সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪২ পূর্বাহ্ন

মানবাধিকারের আয়নায় যুক্তরাষ্ট্র

ড. এ কে এম মাকসুদুল হক
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২১
  • ১৪৪ বার

গত ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের এলিট ফোর্স র‌্যাব এবং বর্তমান ও সাবেক সাতজন র‌্যাব কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। একই সাথে বাংলাদেশের সদ্য সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের মার্কিন ভিসা বাতিল করে দিয়েছে। মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ ও পররাষ্ট্র দফতর মূলত মানবাধিকার লঙ্ঘনের অজুহাতে এসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলে জানায়। তাদের অভিযোগ মতে, র‌্যাব ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ২০০৯ সাল থেকে ৬০০ জনের নিখোঁজ এবং ২০১৮ সাল থেকে ৬০০ জনের নিহত হওয়ার জন্য দায়ী। অভিযোগের বস্তুনিষ্ঠতা যাই হোক, বর্তমান বিশ্বব্যবস্থায় ‘একক পরাশক্তি’ যুক্তরাষ্ট্র যখন প্রয়োজন যেকোনো দেশের বিরুদ্ধে এ ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতেই পারে; সেটি যৌক্তিক বা অযৌক্তিক যেটাই হোক না কেন। কাজেই তারা চীন, উত্তর কোরিয়া ও মিয়ানমারের সাথে বাংলাদেশকেও একই অভিযোগে অভিযুক্ত করল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের কি অন্যের মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্ন তোলার নৈতিক ভিত্তি আছে? প্রথমে তাদেরকেই আয়নায় তাদের চেহারাটা দেখা উচিত। তাদের ভ‚রাজনৈতিক ইতিহাস যে, লাখো-কোটি নিরীহ বনি আদমের তাজা রক্তে রঞ্জিত হয়ে আছে তা তাদের অনুধাবন করা দরকার!

খুব বেশি দূরে যেতে হবে না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে তাকালেই দেখা যাবে, তারা জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপ করে দেড় লাখের বেশি নিরস্ত্র নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছে মাত্র চার দিনেই। যুদ্ধের ময়দান বাদ দিয়ে অসামরিক জনবসতিপূর্ণ নগরীতে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো কি মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়? আবার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ লগ্নে কুচক্রী ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করে ফিলিস্তিনের ভ‚মি দখল করে ‘ইসরাইল’ নামে একটি সন্ত্রাসী ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় এই যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি ভ‚মিকা রেখে ৭০ বছর ধরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষবৃক্ষটি রোপণ করেছে। সেই ইসরাইল ফিলিস্তিনের ‘দোর ইয়াসিন’ গ্রাম পুরো মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়ে হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। তার পর থেকে ছয় যুগ ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি আশ্রয়-প্রশ্রয়ে ইসরাইলি সন্ত্রাসী রাষ্ট্রটি প্রায় প্রতিদিনই নিরস্ত্র ফিলিস্তিনি নাগরিকদের হত্যা করছে। ফিলিস্তিনি শিশুদের পাথর ছুড়ে আত্মরক্ষার অপরাধে ইসরাইলি সশস্ত্রবাহিনী বিমান হামলা চালিয়ে ফিলিস্তিনি বসতিগুলো গুঁড়িয়ে দিচ্ছে অবলীলায়। ইসরাইলিদের এই ‘সন্ত্রাসী’ সশস্ত্র হামলাকে যুক্তরাষ্ট্র বারবারই ইসরাইলের ‘আত্মরক্ষার অধিকার’ বলে সংজ্ঞায়িত করছে; অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে কায়েমি রাষ্ট্র ‘সন্ত্রাসী’ হলেও তারা হয় ‘আত্মরক্ষাকারী’ আর মার্কিন স্বার্থবিরোধী হলে সভ্য দেশও হয়ে যায় ‘সন্ত্রাসী’ রাষ্ট্র। কাজেই মানবাধিকার প্রশ্নে কথা বলার অধিকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অনেক আগেই হারিয়েছে। তবে তারা গায়ের জোরে প্রতিনিয়তই এ অনধিকার চর্চাটি করে যাচ্ছে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সোভিয়েত রাশিয়ার সাথে যখন ‘শীতল’যুদ্ধে অবতীর্ণ হলো, তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীর দেশে দেশে ছায়াযুদ্ধ পরিচালনা করে লাখ লাখ মানুষ হত্যায় পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে অংশ নিয়েছে। রাশিয়ার সমাজতান্ত্রিক সাম্রাজ্যবাদ ঠেকানোর জন্য ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলোতে প্রতিবিপ্লবী সৃষ্টি করে ছায়াযুদ্ধের অবতারণা করেছে, যার বলি হয়েছে হাজারো নিরস্ত্র নিরীহ সাধারণ মানুষ। কিউবা, ব্রাজিল, বলিভিয়া, আর্জেন্টিনা, গুয়াতেমালা, চিলি, নিকারাগুয়া প্রভৃতি দেশে ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পেছনের অন্যতম কুশীলব ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ায় মার্কিনিরা তাদের সামরিক হাত প্রসারিত করে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটিয়েছে। কোরিয়া যুদ্ধ, ভিয়েতনাম যুদ্ধ সরাসরি মার্কিন হস্তক্ষেপের কারণে হয়েছে। বিশেষ করে ভিয়েতনাম যুদ্ধে ১৩ লাখ মানুষের প্রাণহানি এবং তাদের নিজেদের প্রায় ৬০ হাজার সেনার জীবন ক্ষয়ের পর তারা পরাজয়কে বরণ করে রণেভঙ্গ দেয়। ফলে এত লোকের প্রাণহানির বিষয়টি তখন একেবারেই অযথা হয়ে পড়ে। অযথা যুদ্ধের এই ক্ষয়ক্ষতির দায়ভার কে নেবে? মানবাধিকার যে এখানে ভ‚লুণ্ঠিত হলো তার দায়-দায়িত্ব পুরোই তৎকালীন মার্কিন প্রশাসনের ওপর কি বর্তায় না?

আসলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে পৃথিবীর যে প্রান্তেই যুদ্ধবিগ্রহের ও রক্তপাতের ঘটনা ঘটেছে প্রায় সবখানেই আমেরিকার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠে এসেছে। টার্গেট কিলিং, রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড, সামরিক হত্যাকাণ্ড সবখানেই তাদের গোয়েন্দা সংস্থার ‘সিআইএ’ ফুটপ্রিন্ট পাওয়া যাওয়ার বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। এমনকি বিভিন্ন অঞ্চলে প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ বাধানোর পেছনেও মার্কিন সম্পৃক্ততার কথা জানা যায়। মধ্যপ্রাচ্যে ইরাককে ইরানের পেছনে লেলিয়ে দিয়ে দীর্ঘ আট বছর ধরে সাদ্দাম ও খোমেনি উভয়ের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে (ণজওঝ, ডিসেম্বর ২০১৮), যার ফলে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ প্রাণ হারায়। অন্য দিকে দীর্ঘ আট বছরে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তায় বলিষ্ঠ হয়ে এবং মার্কিন বন্ধুত্বের ভরসায় সাদ্দাম হোসেন এক রাতে কুয়েত দখল করে বসেন। তখন মার্কিন নেতৃত্বে পশ্চিমারা সৌদি আরবের সাথে যৌথ বাহিনী গঠন করে সেই ইরাককেই ধ্বংস করে দেয়। এরপর ইরাকের ওপর অবরোধ আরোপ করে লাখ লাখ ইরাকি শিশুকে অপুষ্টিতে ঠেলে দেয়ার মতো মানবাধিকার চরম লঙ্ঘন করে মার্কিনিরা। দীর্ঘ ১৮ বছরের অবরোধ সত্তে¡ও মধ্যপ্রাচ্যে ইরাইলের প্রতিদ্ব›দ্বী হিসেবে টিকে থাকতে পারায় ইরাককে সমূলে ধ্বংস করার পাঁয়তারা করে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে এক দশকের অবরোধে বিপর্যস্ত এ দেশটিকে পুরোপুরি ধ্বংসের জন্য যুক্তরাষ্ট্র তার দোসর যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য পশ্চিমা দেশ মিলে একেবারে ডাহা মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপিত করে আক্রমণ করে ইরাক। এতে ৯ বছরের যুদ্ধে ইরাকে প্রায় চার লাখ লোক প্রাণ হারায় (দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট, ২০ মার্চ ২০১৮)। মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা কর্তৃক ইরাকে ব্যাপক ধ্বংসাত্মক অস্ত্র তৈরির মিথ্যা তথ্য তৈরি করিয়ে ওই আক্রমণ চালানো হয়েছিল। ইরাক দখল করে সেখানে আবুগারায়েব বন্দিশালা ও অন্যান্য বন্দিশালায় অসভ্য-বর্বররূপে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটায় মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনী, যা পুরো বিশ্ববাসী দেখেছে বিভিন্ন মিডিয়ায়।

বিশ্ব মানবাধিকারের কথিত মালিক এই মার্কিনিরাই আবার ১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ রাতে তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানে ট্যাংক-কামান দিয়ে সামরিক অভিযান চালিয়ে ঘুমন্ত নিরস্ত্র নাগরিকের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালানো পাকিস্তানি জান্তাকে অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছিল। অন্য দিকে ২০০১ সালে টুইন টাওয়ারে আক্রমণে অভিযুক্ত ব্যক্তি ওসামা বিন লাদেনের ওপর প্রতিশোধ নেয়ার অজুহাতে বিশ্বের দরিদ্রতম দেশ আফগানিস্তান আক্রমণ করে দখল করে নেয়। যে দেশটি নিজেদের মতো করে চলার চেষ্টা করছিল, যারা অন্য কোনো দেশকে কখনো আক্রমণের দোষে দুষ্ট নয়, তাদেরই আক্রমণ করে সুদীর্ঘ দুই দশকে প্রায় দেড় লাখ সাধারণ মানুষকে হত্যা করে। আফগানিস্তানে তারা তালেবান আক্রমণের নামে বিয়েবাড়ি, জানাজার নামাজ, বরযাত্রা, শোভাযাত্রা, শবযাত্রা ইত্যাদি সামাজিক অনুষ্ঠানে হামলা করে হাজারো নিরীহ মানুষকে হত্যা করে। শত শত মানুষকে তালেবান সন্দেহে কারাবন্দী করে নৃশংস নির্যাতন করে। এমনকি মার্কিন সেনারা আফগানিস্তানের গ্রামে-গঞ্জে যখন যেখানে খুশি আক্রমণ চালিয়ে নিরস্ত্র নাগরিককে হত্যা করেছে। আফগানদের ধর্মীয় গ্রন্থ’ পবিত্র কুরআন শরিফ আগুনে পুড়িয়ে এবং আফগানির লাশের ওপর প্রস্রাব করার মতো জঘন্য কর্মটি করে তারা মানবতাকে নিষ্ঠুরভাবে অপমানিত করেছে। এ দিকে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে সরাসরি সংশ্লিষ্ট থেকে হাজার হাজার মানুষের হত্যাকাণ্ডের দায় যুক্তরাষ্ট্র কিছুতেই এড়াতে পারে না। ইয়েমেনের যুদ্ধে সৌদি সরকার চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। সেই বাহিনীর যুদ্ধ সরঞ্জাম, অস্ত্রশস্ত্র সব যুক্তরাষ্ট্রই সরবরাহ করছে দীর্ঘ দিন ধরে। মিসরের জান্তা সরকার গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত একটি সরকারকে বন্দুকের নলে উৎখাত করে শত শত প্রতিবাদী মানুষকে হত্যা করছে। বিচারের নামে জেল, জুলুম ও বিচারিক হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে। এসব অমানবিক সব কাজকে যুগ যুগ ধরে সাদরে বৈধতা দিয়ে যাচ্ছে মার্কিন সব প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্রের এই একপেশে বা একচোখা মানবাধিকারের শিকার আমাদের বাংলাদেশও। ২০১৭ সাল থেকে মিয়ানমার সরকার ২৫ হাজার রোহিঙ্গা হত্যা করে এবং শত শত গ্রাম মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়ে ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে পুশ করে দিয়েছে, যা মানবাধিকার ইতিহাসের জঘন্যতম অপরাধ ছিল। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শুধু ‘লিপ সার্ভিস’ দেয়া ছাড়া কোনো ধরনের কার্যকর পদক্ষেপ আজ পর্যন্ত নেয়নি মিয়ানমারের বিরুদ্ধে। নৃশংসতার শিকার এই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নিরাপত্তার সাথে নিজ ভ‚মিতে ফিরিয়ে নেয়ার সামান্য পদক্ষেপটুকু নেয়ার কথাও বলছে না বিশ্ব মানবাধিকারের স্বঘোষিত এই পাহারাদাররা।

মানবাধিকারের অবমাননা কোথায় হচ্ছে না? চীন, রাশিয়া, ফ্রান্স, আমেরিকাসহ সব দেশেই, সব অঞ্চলেই হচ্ছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতে এই উপমহাদেশের সবচেয়ে বেশি লঙ্ঘিত হচ্ছে মানবাধিকার। গরুর গোশত বহনের ‘অপরাধে’ বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। কাশ্মিরে প্রতিনিয়ত চরমভাবে মানবাধিকার ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে। গুজরাট, দিল্লিতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার নামে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। তাদের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ কি মার্কিন মুরুব্বিরা নিতে পারছে? কাজেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে আমাদের দেশের ওপর মার্কিনিদের চাপিয়ে দেয়া রায় আমাদের জন্য লজ্জার! এই রায় আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে অপমান করেছে। অথচ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজেই বিশ্বের দেশে দেশে এই মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য চরমভাবে অভিযুক্ত। কাজেই তাদের মানবাধিকার সংক্রান্ত এই রায় শুধুই একটি কায়েমি স্বার্থের মুরুব্বিয়ানা বলে অনেকে মনে করেন। চীন, উত্তর কোরিয়া আর মিয়ানমারের কাতারে বাংলাদেশকে বিবেচনা করাটা আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর আনন্দকে আহ্বান করে দিয়েছে!

সমস্যা হলো- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একক পরাশক্তির জায়গায় দাঁড়িয়ে বিশ্বের সব কিছুর গতি-প্রকৃতিকে একাই নির্ধারণ করছে। বিশেষ করে দুর্বল দেশগুলোর বিষয়ে। কোন দেশ সন্ত্রাসী, কারা স্বাধীনতাকামী বা গণতন্ত্রী ইত্যাদি সবই তারা নির্ধারণ করে দিচ্ছে। এটিকেই আসলে ‘গরমযঃ রং জরমযঃ’ বলা হয়। তাদের সাথে স্বার্থের দ্বন্দ্ব হলেই ‘সন্ত্রাসী’ বা মানবাধিকার হরণকারী। জানি না, বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের সাথে মার্কিনিদের দ্ব›দ্বটা কোথায়? হয়তো পর্দার অন্তরালের অনেক কিছুই আমরা সাধারণ নাগরিকরা দেখছি না বা জানি না। সাম্প্রতিক সময়ে ‘কোয়াডে’ যোগদানের ব্যাপারে সঙ্গতকারণেই বাংলাদেশের স্বতঃস্ফূর্ততা নেই। অন্য দিকে চীনকে আমাদের উন্নয়নের অংশীদার হিসেবে খুব কাছাকাছি দেখা যাচ্ছে। তবে এ ক্ষেত্রে আমাদের মধুর প্রতিবেশী কী করেছে আমাদের জন্য? যেখানে ক‚টনৈতিক অঙ্গনে চাউর রয়েছে, বাংলাদেশের কূটনৈতিক বিষয়ে মার্কিন প্রশাসন ভারতের ওপর অনেকটা নির্ভরশীল! তবে কি আমরা ভারতের চেয়ে চীনের দিকে বেশি হেলে পড়েছি? এটাই কি আমাদের ‘অপরাধ’? এসব প্রশ্নের উত্তর যাই হোক না কেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশের প্রতি এই সময়ে এই আচরণ অনেকটা কৌশলগত বলেই বিশ্লেষকরা মনে করেন। কাজেই আমাদের কৌশলেই এটিকে মোকাবেলা করতে হবে। অস্বীকারের ‘জেদ’ থেকে বেরিয়ে এসে কিভাবে অবস্থার উন্নতি ঘটানো যায় সেই চেষ্টা করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্কের বিষয়টি বাস্তবতার নিরিখে বিবেচনা করতে হবে; কারণ এই নিষেধাজ্ঞার অর্থনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক প্রভাব সুদূরপ্রসারী হতে পারে।
লেখক : নিরাপত্তা বিশ্লেষক

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com