আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই চূড়ান্ত হচ্ছে মমতা ব্যানার্জির মুখ্যমন্ত্রিত্ব পাকা করার মার্কশিট! ওই প্রতীক্ষায় দিন শুরু হচ্ছে ‘হাইভোল্টেজ’ ভবানীপুর কেন্দ্রে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের ভবানীপুর উপনির্বাচনে কার পক্ষে কতজন টিপলেন ইভিএমের বোতাম- রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় শুরু হবে তার হিসেবনিকেশ। একইসাথে ভোট গণনা হবে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ এবং জঙ্গিপুর কেন্দ্রের বিধানসভা নির্বাচনের। সেইমতো প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের তিনটি আসনের ভোট গণনা থাকলেও যাবতীয় রাজনৈতিক উত্তেজনা আবর্তিত হচ্ছে ভবানীপুরকে ঘিরেই। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, সারা ভারতের নজর আজ এই কেন্দ্রের দিকে। ‘মমতার ভোট, মমতাকে ভোট’ স্লোগানে ভর করে জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো। মমতার লক্ষ্য একটাই- ‘রেকর্ড মার্জিন’। ‘ঘরের মেয়ে’-র বিপুল ব্যবধানে জিতিয়ে এই ‘মিনি ভারতবর্ষ’ মোদি-শাহ বিরোধী ‘মিশন-২০২৪’-এর সূচনা করবে বলেই ধারণা রাজনৈতিক মহলের।
২০১১ সালের উপনির্বাচনে ভবানীপুরের ৪৪.৭৩ শতাংশ ভোটার ইভিএমে বোতাম টিপেছিলেন। তার মধ্যে ৭৭ শতাংশ ভোটই গিয়েছিল মমতার দিকে। সেবার জয়ের ব্যবধান ছিল ৫৪ হাজারের কিছু বেশি। এবার ভোট পড়েছে ৫৭.০৯ শতাংশ। দলনেত্রী জয়ের ব্যবধানে অতীতের সব নজির ছাপিয়ে যাবেন বলে আশাবাদী তৃণমূল। উল্টা দিকে উপনির্বাচনের গতিপ্রকৃতি দেখে গত মে মাসে ঝুলিতে আসা ৩৫.১৬ শতাংশ ভোট টিকিয়ে ব্যাপারে গেরুয়া শিবির এখন সন্দিহান। বিজেপির দাবি, তাদের প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল যা-ই ভোট পাবেন, সেটা মমতার সরকারের বিরুদ্ধে জন অনাস্থার ভোট! সিপিএমও আছে ময়দানে। তাদের পণ অবশ্য জামানত বাঁচানোর।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ভবানীপুরের কাউন্টিং হবে লর্ড সিনহা রোডের শাখাওয়াত মেমোরিয়াল স্কুলে। কোভিড বিধি যথাযথভাবে মেনে হবে ২১ রাউন্ডের গণনা প্রক্রিয়া। বেলার দিকে ট্রেন্ড স্পষ্ট হলেও, চূড়ান্ত ফল প্রকাশে বিকেল গড়িয়ে যাবে বলেই মত কমিশনের কর্তাদের।
ওই সূত্রটি আরো জানিয়েছে, মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জে এবার ভোট পড়েছে ৭৯.৯২ শতাংশ, জঙ্গিপুরে ৭৭.৬৮ শতাংশ। জঙ্গিপুরের গভর্নমেন্ট পলিটেকনিক কলেজে এই দুই আসনের ভোট গণনা হবে। সামশেরগঞ্জের ভোট গণনা হবে ২৪টি রাউন্ডে এবং জঙ্গিপুরে ২৬ রাউন্ডে।
মোদি-শাহ বিরোধী লড়াইয়ের প্রধান মুখ হিসেবে ইতিমধ্যেই গোটা ভারতের বিরোধী আবর্তে উপস্থাপিত মমতা। রাজনৈতিক মহলের দাবি, ভবানীপুরসহ তিন কেন্দ্রের ভোটের ফল ওই বিরোধী জোট গঠনের প্রয়াসকে বাড়তি অক্সিজেন দেবে। রাজ্যের শাসক দলের ‘অফিসিয়াল’ বিধায়ক সংখ্যাও আরো তিনজন বৃদ্ধি পেতে পারে। তার জন্য অপেক্ষা আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার।
সূত্র : বর্তমান