্দরবন। গবেষণা বলছে, এই বন প্রতি বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করে তিন হাজার কোটি টাকার সম্পদ। আরো চমকপ্রদ তথ্য হচ্ছে- সুন্দরবন বছরে গড়ে প্রায় ১৬ কোটি টন কার্বন ধরে রাখতে সক্ষম, আন্তর্জাতিক বাজারে যার মূল্য পাঁচ থেকে ছয় মিলিয়ন ডলার। সুন্দর বনের উৎপত্তি সম্পর্কে খুব বেশি ইতিহাস পাওয়া যায় না। তবে ধারণা করা হয়, হিমালয়ের ভূমিক্ষয়জনিত পলি বালু নুড়ি হাজার বছর ধরে বয়ে চলা পদ্মা ও ব্রহ্মপুত্র কর্তৃক উপকূলে চরের সৃষ্টি করেছে। অন্য দিকে সমুদ্র তীরবর্তী হওয়ায় লবণাক্ত জলের ধারায় সিক্ত হয়েছে এ চর এবং জমা হয়েছে পলি। কালাতিক্রমে সেখানে জন্ম নিয়েছে বিচিত্র জাতের উদ্ভিদ এবং গড়ে উঠেছে ম্যানগ্রোভ জাতের উদ্ভিদ এবং গড়ে উঠেছে ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট বা লবণাক্ত পানির বন। সম্ভবত ১২০৩ সালে মোগল এক রাজা পুরো সুন্দরবন ইজারা নেন। ১৭৫৭ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি সুন্দরবনসহ পুরো বাংলার দায়িত্ব নেয়ার আগে মোগল রাজাদের অধীনে ছিল এই বন। এই কোম্পানি সুন্দরবনের মানচিত্র তৈরি করে। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের সময় এ বনের ছয় হাজার ১৭ কিলোমিটার বাংলাদেশের অংশে পড়ে, যা বাংলাদেশের সমগ্র বনভূমির ৪৪ শতাংশ। ১৯৯৬ সালে সুন্দরবনে তিনটি অভয়ারণ্য ও ২০১২ সালে তিনটি ডলফিন অভয়ারণ্য প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৯৯৭ সালে সুন্দরবনের এক লাখ ৩৯ হাজার ৭০০ হেক্টর বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য এলাকাকে ৯৮তম বিশ্ব ঐতিহ্য ঘোষণা করে ইউনেস্কো। পৃথিবীর অন্যান্য ম্যানগ্রোভ বনভূমির উদ্ভিদের তুলনায় সুন্দরবনের উদ্ভিদের ব্যাপক পার্থক্য দেখা যায়। কেননা সুন্দরবনের বুক চিড়ে শুধু লোনা পানি নয়। ক্ষেত্রবিশেষে প্রবাহিত হয় স্বাদু পানির ধারা। এই বৈশিষ্ট্যই সুন্দরবনকে পৃথক করেছে বিশ্বব্যাপী অন্যান্য ম্যানগ্রোভ বন থেকে। এ বনের পূর্বাঞ্চলীয় অভয়ারণ্যে বেশি জন্মে সুন্দরী, গেওয়া, পশুর, কেওড়া, আমুর, গোলপাতা। পশ্চিমাঞ্চলীয় অভয়ারণ্যে বেশি দেখা দেয় গেওয়া, গরান, হেন্তাল। দক্ষিণাঞ্চলীয় অভয়ারণ্যে বেশি দেখা যায় গেওয়া গাছ। এই অঞ্চলে লবণাক্ততা বেশি হওয়ায় অন্যান্য সাধারণ গাছ বেশি জন্মাতে দেখা যায় না। সুন্দরবনে কত প্রজাতির গাছ আছে তা বলা মুশকিল। সর্বশেষ ১৯০৩ সালে জরিপ বলছে, ৩৩৪ প্রজাতি। ম্যানগ্রোভ বনের ৫০ প্রজাতির উদ্ভিদের মধ্যে ৩৫টির দেখা মেলে এই বনে।
এ দিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগারের গতিবিধি জানতে গত বছর ডিসেন্বর মাসে তার গলায় রেডিও কলার পরানো হয়। রেডিও কলারের সাথে যুক্ত থাকা প্রযুক্তির মাধ্যমে ওই বাঘের মাধ্যমে গতিবিধি জানতে পারবে বন বিভাগ। বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, আমেরিকার প্রযুক্তিতে তৈরি করা এই রেডিও কলার দুই থেকে তিন বছর কার্যকর থাকবে বলা হলেও সুন্দরবনের লোনা পানির কারণে এটি দেড় বছর পর্যন্ত কার্যকর থাকে। এর আগে ২০০৭ থেকে ২০০৮ ও ২০১৬ সালে একাধিক বাঘকে এই রেডিও কলার পরানো হয়। কিন্তু তা লোনা পানির কারণে বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। বাঘের গলার রেডিও কলারটি সরাসরি উপগ্রহের মাধ্যমে বন দফতরের কাছে সঙ্কেত পাঠাবে। এর ফলে তারা ওই বাঘটির গতিবিধি এবং আচরণ সম্পর্কে অবহিত হতে পারবেন। এ দিকে সুন্দরবনে বাঘ গণনা শুরু হয়েছে। বাঘ গণনার কাজে একেকটি দল ১২ জন করে ১০টি টিম নিয়োগ করা হয়েছে।
প্রাণিবৈচিত্র্যের কথা লিখতে গেলে প্রথমে আসে অনিন্দ্য সুন্দর বেঙ্গল টাইগারের কথা। সুন্দরবনসহ গোটা বাংলাদেশের গর্ব এই পশু। একটা সময় সুন্দরবনজুড়ে অসংখ্য বিচরণ চোখে পড়ত বাঘের। কিন্তু অবৈধ শিকার, খাদ্যের অভাব, প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ বিভিন্ন কারণে সুন্দরবনে দিনে দিনে বাঘের সংখ্যা কমছে। সর্বশেষ ২০১৫ সালের জরিপে পুরো সুন্দরবনে বাঘের উল্লেøখ করা হয়েছে ১৭০টি। এর মধ্যে বাংলাদেশে আছে ১০৬টি। বাঘ ছাড়াও আছে প্রায় ৩১ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী যার মধ্যে চিত্রা হরিণ, মায়া হরিণ, রেসাস বানর, বনবিড়াল, লেপার্ড, বন্য শূকর উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া আছে ৪০০ প্রজাতির মাছ, ৩০০ প্রজাতির পাখি, ৩৫ প্রজাতির সরীসৃপ, আট প্রজাতির উভচর প্রাণী। সুন্দরবনে সাপের প্রচুর আনাগোনা দেখা যায়। এর মধ্যে শঙ্খচূড়, রাসেলস ভাইপার, অজগর ও ব্যান্ডেড ক্রেইট উল্লেখযোগ্য।