আজ বিশ্ব পর্যটন দিবস। করোনায় সবার আগে ক্ষতিগ্রস্ত হয় পর্যটন খাত। এর ছোবলে ব্যবসা বন্ধ হতে থাকে পর্যটন খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের। এখনো অনেক প্রতিষ্ঠান পুরোদমে চালু হয়নি। এ কারণে শুধু ট্যুর অপারেটররা নয়, বরং এ শিল্পসংশ্লিষ্ট সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জীবিকা নিয়ে গভীর অনিশ্চয়তায় রয়েছেন ট্যুর অপারেটর, ট্রাভেল এজেন্ট, হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, রেস্তোরাঁ, এয়ারলাইন্স, পর্যটক পরিবহন, ক্রুজিং ও গাইডিংসংশ্লিষ্ট অন্তত ৪০ লাখ পেশাজীবী। এ খাতে দৈনিক ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হচ্ছে। বলা হচ্ছে- করোনা ভাইরাসের দুর্যোগ কেটে গেলেও এর ধকল সামলে উঠতে পর্যটন খাতের অন্তত দুই বছর লেগে যেতে পারে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী আমাদের সময়কে বলেন, করোনায় সারাবিশ্ব ক্ষতিগ্রস্ত। পর্যটন খাতের ক্ষতি হয়েছে। এটি সামলাতে সরকারি-বেসরকারি সবার অংশগ্রহণে চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে পর্যটন খাতের উন্নয়নে অনেক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। করোনা মহামারীর কারণে সারাবিশ্বের পর্যটনশিল্প সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমাদের দেশও এর বাইরে নয়। আমাদের পর্যটন খাত যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তেমনি আমাদের মহাপরিকল্পনার কাজও বন্ধ ছিল। পর্যটন খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, জীবিকা নিয়ে গভীর অনিশ্চয়তায় রয়েছেন ট্যুর অপারেটর, ট্রাভেল এজেন্ট, হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, রেস্তোরাঁ, এয়ারলাইন্স, পর্যটক পরিবহন, ক্রুজিং ও গাইডসংশ্লিষ্ট অন্তত ৪০ লাখ কর্মী। দেশের পর্যটন খাত নিয়ে নেই সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য-পরিসংখ্যান, নেই কোনো দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। ফলে এ খাতে গুণগত পরিবর্তন আসছে না। এ কারণে পর্যটন মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য ২০১৯ সালের ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান আইপিই গ্লোবল লিমিটেডের সঙ্গে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড চুক্তি করে।
জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২০ নভেম্বর বাংলাদেশের পর্যটন মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের ক্রয়প্রস্তাব ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে অনুমোদন হয়। এর
পর ২০১৯ সালের ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান আইপিই গ্লোবাল লিমিটেডের সঙ্গে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের চুক্তি সম্পাদিত হয়। ভ্যাট
ও আইটিসহ এ চুক্তি মূল্য ২৮ কোটি ৬৬ লাখ ২ হাজার ২৪ টাকা ৮০ পয়সা। চুক্তি অনুযায়ী মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ এ বছরের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল। পর্যটন মহাপরিকল্পনা তিনটি পর্যায়ে ১৮ মাসে শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারিত ছিল। ২০২০ সালের ১৯ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে পর্যটন মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ শুরু হয়। তবে শুরু হলেও তা থমকে যায় করোনা ভাইরাসের মহামারীর কারণে। ২০২০ সালের মার্চ হতে মহামারীর কারণে এ কাজের সঙ্গে যুক্ত বিদেশি এক্সপার্ট এবং পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা ঢাকা ছেড়ে নিজ নিজ দেশে চলে যান। ফলে পর্যটন মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। পরে পরামর্শ প্রতিষ্ঠান পরিবর্তিত কর্মপরিকল্পনা প্রদান করে, যা কিছু সংশোধনীসহ ২০২০ সালের ১১ নভেম্বর অনুমোদন দেওয়া হয়। বর্তমানে নতুন করে কর্মপরিকল্পনার কাজ চলছে। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড আশা করছে ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে কাজ শেষ হবে।