সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের নানারকম অনিয়ম আর স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী চলছে তোলপাড়। পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমে ফেসবুকের অভ্যন্তরীণ নথিপত্র নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনার। এর মধ্যেই বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে ৯০০ কোটি ডলার আয়ের খবর জানিয়েছে মার্ক জাকারবার্গের এ সংস্থাটি।
দেখা যাচ্ছে, এক বছরের ব্যবধানে প্রতিষ্ঠানটির আয় তিন মাসের প্রান্তিকে বেড়েছে ৯২০ কোটি মার্কিন ডলার। চলতি বছর সেপ্টেম্বর মাসে শেষ হওয়া প্রান্তিকে আয় হয় ৯০০ কোটি ডলার অপরদিকে গেল বছর একই সময়ে প্রতিষ্ঠানটি আয় ছিল ৯৮০ কোটি ডলার।
যদিও সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে অ্যাপলের আইওএস ১৪ অপারেটিং সিস্টেমের সফটওয়্যার আপডেটের প্রভাব পড়েছে ফেসবুকের আয়ের হিসাবে। ওই আপডেটের কারণে বিজ্ঞাপন দেখানোর জন্য নির্দিষ্ট ব্যবহারকারীকে চিহ্নিত করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য।
অন্যদিকে সাবেক কর্মীদের ফাঁস করা নথিপত্র আর তার ওপর ভিত্তি করে একাধিক শীর্ষস্থানীয় মার্কিন সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনের জেরে বিভিন্ন দিক থেকে চাপের মুখে পড়েছে ফেসবুক। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকাণ্ড নিয়ে অনুসন্ধানে নেমেছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের আইনপ্রণেতারা। পুরো বিষয়টির ওপর নজর রাখছে অস্ট্রেলিয়ার সরকারও।
প্রতিষ্ঠানটির সাবেক কর্মীদের ফাঁস করা নথিপত্র বিশ্লেষণ করে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে-বিদ্বেষপূর্ণ কনটেন্ট মোকাবিলায় নিয়মিতভাবেই ব্যর্থ হয়েছে ফেসবুক; যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে নিজস্ব প্ল্যাটফরম মানব পাচার ও দাস ব্যবসায় ব্যবহৃত হচ্ছে জেনেও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান চাপ সৃষ্টি করার আগ পর্যন্ত সে বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি প্রতিষ্ঠানটি।
অন্যদিকে, সোমবার ফেসবুক প্রধান মার্ক জাকারবার্গ এক কনফারেন্স কলে বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা যা দেখছি সেটি হলো ফাঁস হওয়া নথিপত্র ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানের মিথ্যা চিত্রায়ণের সমন্বিত চেষ্টা।’
চলতি বছরের শেষ প্রান্তিকের আয়ে অ্যাপল নীতিমালায় ওই আপডেটের প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করছে ফেসবুক। তবে সেটি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়ার কথাও বলেছে প্রতিষ্ঠানটি।
এদিকে তথ্য ফাঁসের কেলেঙ্কারির মধ্যেও সোমবার ফেসবুকের শেয়ার দর বেড়েছে ১.৩ শতাংশ। চলতি বছরে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের দর বেড়েছে প্রায় ২০ শতাংশ হারে।