ভারতীয় পার্লামেন্ট লোকসভার ভরাডুবির পর রাজ্যস্তরের বিধানসভা নির্বাচনগুলোতে ঘুরে দাঁড়ানো শুরু করেছে কংগ্রেস। হরিয়ানায় অপ্রত্যাশিতভাবে ভালো ফলাফল, মহারাষ্ট্রে রোমহর্ষক লড়াই শেষে শিব সেনার সঙ্গে জোট করে সরকার গড়া এবং সবশেষে ঝাড়খণ্ডের কংগ্রেস জোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা। একের পর এক ফলাফল কংগ্রেসের ঘুরে দাঁড়ানোরই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
অন্তত, কোন রাজ্যে কোন ওষুধে বিজেপিকে হারানো যাবে, সেটা কংগ্রেস নেতৃত্ব বুঝে গেছে। মাত্র দু’মাসের মধ্যে জোট সমীকরণেও দুটি রাজ্যে বিজেপিকে টেক্কা দিয়েছেন তারা। প্রশ্ন হচ্ছে, লোকসভার আগে যে কংগ্রেস শুধুমাত্র ক্ষিপ্রতার অভাবে গোয়া, মণিপুর, মেঘালয়ের মতো রাজ্যগুলোতে ক্ষমতা হারিয়েছে, তারাই হঠাৎ এত আগ্রাসীভাবে জোট সমীকরণের দিকে এগোচ্ছে কীভাবে? রাজনৈতিক মহল বলছে, কংগ্রেসের এই পরিবর্তনের কারণ একটাই। সেটা হলো শীর্ষ নেতৃত্বে বদল। রাহুল গান্ধীর পরিবর্তে কংগ্রেসের শীর্ষপদে সোনিয়া গান্ধীর বসা।
রাহুল গান্ধীকে সরিয়ে সোনিয়া গান্ধী কংগ্রেসের শীর্ষপদে বসার পর থেকেই কংগ্রেস নেতৃ্ত্ব আবারো আগ্রাসী মনোভাব দেখাচ্ছে। রাহুলের আমলে যে বর্ষীয়ান নেতারা কার্যত অকেজো ও নিষ্ক্রিয় হয়ে বসে গিয়েছিলেন, তারা আবার সক্রিয় হয়েছেন। অভিজ্ঞ নেতারা মাঠে নেমে ভোট করতে না পারলেও, অন্তত জোট সমীকরণটা ভালো বোঝেন। তাছাড়া রাহুলের তুলনায়, সোনিয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা অনেক বেশি। আর তারই সুফল পাচ্ছে কংগ্রেস। তাছাড়া, কংগ্রেস ছাড়া অন্যান্য বিরোধী দলের মধ্যে রাহুলের তুলনায় সোনিয়ার গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি। সেটিও জোট গঠনের সময় কাজে লাগছে কংগ্রেসের।
কংগ্রেস নেতাদের একাংশ তাই সোনিয়াকেই স্থায়ী সভাপতি হিসেবে চাইছেন। যদিও, দলের সিংহভাগ মনে করছে, রাহুলই কংগ্রেসের ভবিষ্যৎ। তিনি দলকে এককভাবে শক্তিশালী করতে চাইছিলেন, জোট নিয়ে সেভাবে মাথা ঘামাননি। সেকারণেই রাহুলের আমলে জোট গঠনে সমস্যা হচ্ছিল। তবে, ভবিষ্যতে কংগ্রেসকে এগিয়ে যেতে হলে, রাহুলকেই আবারও ব্যাটন তুলে দিতে হবে।
সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন