(দ্বিতীয় কিস্তি)
হিস্ট্রি অব ওয়েস্টার্ন ফিলোসফি গ্রন্থে বার্ট্রান্ড উইলিয়াম রাসেল (Bertrand William Russell; 1872-1970) লিখেছেন, ‘পেশাদার দর্শনের অধ্যাপক ছাড়াও বিশাল সংখ্যক মুক্তচিন্তার অধিকারীদের বলা হলো Averroists বা রুশদবাদী; বিশেষ করে প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়ে রুশদের অনুরাগীর সংখ্যা ছিল বিপুল।’
সুধীসমাজে তার মতবাদ বরিত হওয়ায় পশ্চিমা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ল রুশদবাদ। সমুদ্র পেরিয়ে তা ইংল্যান্ডেও সৃষ্টি করে কম্পন।
রুশদের সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছিল ফ্রান্সিসকান সম্প্রদায়ের ওপর। সম্প্রদায়টির প্রবর্তক সাধু ফ্রান্সিস (১১৮২-১২২৬) ত্রয়োদশ শতকে বিলাসিতায় নিমজ্জমান পোপ ও তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। প্যারিস ও বুলোগনা বিশ্ববিদ্যালয় ইবনে রুশদকে শ্রেষ্ঠ উস্তাদ ধরে এগোচ্ছিল। এই ধারা জারি থেকেছে মার্টিন লুভায়ন বিশ্ববিদ্যালয় বা মনটাগোলিয়ারের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে; ষোড়শ শতক অবধি, যখন রেনেসাঁ ডানা মেলে উড়ছে। অবশেষে মার্টিন লুথার (Martin Luther; 1483– 1546) এসে দাঁড়ালেন। নতুন যুগে প্রবেশ করল ইউরোপ।
দ্বাদশ থেকে ষোড়শ শতকের মধ্যবর্তী সময়জুড়ে ইউরোপের অন্ধকারের সাথে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিয়েছে রুশদবাদ। ক্যাথলিক চার্চ তাকে ছেড়ে কথা বলেনি। রক্তগন্ধী যাজকতন্ত্র তার বা তার প্রতি আরোপিত ২১৯টি মতকে দণ্ডনীয় বলে রায় দেয়। তার ব্যাখ্যা অবলম্বনের জন্য ১৫ শতকেও প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপককে হলফ নিতে বাধ্য করা হতো। তার প্রভাবে উদ্বিগ্ন পোপ ১১৭৯ সালে আহ্বান করেন তৃতীয় ন্যাটেরান কাউন্সিল। ডমিনিকান ধর্মগুরুরা তিনটি প্রধান ধর্মের বিরুদ্ধে সব ধরনের অনাচারের দায়িত্ব চাপান ইবনে রুশদের ওপর। ১২০৯ সালে প্রকৃতিবিজ্ঞানের পাঠ নিষিদ্ধ করে প্যারিসের ধর্মসভা। ইবনে রুশদের অনুসারী আমরেলিকাস ও অন্যদের দেয়া হয় কঠিন শাস্তি। কিন্তু বুদ্ধিমান ও ভদ্র সমাজে তিনি জেঁকে বসছিলেন প্রবলভাবে। বাড়তে থাকল ইনকুইজিশন। তুলুজে ধর্মীয় আদালত বসানো হলো ১২১০ সালে। পোপের তরফে চতুর্থ ন্যাটেরান কাউন্সিল আহ্বান করা হয় ১২১৫ সালে। যোগ দেন ৪০০ বিশপ ও এক হাজার গির্জাপ্রধান। সিদ্ধান্ত হয়, ইবনে রুশদবাদীরা নাস্তিক ও ধর্মদ্রোহী। ফ্রান্সের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতি আদেশ জারি করা হয় ইবনে রুশদ এবং আরব দর্শন ও বিজ্ঞানের কোনো বই না পড়ানোর জন্য। ১২৩১ ও ১২৪৫ সালেও পোপ এই নিষেধাজ্ঞা নবায়ন করেন। ১২৭০ সালে ইবনে রুশদ বাহিত ১৫টি দার্শনিক মতবাদের উপর নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেন প্যারিসের বিশপ। সরাসরিই বলা হয়, এগুলো চার্চের বিভিন্ন শিক্ষার সাথে সাংঘর্ষিক। ১২৭৭ সালে সরাসরি পোপ-২১ জন ময়দানে নামেন। তার আদেশে প্যারিসের বিশপ পুনরায় জারি করেন নতুন নিষেধাজ্ঞা। ইবনে রুশদের প্রভাব কাজ করছিল নানামাত্রায়। ডিনাটের ডেভিড (David of Dinant; 1160-1217) ও বেনার আমালরিক (Amalric of Bena; g„Zz¨ 1204-1207) জন ডান্স স্কোটাস (Duns Scotus; 1266-1308) প্যারিফিজিকেসর অর্ধ অদ্বৈতবাদী চিন্তার নবজীবন ঘটে। ১২২৫ সালে এরাগনে তৃতীয় আনাত্রিয়াস একে দমন করেন, বাজেয়াপ্ত করেন গ্রন্থাবলি। ১২৩৩ ও ১২৪৯ সালে ভেনিসে ইনকুইজিশন গঠিত হয়। ফরাসি রাজ সেন্ট লুই (১২২৬-৭০) নিজ অঞ্চলে আগুন ও তরবারি দিয়ে একে দমন করার শপথ গ্রহণ করেন। ১২৩১ সালে পোপ গ্রেগরি প্রাকৃতিক দর্শন পাঠ নিষিদ্ধ করেন।
ইহুদিদের সম্পদ লুণ্ঠিত হতে থাকে, তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে সরকার। কিন্তু খ্রিষ্টান দুনিয়ায় অদ্বৈতবাদ রুশদবাদের উপর ভর করে বিস্তৃত হচ্ছিল। যদিও ইবনে রুশদ অদ্বৈতবাদী ছিলেন না। বৌদ্ধবাদের হাত হয়ে সেটা আরব ও ইউরোপীয় চিন্তায় সংক্রমিত হয়। ইবনে রুশদ এ মতবাদ নিয়ে আলাপ করেন আপন গ্রন্থে। যা পশ্চিমা মনে রেখাপাত করে গভীরভাবে। অদ্বৈতবাদীর সংখ্যা বাড়তে থাকে স্রোতের গতিতে। পোপ চতুর্থ আলেকজান্ডার-এর দমনে কঠোর ভূমিকা নেন। ১২৫৫ সালে ইনকুইজিশন শুরু হলো ফ্রান্সে। ১২৭০ সালে প্যারিসের বিশপ স্টিফেন টমি সয়ার ধর্মশাস্ত্রবিদদের এক সভায় আরবদের অনুসারীদের নিষ্ঠুরভাবে দণ্ডিত করলেন। ১২৭৭ সালে সাবেক মতগুলোর পাশাপাশি আরো বহু মত নিষিদ্ধ করা হলো। প্রধান ইবনে রুশদবাদী চার্বনও দণ্ডিত হলেন।
১২৯০ সালে ক্যাস্টাইলে ইনকুইজিশন বসল। জার্মানিতেও শুরু হলো ইবনে রুশদ ও আরববাদ দমন। ভিয়েনার ধর্মসভায় (১২৩১-৩২) ইবনে রুশদের লেখা সম্পূর্ণ বাজেয়াপ্ত ও খ্রিষ্টানদের পক্ষে তা অধ্যয়ন নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ নেয়া হলো। ডমিনিকানরা গ্রন্থ ও পাঠককে আগুনে পোড়ানোর মাধ্যমে দমন প্রক্রিয়া জারি রাখল।
ইবনে রুশদকে ইউরোপ থেকে তাড়ানোর জন্য শুরু হয় চিন্তামূলক আন্দোলন। এগিয়ে আসেন একদল লেখক। তারা না সহ্য করবেন আরববাহিত জ্ঞান-বিজ্ঞানকে, না দর্শন ও ইবনে রুশদকে। ১২৫৬ সালে আত্মার একত্ব সম্বন্ধে ইবনে রুশদবাদীদের মত খণ্ডনে আল বার্টাস ম্যাগনাস (Albertus Magnus; 1200-1280) লিখলেন পুস্তক। তার দুই খণ্ডে সমাপ্ত সুম্মা থিয়োলোজি ইবনে রুশদের বিরুদ্ধে ছিল প্রতিবাদমুখর।
রেমন্ড লাল (১২৩২-১৩১৫) প্রতিটি বিদ্যাগারে আরববাদের বিরুদ্ধে ক্রুসেড শুরু করলেন। ইবনে রুশদবাদীদের ২১৯টি মতের ভূমিকাস্বরূপ লিখিত স্টিফেনের বিখ্যাত পত্র ‘স্বাধীন চিন্তা ও অবিশ্বাসের জনক’ বলে ইবনে রুশদের উপর সিল মেরে দিলো। টমাস একুইনাসের জনৈক শিষ্য আলকিন্দি থেকে ইবনে রুশদ পর্যন্ত যাবতীয় দার্শনিকের কয়েকটি ভ্রম-প্রমাদ ও প্রবঞ্চনার একটি তালিকা প্রস্তুত করলেন। আরবদের সে জন্য তুচ্ছ করা ও তাদের অবদানকে প্রত্যাখ্যান করার হিংসাশ্রয়ী প্রচারণা তীব্র হতে থাকল। ইতালীয় লেখক পিদারক (১৩০৪-১৩৭৪) এক দৃষ্টান্ত। তিনি লিখেন, ‘আরবিরা শিল্প ও জ্ঞানের কোনো চর্চা করেনি, তারা কেবল গ্রিক শিল্প সংস্কৃতির কিছু কিছু অংশ রক্ষা করে চলেছিল এবং আমি বিশ্বাস করি, আরবের কাছে ভালো কিছু আশা করা যায় না…’
ইবনে রুশদের দ্বারা আলোকপ্রাপ্ত অনেকেই চার্চ ও অ্যারিস্টটলের দর্শনের সমন্বয় করতে প্রয়াসী হন। প্রয়োজন পড়ে তার স্বাধীন ব্যাখ্যার মোকাবেলা। সেই মোকাবেলায় নিয়োজিত স্কুলম্যানদের মাধ্যমেই তৈরি হয় স্কলাস্টিক দার্শনিক গোষ্ঠী। সেন্ট থমাস অ্যাকুইনাস ছিলেন এর পথিকৃৎ। এই যে অ্যারিস্টটল নিয়ে বাদ-বিবাদ, দর্শনের পাঠ ও অনুসন্ধান, লোকদের ব্যাপক ঔৎসুক্য, তা ইউরোপকে উপনীত করে নতুন বাস্তবতায়। যুগসঙ্কট হাজির হয় এ ধারায়। প্রশ্ন ওঠে রোমান ক্যাথলিক চার্চ ও পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যের নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব নিয়েও। মানবীয় মননের ওপর চার্চের আধিপত্যের অধিকার নিয়েও। জবাব খোঁজা হয় অ্যারিস্টটল থেকে। ইবনে রুশদ থেকে। জবাব অবশ্যই ছিল চিন্তার মুক্তি, মানব মর্যাদা, সাম্য ও মানবীয় স্বাধীনতার পক্ষে।
অথচ ইতঃপূর্বে ইউরোপে এ ছিল প্রায় অসম্ভব। দর্শন চর্চা সেখানে ছিল রীতিমতো অপরাধ। রোমান সম্র্রাট জাস্টিনিয়ান ৫২৯ সালে এক আদেশ জারি করে রোমান সাম্রাজ্যের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দর্শনশাস্ত্রের পঠন-পাঠন নিষিদ্ধ করেন। স্বাধীন চিন্তাভাবনাকে ধর্মের শত্রু মনে করা হচ্ছিল প্রচণ্ডভাবে। এ ছিল বহু শতকের ধারাবাহিকতা। ৩৯০ সালে আলেকজান্দ্রিয়ার গ্রন্থাগারটি পুড়িয়ে দিয়েছিলেন বিশপ থিওফিলাস। কারণ এর অস্তিত্বই ছিল ধর্মবিরোধিতার প্রতীক। ৪১৫ সালে নব্য প্লেটোবাদী দার্শনিক ও জ্যোতির্বিদ হাইপাশিয়াকে একই যুক্তিতে হত্যা করা হয়। তবে শেষ আঘাতটি হানেন জাস্টিনিয়ান (৪৮২-৫৬৫)। তার নিষেধাজ্ঞায় গ্রিক দর্শন ইউরোপ থেকে সম্পূর্ণরূপে অবলুপ্ত হয়ে পড়ে।
গ্রিক দার্শনিকরা প্রাণের ভয়ে পালিয়ে আশ্রয় নেন প্রাচ্যে। এথেন্স থেকে পলাতক সাতজন দার্শনিক আশ্রয় পান পারস্য সম্রাট প্রথম খসরুর কাছে। তার কাছে রোমানরা যখন পরাজিত হয়, তিনি তাদেরকে সতর্ক করে দেন, যেন তারা নিজেদের দার্শনিকদের হত্যা না করে। কিন্তু হত্যা ও উচ্ছেদ জারি ছিল সেখানে। জ্ঞান-বিজ্ঞান ও দর্শনের গ্রন্থাবলি হচ্ছিল নিশ্চিহ্ন, বিলুপ্ত। যে অবধি মুসলিম বিজয় নিশ্চিত না হলো। মুসলিম সাম্রাজ্য পৃথিবীর প্রতিটি সভ্যতার জ্ঞানসম্পদ সংরক্ষণের উদ্যোগ নিলো।
৭০৪ থেকে ১০০০ সালের মধ্যে আরবি ভাষায় গ্রিক দর্শনের (প্রধানত প্লেটো, অ্যারিস্টটল ও পিথাগোরাসের দর্শন) অনুবাদ সম্পন্ন হলো। আব্বাসি খলিফা হারুনুর রশীদ (৭৬৬-৮০৯) ও মামুনুর রশীদের (৭৮৬-৮৩৩) দারুল হিকমাহ ও বায়তুল হিকমাহ শুধু গ্রিক দর্শনকে বাঁচায়নি, অন্যান্য ভাষা ও জাতিগোষ্ঠীর জ্ঞানসম্পদও রক্ষা করেছে বিলুপ্তি থেকে। মুসলিম বিজয়ের একেবারে প্রথম দিন থেকে মুসলিমরা এ ব্যাপারে সজাগ ছিলেন। তাদের বিজয়ী তরবারি যেখানেই গেছে, জ্ঞানসম্পদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে গেছে।
কিন্তু অন্যান্য জাতির জ্ঞানের অনুবাদ ও সুরক্ষার চেয়ে মুসলিমদের সৃষ্টিশীলতা ও উদ্ভাবন ছিল অনেক প্রসারিত। শুধু ধর্মতত্ত্ব নয় বরং দার্শনিক, বৈজ্ঞানিক, ঐতিহাসিক, ভূগোলবিদ, জ্যোতির্বিদ, খগোলবিদ, সমাজতত্ত্ববিদ, চিকিৎসাবিদ, ভাষাতাত্ত্বিক, রসায়নবিদ, পদার্থবিদ, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, মনস্তত্ত্ববিদ, যুক্তিবিদ্যাবিশারদ তথা মানববিদ্যা ও প্রকৃতিবিদ্যার প্রতিটি শাখায় এমন অগণিত বিশেষজ্ঞের জন্ম দিয়েছে, যাদের তালিকা প্রদানে বহু খণ্ডের গ্রন্থ প্রয়োজন। তারা ছিলেন সারা বিশ্বের জ্ঞানার্থীদের শিক্ষক। প্রতিটি জাতির জ্ঞানসন্ধানীরা তাদের উদ্ভাবন ও ব্যাখ্যা তথা জ্ঞানকর্মের দিকে তাকিয়ে থাকত। এটি সেই সময়, যখন ইউরোপ জ্ঞান ও চিন্তার মরুভূমি। সেখানে জ্ঞানের ফুল ফোটানোর আয়োজনকে মুসলিমদের স্পেনবিজয় নামে চিত্রিত করা যায়।
স্পেন ও সিসিলির মুসলিম মনীষীরা ছিলেন ইউরোপের শিক্ষক এবং তাদের অন্যতম একজন ছিলেন ইবনে রুশদ। অন্যান্য মুসলিম পণ্ডিতদের মতো তিনি ছিলেন বহু বিদ্যাবিশারদ। উচ্চমার্গীয় আইনবিদ, ধর্মতত্ত্ববিদ, চিকিৎসাবিজ্ঞানী, জ্যোতির্বিজ্ঞানী, পদার্থবিজ্ঞানী, মনোবিজ্ঞানী, গণিতবিদ, ফকিহ, সমাজবিজ্ঞানী এবং ভাষাবিজ্ঞানী। প্রতিটি বিষয়ে তার রয়েছে বহু বই। তার শতাধিক বইয়ের সবগুলোই কালাতিক্রমী। প্রায় ২০ হাজার পৃষ্ঠা লিখে গেছেন এসব বিষয়ে। কিন্তু তার প্রধান কৃতিত্ব দর্শনে, আইনতত্ত্বে, চিকিৎসাবিদ্যায়।
চিকিৎসাবিদ্যায় তার রচিত ২০টি গ্রন্থ তাকে শাস্ত্রটির বাঁকবদলের অন্যতম কারিগরে পরিণত করেছে। আধুনিক সার্জারির জনক বলা হয় তাকে। এসব পরিচয় তাকে কমই প্রকাশ করে সভ্যতার বিবর্তনে তার প্রভাবক ভূমিকার তুলনায়। যার প্রতি সম্মান রেখে উদ্ভিদের একটি গণের নাম রাখা হয়েছে Averrhoa । যার মধ্যে রয়েছে Averrhoa bilimbi, Averrhoa carambola, Averrhoa dolichocarpa, Averrhoa leucopetala, Averrhoa leucopetala, Averrhoa minima, Averrhoa sinica!
চাঁদের গায়ের একটি বৃহৎ ক্র্যাটারের নাম রাখা হয় ইবনে রুশদের নামে। চাঁদের বৃহত্তর ক্র্যাটার সিরিলাসের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত এই চন্দ্রখন্দক। রেনেসাঁর গোড়ায় তার যে মাতৃদুগ্ধদায়ী ভূমিকা, এর বিচার যখন করা হয়, ইবনে রুশদকে অ্যারিস্টটলের ঠিক পাশেই অধিষ্ঠিত দেখা যায়। রোজার বেকন ঠিকই বলেছেন, ‘ইবনে রুশদ প্রকৃতিবিজ্ঞানের দরজা খুলে দিয়েছেন’, আর কে না জানে, এ দরজা দিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে আধুনিক বিজ্ঞান!
লেখক : কবি, গবেষক