করোনা মহামারীতে দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়লেও বেড়েছে কোটিপতির সংখ্যা। চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক জুন শেষে কোটিপতি ব্যাংক হিসাবধারীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৯ হাজার ৯১৮ জনে। গত বছরের একই সময়ে এই সংখ্যা ছিল ৮৬ হাজার ৩৭ জন। তার মানে কোটিপতি বেড়েছে ১৬ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ পরিসংখ্যান বলছে, ২০২১ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-মে-জুন) ব্যাংক খাতে ৫ হাজার ৬৪৬টি কোটিপতি ব্যাংক হিসাব যোগ হয়েছে, যেখানে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি-মার্চ) কোটিপতি হিসাবধারী বেড়েছিল ৩৮২ জন। চলতি বছর জানুয়ারি পর্যন্ত ব্যাংকে কোটিপতি হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল ৯৩ হাজার ৮৯০ জন। মার্চ শেষে কোটিপতি হিসাবধারী বেড়ে ৯৪ হাজার ২৭২ জনে দাঁড়ায়। জুন শেষে সেই সংখ্যা ৯৯ হাজার ৯১৮ জনে উন্নীত হয়েছে।
তথ্য বিশ্লেষণে এও দেখা যায়, মহামারী দেখা দেওয়ার পরও গত বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের ব্যাংক খাতে ১০ হাজার ৫১টি নতুন কোটিপতি ব্যাংক হিসাব যোগ হয়। এই হিসাবগুলোয় আমানত যোগ হয় ৬৮ হাজার কোটি টাকারও বেশি। কোটিপতি হিসাবসংখ্যা ও আমানতের পরিমাণ বাড়তে থাকায় মোট আমানতে কোটিপতিদের অবদানও বাড়ছে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন শেষে মোট আমানতে কোটিপতিদের অবদান ছিল ৪৪ দশমিক ০৮ শতাংশ। জুন শেষে ব্যাংকগুলোয় খোলা সব ধরনের হিসাবে জমা ছিল ১৪ লাখ ৩৯ হাজার ৭৬৩ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, চলতি ২০২১ সালের জুন শেষে ব্যাংকগুলোয় এক কোটি থেকে পাঁচ কোটি টাকা পর্যন্ত জমা থাকা হিসাব ছিল ৭৮ হাজার ৬৯৪টি। পাঁচ কোটি থেকে ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত আমানত থাকা ব্যাংক হিসাব ছিল ১১ হাজার ১৩টি। ১০ কোটি থেকে ১৫ কোটি টাকা জমা থাকা ব্যাংক হিসাব ছিল ৩ হাজার ৫৯৯টি। ১৫ কোটি থেকে ২০ কোটি টাকা জমা থাকা ব্যাংক হিসাব ছিল ১ হাজার ৭৩২টি। ২০ কোটি থেকে ২৫ কোটি টাকা পর্যন্ত আমানত জমা থাকা ব্যাংক হিসাব ছিল ১ হাজার ১৮৫টি।
১৯৭২ সালে দেশে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা ছিল মাত্র পাঁচজন। ১৯৭৫ সালে এই সংখ্যা ৪৭-এ উন্নীত হয়। দেশে কোটিপতিদের সংখ্যা ১৯৮০ সালে ছিল ৯৮ জন, ১৯৯০ সালে ৯৪৩ জন, ১৯৯৬ সালে ২ হাজার ৫৯৪ জন, ২০০১ সালে ৫ হাজার ১৬২ জন, ২০০৬ সালে ৮ হাজার ৮৮৭ জন এবং ২০০৮ সালে এই সংখ্যা দাঁড়ায় ১৯ হাজার ১৬৩ জনে।