সেই কবে ১৯০৯ সাল তথা ১৩১৬ বাংলা সনে রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন ‘বর্তমান যুগ’ প্রবন্ধে, ‘হাজার হাজার শতাব্দীর মধ্যে পৃথিবীতে এমন শতাব্দী খুব অল্পই এসেছে। কেবল আমাদের দেশে নয়, পৃথিবীজুড়ে এক উত্তাল তরঙ্গ উঠেছে। বিশ্বমানব প্রকৃতির মধ্যে একটা চাঞ্চল্য প্রকাশ পেয়েছে, সবাই আজ জাগ্রত। পুরাতন জীর্ণ সংস্কার ত্যাগ করার জন্য, সকল প্রকার অন্যায়কে চূর্ণ করার জন্য, মানবমাত্রেই উঠে পড়ে লেগেছে, নতুনভাবে জীবনকে দেশকে গড়ে তুলবে। … মানবপ্রকৃতি পূর্ণতার আস্বাদ পেয়েছে। একে এখন কোনো মতেই বাইরের শক্তি দ্বারা চেপে ছোট করে রাখা চলবে না।’
রবীন্দ্রনাথের সেই শতাব্দী মূলত বিংশ শতাব্দী। যে সময়ে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে স্বাধীন সার্বভৌম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সেই নবীন দেশে নতুনভাবে জীবনকে গড়ে তুলতে চেয়েছিল বাঙালী। হাজার বছরের পরাধীন বাঙালী জাতি মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছিল সেই ১৯৭১ সালে। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী বাঙালি নিধনে মত্ত হয়েছিল। এক কোটি বাঙালী সীমান্ত পাড়ি দিয়ে প্রতিবেশী ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল শরণার্থী হিসেবে। বাঙালীর অস্তিত্বের লড়াইয়ে সর্বাত্মক সাহায্য ও সহযোগিতা দেয়ার মতো দুরূহ, ব্যয়বহুল ও প্রায় অসাধ্য কাজটিই ভারত করেছিল। সেই ভারতেরই পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে বাঙালীর আত্মসাধনার মিলন কেন্দ্র গড়ে তুলেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। ব্রহ্মচর্য আশ্রম থেকে আজ যা মহীরূহ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত হয়েছে। শান্তিনিকেতন তাই শুধু পশ্চিমবঙ্গের নয়, বাংলাদেশেরও।
রবীন্দ্রনাথ তার সৃষ্টির সেরা সময় অতিবাহিত করেছেন শাহজাদপুর, শিলাইদহে। পূর্ববঙ্গের আকাশ, বাতাস, নদ-নদী; সবুজ মাঠ কবিকে দিয়েছে প্রেরণা। সেই প্রেরণার বাতাবরণে বাংলা সাহিত্য পেয়েছে অমূল্য সম্পদ। উনিশ বছর আগে ১৯৯৯ সালে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রী ‘দেশিকোত্তম’ গ্রহণকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে দেশে কালে কালে মানুষের মধ্যে সম্প্রীতির ভাব গড়ে তোলার জন্য নিবেদিত হওয়ার কথা বলেছিলেন। বাংলার মাটি, বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল পূণ্য হয়ে যাতে ওঠে, রবীন্দ্রনাথকে সামনে রেখে সেই প্রার্থনাই করেছিলেন। রাষ্ট্রনায়কোচিত আচরণের বহির্প্রকাশ ঘটিয়ে তিনি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন, যে বিশ্ব নেতৃত্বের আসনে নিজেকে সমাসীন করার জন্য প্রস্তুতি পর্ব সমাপন করে সম্মুখে শান্তি পারাবার নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। ভূগোলের গণ্ডি ছাড়িয়ে তিনি নিজেকে প্রসারিত করেছেন বিশ্বভাবনায়। দেশজ ভাবনার সীমারেখা ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিশ্বভাবনাকে সামনে রেখে সিদ্ধান্ত জানাতেও পিছপা নন তিনি। আর উনিশ বছর পর একই স্থানে দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনা উচ্চারণ করলেন; ‘পারিপার্শ্বিকতা আমাদের আলাদা করে রাখলেও বাঙালীরা মনে প্রাণে এক এবং অভিন্ন। অনেক সময় ক্ষুদ্র স্বার্থ আমাদের মনের মধ্যে দেয়াল তৈরি করে। আমরা ভুল পথে পরিচালিত হই। এই দেয়াল ভাঙতে হবে। মনের ভেতর অন্ধকার দানা বাঁধতে দেয়া যাবে না। ক্ষুদ্র স্বার্থ বিসর্জন দিতে পারলেই কেবল বৃহত্তর অর্জন সম্ভব।’ সঠিক কথাই বলেছেন শেখ হাসিনা। দু’দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক যোগাযোগের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক যোগাযোগও সুদৃঢ় করা সঙ্গত। শান্তিনিকেতনে বহুল আকাঙ্ক্ষিত ও নয়নাভিরাম ‘বাংলাদেশ ভবন’ উদ্বোধন হলো। বাংলাদেশ সরকারের আর্থিক অনুদানে নির্মিত বাংলাদেশ ভবনটি দুই বাংলার শিক্ষা, সংস্কৃতি, গবেষণা সর্বোপরি জ্ঞানচর্চায় সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করবে। দুই দেশের জ্ঞানপিপাসুদের তীর্থক্ষেত্রে পরিণত হোক বাংলাদেশ ভবন, এই প্রত্যাশা শেখ হাসিনার মতো দুই বাংলার মানুষেরও।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও মনে করেন, দুদেশের বন্ধুত্বের প্রতীক এখন এই বাংলাদেশ ভবন। এটা দুদেশের সেই সম্পর্ক, যা ইংরেজরা দেশ ভাগ করেও ভাঙতে পারেনি।
শান্তিনিকেতন বাঙালীর জীবনে এক গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ। রবীন্দ্রনাথ যাকে বলতেন, ‘মোদের প্রাণের সঙ্গে প্রাণে সে যে মিলিয়েছে এক তানে,/মোদের ভাইয়ের সঙ্গে ভাইকে সে যে করেছে এক-মন।’ আসলেই তাই। শান্তিনিকেতন রবীন্দ্রনাথের কাছে ছিল সব থেকে আপন। বাঙালীর কাছে আজও তাই। শেখ হাসিনা শান্তিনিকেতনের ছাত্রী না হলেও বিশ্বভারতী প্রদত্ত ‘দেশিকোত্তম’ তাকে বিশ্বভারতীর একজন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় সঙ্গীত রচয়িতা রবীন্দ্রনাথ। কবির সার্ধশত জন্মবার্ষিকীর উদযাপন ঘিরে বাংলাদেশের অর্থায়নে শান্তিনিকেতনে যে ভবন নির্মাণ হয়েছে, তা ‘সম্প্রীতির প্রতীক’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। ভবনের ফলক উন্মোচনকালে দুদেশের প্রধানমন্ত্রী সেভাবেই মূল্যায়ন করেছেন। জীবদ্দশায় রবীন্দ্রনাথ সারা এশিয়ার মধ্যে শান্তি ও সৌহার্দ্য স্থাপনের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন চীনা ভবন। যা আজও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। আর শতবর্ষ পরে প্রতিষ্ঠিত হলো ‘বাংলাদেশ ভবন’। শেখ হাসিনার উপস্থিতি রবীন্দ্রনাথ অনন্তলোক থেকে হয়তো অবলোকন করেছেন। হয়তো কবিরও মনে পড়েছে ১৩২১ সালের মাঘ মাসে লেখা ‘আবির্ভাব’ নিবন্ধটির কথা। লিখেছিলেন তিনি, ‘তুমি যে এসেছ মোর ভবনে। রব উঠেছে ভুবনে।’
দূরদর্শী কবি হয়তো এমনটাই ভেবেছিলেন ভাবীকালকে নিয়ে, যে উচ্চতায় শেখ হাসিনা সমাসীন আজ। কবি লিখেছিলেন শতবর্ষেরও আগে, ‘যিনি বিশ্বভুবনের সব জায়গা জুড়ে বসে আছেন, তাকেই আমরা বলছি, ‘তুমি আমার ভবনে অতিথি।’ কারণ, আমার ভবনে তাকে ডাকবার এবং না ডাকবার অধিকার তিনিই আমাকে দিয়েছেন।’ রবীন্দ্রনাথ বাঙালীর আত্মার মধ্যে বসবাস করে আসছেন তার সর্বসত্তা দিয়ে। আর রবীন্দ্রনাথ এই বাংলায় স্থিতি পেয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতেই। ১৯৬৭ সালে পাকিস্তানী সামরিক জান্তা শাসকরা রবীন্দ্রসঙ্গীত প্রচার নিষিদ্ধ করেছিল। কবি সাহিত্যিক সাংবাদিকদের একটি অংশ এই নিষিদ্ধের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। তারা রবীন্দ্রনাথ বিরোধিতায় গদ্যও লিখেছেন। শেখ মুজিব তখন ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিলেন। তিনি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, রবীন্দ্রনাথের গান আমরা শুনবই। তার কবিতা পাঠ করবো। কেউ তা রুখে দিতে পারবে না। সেই হুমকিতে শাসক গোষ্ঠী তাদের অবস্থান বদলাতে বাধ্য হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে রবীন্দ্রনাথ আবার ফিরে এসেছিলেন এই বাংলায়।
শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর রবীন্দ্র প্রীতির কথা ভবনের উদ্বোধনকালে বলেছেনও, ‘বঙ্গবন্ধু ঢাকা থেকে স্টিমারে যাওয়ার সময় ডেকে দাঁড়িয়ে কবিগুরুর কবিতা পড়তেন। তার রাজনৈতিক জীবনের প্রেরণা তিনি পেয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ থেকে।’ তাই দেখতে পাই আমরা কবিগুরুর ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি’ বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। সেই ১৯৫৪ সালে কার্জন হলে এক অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর অনুরোধে সনজীদা খাতুন সেই গান গেয়েছিলেনও। বাঙালীর স্বাধিকার ও স্বাধীনতা আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথের কবিতা ও গান প্রেরণা হয়ে সাহস যুগিয়েছে। এখনও রবীন্দ্রনাথ বাঙালীর জন্য প্রাসঙ্গিক হয়ে আছেন। রবীন্দ্রবিশ্বে পূর্ব বাংলার স্থানও অনন্য।
শান্তিনিকেতনে স্থাপিত বাংলাদেশ ভবনের চিত্র সরাসরি সম্প্রচারকালে মুগ্ধ হয়ে দেখেছি। ভবনটি যেন শান্তিনিকেতনে এক টুকরো বাংলাদেশ হয়ে আছে। আর তখন সেই গানটি মনে ভাসছিল, ‘আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে কখন আপনি/তুমি এই অপরূপ রূপে বাহির হলে জননী/ ওগো মা তোমায় দেখে দেখে আঁখি না ফিরে।’ ভবনটির দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখ ফিরতে চায় না।
রবীন্দ্র ভুবনে বাংলাদেশের এই অবস্থান প্রাণে প্রাণ যোগ ঘটায় যেন। এই ভবন দু’দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় ও জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বাড়াতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। শাশ্বত বাংলার লোকায়ত সংস্কৃতি চর্চা ও গবেষণা যেমন হবে তেমনি রবীন্দ্রভাবনায় ভাবিত হওয়া, শান্তি ও মানবতার জন্য অর্জিত জ্ঞানকে ব্যবহার করার জন্য এই ভবন। শেখ হাসিনা অবশ্য জানান দিয়েছেন যে, এই ভবন হবে এমন একটি অনন্য কেন্দ্র, যেখানে শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধ; জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান; রবীন্দ্রনাথ এবং বাংলাদেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতি সম্পর্কে লেখাপড়া ও গবেষণা করতে পারবে।’ এমন ক্ষেত্র তৈরি হওয়া বাংলাভাষীদের জন্য অবশ্যই গৌরবের এবং আনন্দের।
কবিগুরুর মতো শেখ হাসিনাও বিশ্বাস করেন, পৃথিবীজুড়ে একটি দেশ, পৃথিবীর সমস্ত মানুষ মিলে একটি জাতি। এবং এটি মেনে নিলে পৃথিবীর সকল মানুষই এক দেশের, এক জাতির মানুষ হবে। দেশে দেশে জাতিতে জাতিতে বৈরিতা থাকবে না। অবশ্য শেখ হাসিনা এটাও জানেন, এ কথা শুনতে যত সহজ, কাজে তত নয়। খুব উঁচু দরের শিক্ষা সংস্কৃতি থাকলে তবেই লোকে এ কথার মর্ম বুঝবে। প্রতিটি মানুষকে তার নিত্যদিনের অত্যাবশ্যক প্রয়োজন তথা অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা চিকিৎসা সম্পর্কে নিশ্চিত করতে হবে। নিজ দেশে শিক্ষার প্রসারে শেখ হাসিনা যুগান্তকারী নানা পদক্ষেপও নিয়েছেন।
১৯৯৯ সালে যখন দেশিকোত্তম পান বিশ্বভারতী হতে, তখন শেখ হাসিনা স্পষ্ট করেছিলেন, রবীন্দ্রনাথের প্রতি বাঙালীর অপরিসীম ঋণ। সেই ঋণ অপরিশোধ্য। কিন্তু সেই ঋণ যেন প্রতিটি বাঙালী স্বীকার করে। রবীন্দ্রনাথ বাংলা এবং উপমহাদেশ ছাড়িয়ে বিশ্ব কবিতে পরিণত হয়েছিলেন। বাঙালীর জীবন চর্চায় তিনি প্রাণ যুগিয়েছেন। তাই রবীন্দ্রনাথের চেতনাকে বাংলাদেশের মানুষ অন্তরে ধারণ করে রাখার জন্য সংগ্রাম করেছে। এই অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গে বঙ্গবন্ধু ভবন হবে। যা বাংলাদেশবাসী হিসেবে আমাদের গৌরবান্বিত করে। মোদিও বলেছেন শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে, বঙ্গবন্ধুকে আপনারা যা সম্মান দেন, আমরাও সেই সম্মান দেই। আসলেই তাই, বঙ্গবন্ধু এই উপমহাদেশের মানুষের কাছে সাহসী ও বলিষ্ঠ নেতা হিসেবে প্রতিভাত। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বেঁচে যাওয়া বঙ্গবন্ধুর দু’কন্যাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছিল ভারত। বর্হিবিশ্বে বঙ্গবন্ধুর পর শেখ হাসিনা বাঙালীর অগ্রগতিকে যতখানি সামনে তুলে এনেছেন, তা অতুলনীয়। বাংলাদেশ সমৃদ্ধ দেশ এবং বাঙালীকে সমৃদ্ধ জাতি হিসেবে সামনে এগিয়ে নেয়ার প্রত্যাশী শেখ হাসিনা। রবীন্দ্রনাথের মতো শেখ হাসিনাও জানেন, যে গাছে সুগন্ধ ফুল ফোটে, সে গাছে আহার্য ফল না ফললেও চলে।’ শান্তিনিকেতনে একটুকরো বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শেখ হাসিনা যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছেন। রবীন্দ্রানুরাগী এবং রবীন্দ্র সাহিত্যের ছাত্রী শেখ হাসিনা জানেন এবং বিশ্বাস করেন, ক্ষুদ্র স্বার্থ বিসর্জন দিতে পারলেই কোন বৃহত্তর অর্জন সম্ভব। আসানসোলে কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় শেখ হাসিনাকে ডি লিট প্রদান করে যথাযথ সম্মান দিয়েছে বলা যায়। বাংলাদেশের জাতীয় কবি নজরুল ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধেও প্রেরণা হয়েছিলেন। এখনও তিনি প্রাণে প্রাণ যোগান। নজরুলের অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বাংলাদেশ গড়ে তোলার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা নজরুলের স্বপ্নপূরণের দিকটি উন্মোচিত করেছেন। রবীন্দ্রনাথ থেকে নজরুল হচ্ছে বঙ্গবন্ধু থেকে শেখ হাসিনার প্রেরণার অপর নাম। হয়তো একদিন আসানসোলেও হবে বাংলাদেশ ভবন। কবি নজরুল ঝাঁকড়া চুলে দাঁড়িয়ে থাকবেন এক টুকরো বাংলাদেশে। দুই বাঙালী কবির জীবন চলার পথ খুব মসৃণ ছিল না।
শেখ হাসিনার ধাপে ধাপে সংগ্রাম, ত্যাগ তিতিক্ষার ভেতর দিয়ে এগিয়েছেন তিনি। মহাত্মা গান্ধী ও বঙ্গবন্ধুর প্রিয় গান, ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে’ গুনগুন করে শেখ হাসিনাও সুর তোলেন। কিংবা নজরুলের ‘একি অপরূপ রূপে মা তোমায় হেরিনু পল্লী জননী’ তাকেও আপ্লুত করে।
শান্তিনিকেতনের রবীন্দ্রবলয়ে বাংলাদেশ ভবন বাঙালীর জীবনে প্রেরণা হয়ে থাকবে। সেই সঙ্গে জ্বলজ্বল করে জ্বলবে শেখ হাসিনার নাম। আর বাংলাদেশের বাঙালী বিশ্বসভায় আসন করবে আরও মজবুত।
প্রকাশিত : ২৮ মে ২০১৮
লেখক: মহাপরিচালক, প্রেস ইন্সটিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি)।