এবারের দশই জানুয়ারি এক ভিন্ন মেজাজে পালিত হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের এই দিবসে আমরা প্রবল উৎসাহে তার জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তীর আনন্দ দেশবাসীর সঙ্গে ভাগ করে নিচ্ছি। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ হানাদার পাকিস্তানি সেনা ও তাদের দোসরমুক্ত হলেও আমাদের বিজয় সেদিন পূর্ণ হয়নি। যিনি বাংলাদেশের আরেক নাম সেই তিনি তখনো পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি ছিলেন। একে তো হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসরদের হাতে অগুনতি মানুষের প্রাণহানি, পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর বন্দিদশা- দুইয়ে মিলে আমাদের বিজয়ের আনন্দকে অনেকটাই বিষণœ করে রেখেছিল। ভারতের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর অক্লান্ত প্রচেষ্টা এবং মুজিবনগর সরকারের কূটনৈতিক যুদ্ধের কারণে বঙ্গবন্ধুর মুক্তির পক্ষে বিশ্বজনমতের চাপ অব্যাহতভাবে বাড়তে থাকে। বিশ্বনেতারাও নড়েচড়ে বসেন। শেষ পর্যন্ত পরাজিত পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুকে নিঃশর্তে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। মুক্ত বঙ্গবন্ধু লন্ডন হয়ে ব্রিটিশ রাজকীয় বিমানবাহিনীর একটি বিশেষ বিমানে দশ জানুয়ারি বিকালে তার সারাজীবনের আরাধ্য স্বাধীন বাংলাদেশে পা রাখেন। তার আগে একইদিন সকালে ইন্দিরা গান্ধীর সরকার ও ভারতবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্য সংক্ষিপ্ত যাত্রাবিরতি করেন। নয়াদিল্লির পালাম বিমানবন্দরে রাষ্ট্রপতি ভি ভি গিরি, প্রধানমন্ত্রী মিসেস গান্ধী, মন্ত্রিসভার সদস্য, কূটনীতিক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা তাকে স্বাগত জানান। ভারত সরকার ও জনগণকে সেদিন তিনি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানিয়ে যে কথাগুলো বলেছিলেন, ‘এ অভিযাত্রা অন্ধকার থেকে আলোয়, বন্দিদশা থেকে স্বাধীনতায়, নিরাশা থেকে আশায় অভিযাত্রা। অবশেষে আমি নয় মাস পর আমার স্বপ্নের দেশ সোনার বাংলায় ফিরে যাচ্ছি। আমাকে যখন আমার মানুষের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল, তখন তারা কেঁদেছিল; আমাকে যখন বন্দি করে রাখা হয়েছিল, তখন তারা যুদ্ধ করেছিল আর আজ যখন আমি তাদের কাছে ফিরে যাচ্ছি তখন তারা বিজয়ী। আমি ফিরে যাচ্ছি তাদের নিযুত বিজয়ী হাসির রৌদ্রকরে। আমাদের বিজয়কে শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির পথে পরিচালিত করার যে বিরাট কাজ এখন আমাদের সামনে তাতে যোগ দেওয়ার জন্য আমি ফিরে যাচ্ছি আমার মানুষের কাছে।’
সেদিন তিনি আরও বলেছিলেন যে, দুটো বন্ধুপ্রতিম দেশের প্রচেষ্টায় তার সোনার বাংলা নিশ্চয় সমৃদ্ধির দেশ হতে পারবে। সবে বন্দিদশা থেকে মুক্ত হয়েছেন। লন্ডনেই সহনেতাদের কাছ থেকে টেলিফোনে শুনেছেন কীভাবে তার প্রিয় বাংলাদেশকে শত্রুরা ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। সেই সংকটকালেও তিনি স্বপ্ন দেখছিলেন সোনার বাংলার। শান্তি, প্রগতি ও সমৃদ্ধির বাংলাদেশকে তিনি গড়ে তুলবেন মানুষের সার্বিক মুক্তির আকাক্সক্ষা পূরণের জন্য।
বাংলাদেশে যখন তিনি এসে নামলেন পুরো বিমানবন্দর মানুষে ভরে গেছে। তেজগাঁও থেকে রেসকোর্স ময়দানে পৌঁছতে তার আড়াই ঘণ্টা লেগেছিল। রাস্তায় মানুষ আর মানুষ। দুপাশের বাড়ির ছাদে, বারান্দায় অসংখ্য মানুষ। তার চোখে পানি। যারা তাকে স্বাগত জানাচ্ছিলেন তাদের চোখেও পানি। প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন তার বুক জড়িয়ে কাঁদছিলেন। তাদের চোখের এ পানি ছিল আনন্দের। এ পানি ছিল বেদনার। খেয়াল করুন তিনি কিন্তু তার পরিবারের সদস্যদের কাছে প্রথমে ছুটে যাননি। গেলেন রেসকোর্সে। তার দেশবাসীর কাছে। শুরুতেই বাংলাদেশের লড়াকু মানুষকে তিনি শ্রদ্ধা জানান। শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলে ওঠেন, ‘ভাইয়েরা আমার, লাখ লাখ মানুষের প্রাণদানের পর আজ আমার দেশ স্বাধীন হয়েছে। আজ আমার জীবনের সাধ পূর্ণ হয়েছে। বাংলাদেশ আজ স্বাধীন। বাংলার কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, মুক্তিযোদ্ধা ও জনতার প্রতি জানাই সালাম। তোমরা আমার সালাম নাও।’ তাকে কারাগারে রাখা হয়েছিল। কিন্তু তিনি জানতেন বাংলাদেশ স্বাধীন হবেই। তার প্রত্যাশা ছিল ‘বাংলার মানুষ মুক্ত হাওয়ায় বাস করবে, খেয়ে-পরে সুখে থাকবে।’ তিনি সেদিন দৃঢ়প্রত্যয়ের সঙ্গে বলেছিলেন ‘বাংলাদেশ আজ মুক্ত, স্বাধীন। একজন বাঙালি বেঁচে থাকতেও এই স্বাধীনতা নষ্ট হতে দেব না। বাংলাদেশ ইতিহাসে স্বাধীন দেশরূপেই বেঁচে থাকবে। বাংলাকে দাবায়ে রাখতে পারে এমন কোনো শক্তি নাই।’
তার সেদিনের আবেগঘন উচ্চারণই বলে দেয় তিনি কেমন সোনার বাংলা চেয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্ট হিসেবে নয়, আপনাদের ভাই হিসেবে বলছি, যদি দেশবাসী খাবার না পায়, যুবকরা চাকরি বা কাজ না পায়, তাহলে স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়ে যাবে- পূর্ণ হবে না।’ তাই তার আহ্বান ছিল, ‘বিধ্বস্ত বাংলাকে নতুন করে গড়ে তুলুন। নিজেরা সবাই রাস্তা তৈরি করতে শুরু করুন। যার যার কাজ করে যান।’ মন তার বিক্ষিপ্ত। চারদিকে মরা লাশ আর বারুদের গন্ধ। আর স্বজনহারাদের আর্তনাদ। এমন দুঃখভারাক্রান্ত সময়েও তিনি স্বপ্ন দেখেছেন যে, ‘বাংলাদেশ একটি আদর্শ রাষ্ট্র হবে। আর তার ভিত্তি বিশেষ কোনো ধর্মীয় ভিত্তি হবে না। রাষ্ট্রের ভিত্তি হবে জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা।’ দ্বিতীয় বিশ^যুদ্ধ কবে শেষ হয়েছে। অথচ জাপানে, জার্মানিতে এখনো মার্কিন সৈন্য ঘাঁটি গেড়ে বসে আছে। কোরীয় যুদ্ধ কবে শেষ হয়েছে। কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়ায় এখনো মার্কিন সেনাঘাঁটি রয়ে গেছে।
অথচ বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে আলাপ হয়েছে। আমি যখনই বলব ভারতীয় সেনাবাহিনী তখনই দেশে ফেরত যাবে। এখনই আস্তে আস্তে অনেককে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।’ আবারও তিনি সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন ছড়িয়ে দিয়ে সমবেত জনগণকে আশ^স্ত করেন যে, ‘বাংলাদশেকে একটি সুখী সমৃদ্ধিশালী দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। একটি লোককেও আর না খেয়ে মরতে দেওয়া হবে না। সব রকমের ঘুষ লেনদেন বন্ধ করতে হবে।’ এর পর তিনি জাতিসংঘের কাছে আহ্বান জানান বাংলাদেশকে বিশ^সভায় আসন দেওয়ার জন্য।
এর পর তিনি পরিবারের কাছে যান। আর পরের দিন থেকেই তিনি লেগে যান যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে পুনর্নির্মাণের কাজে। আত্মসমর্পণের আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্ট থেকে সব টাকা বের করে পুড়িয়ে দেয় হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী। রাস্তাঘাট, বন্দর, রেললাইন, সেতু-কালভার্ট বিধ্বস্ত। এক কোটি শরণার্থীকে পুনর্বাসনের চ্যালেঞ্জ ছাড়াও কুড়ি লাখের মতো পুড়ে ছাই হওয়া ঘরবাড়ি পুনর্নির্মাণ করতে হবে। মানুষকে খেতে দিতে হবে। কৃষি উৎপাদন পুনরায় শুরু করতে হবে। শিল্প-কারখানা ফের চালু করতে হবে। তরুণদের আকাশছোঁয়া প্রত্যাশা পূরণ করতে হবে। এত সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সামান্য দমে যাননি বঙ্গবন্ধু। ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়েই তিনি সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখতে থাকেন। এ দেশের মাটি ও মানুষকে পুঁজি করেই তিনি নেমে পড়েন অর্থনৈতিক মুক্তি সংগ্রামে। আগামী প্রজন্মকে শক্তিশালী, সাম্যভিত্তিক এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার জন্য অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক মৌলিক অধিকার নিশ্চিতধর্মী একটি চমৎকার সংবিধান তিনি দেশবাসীকে উপহার দেন মাত্র নয় মাসে। সম্পদ নেই। তবু প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা হাতে নেন নিঃশঙ্কচিত্তে। মূলত মানুষকে সমাবেশিত করে স্বদেশি কৌশলে দেশ গড়ার এক অসাধারণ যুদ্ধে নেমে পড়েন বঙ্গবন্ধু। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, শিল্প, সামাজিক সুরক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন এবং পরিবেশ সংরক্ষণসহ অসাধারণ সব লক্ষ্য পূরণে তিনি নিবেদিত থাকেন তার উন্নয়ন অভিযাত্রায়। একদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। অন্যদিকে বিশে^র তেলের বাজারে আগুন। মূল্যস্ফীতি আকাশচুম্বী। খাদ্য নিয়ে চলছিল পাকিস্তানি নষ্ট কূটনীতি। মার্কিন খাদ্য সাহায্য হচ্ছিল ব্যাহত। এসবই দেশে দুর্ভিক্ষাবস্থা তৈরি করেছিল। এর পাশাপাশি দেশের ভেতরে সমালোচকের অভাব ছিল না। এক দ- ফুরসত পাননি তিনি। দেশ গড়ার সূচনালগ্নে তিনি সবার কাছ থেকে সে রকম সহায়তা পাননি। এমনকি মওলানা ভাসানীও তাকে দম নিতে দেননি। আর তথাকথিত ‘বিপ্লবী’রা তো নিরন্তর হতাশা ছড়াতই। এরা তরুণদের মাথা বিগড়ে দিতে সামান্য কার্পণ্য করেনি। এতসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই বঙ্গবন্ধু এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন তার স্বপ্নের বাংলাদেশকে। মাথাপিছু আয়, খাদ্য-উৎপাদন, শিল্প-উৎপাদন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক সুরক্ষা এবং ভৌত ও সামাজিক অবকাঠামো উন্নয়নে তিনি পরিকল্পিত উদ্যোগ নিয়েছিলেন বলেই যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে সামনের দিকে হাঁটছিল। মাত্র সাড়ে তিন বছরে মাথাপিছু আয় বেড়েছিল ৯৩ ডলার থেকে ২৭৩ ডলারে। খাদ্য ঘাটতি কমছিল। মূল্যস্ফীতিও ছিল নিম্নমুখী। ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগের সীমা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। সামষ্টিক অর্থনীতি স্থিতিশীল হচ্ছিল। বেশিরভাগ দেশই বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। দেশ এগিয়ে যাচ্ছিল তার স্বপ্নের পথরেখায়। কিন্তু বিশ^াসঘাতকদের আঘাতে বাঙালির এই ইতিহাসের বরপুত্রের স্বপ্নযাত্রা থামিয়ে দেওয়া হয়। দেশ ছিটকে পড়ে উন্নয়ন অভিযাত্রা থেকে।
অনেক বছর ধরে সংগ্রাম শেষে ফের দেশ ফিরেছে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের পথ নকশায়। আজকের বাংলাদেশ উন্নয়নের মানচিত্রে বিশে^র বিস্ময়। জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে শামিল হওয়ার চূড়ান্ত ছাড়পত্র তার হাতের মুঠোয়। তার মাথাপিছু আয় আড়াই হাজার ডলারেরও বেশি। গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির হার এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ। এমনকি চীন ও ভারত থেকেও বেশি। গত পঞ্চাশ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির কাঠামোগত রূপান্তর অভাবনীয়। ১৯৭৩ সালে জিডিপিতে কৃষির অবদান ছিল ৫৩ শতাংশ। আজ তা ১৩ শতাংশ। স্বাভাবিক নিয়মেই পূর্ব এশীয় উন্নয়ন ধারায় শিল্পোন্নয়নের দিকে এগোচ্ছে বাংলাদেশ। তা সত্ত্বেও কৃষির যান্ত্রিকীকরণ ও সম্প্রসারণের সাফল্যের কারণে একরপ্রতি উৎপাদনশীলতা এশিয়ায় সবার ওপরে। মাথাপিছু আবাদ জমির হার কমছে। কিন্তু উৎপাদনের পরিমাণ বাড়ছে। আর বহুমাত্রিক হচ্ছে কৃষি। মাছ, মাংস, মুরগি, সবজি, ফুল, ফল ও কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণে বাংলাদেশের অগ্রগতি চোখে পড়ার মতো।
রপ্তানিমুখী শিল্পেও বাংলাদেশের সাফল্য দেখার মতো। এই করোনাকালেও গত এক বছরে প্রবাসী আয় এসেছে ২২ বিলিয়ন ডলার। গত ছয় মাসে রপ্তানি বেড়েছে ২৮ শতাংশ। আমদানি বেড়েছে পঞ্চাশ শতাংশেরও বেশি। তার ৩০ শতাংশই যন্ত্রপাতি। সব মিলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের গতি বিস্ময়কর। সংকটকালেও কী করে অর্থনীতির চাকা সচল রাখা যায় সে উদাহরণ আমাদের বিচক্ষণ নেতৃত্ব, পরিশ্রমী উদ্যোক্তা ও কর্মীবাহিনী বিশ^কে দেখিয়ে দিয়েছে। উপর্যুপরি রপ্তানি অর্ডার আসছে। সরকারের প্রণোদনায় প্রবাসী আয়ের গতিও উর্ধ্বমুখী। তাই তো আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল, বৈদেশিক দায়-দেনা জিডিপির পনেরো শতাংশেরও কম, মূল্যস্ফীতি খানিকটা বাড়লেও স্থিতিশীল। মানুষের আয়-রোজগার যাতে আরও বাড়ে সেজন্য সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক সদা তৎপর। তবে এখনো চ্যালেঞ্জ অনেক। চাই দক্ষ জনশক্তি। চাই সামাজিক শান্তি। চাই দেশীয় সম্পদের সুষ্ঠু সমাবেশ ও ব্যবহার। চাই দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ।
এমনি এক বাস্তবতায় এ বছর আমরা যখন জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের অবগাহনে তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালন করছি তখনই নয়া ধাঁচের করোনা ভাইরাস ওমিক্রন চোখ রাঙাচ্ছে। তাই আমাদের সবাইকে খুবই সতকর্তার সঙ্গে জীবন ও জীবিকা অক্ষুণœ রাখার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। কিছুতেই আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য তথা অর্থনীতির অগ্রযাত্রাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলব না সেই অঙ্গীকার নেওয়ারও দিন আজ। বিগত দুবছরে করোনার কারণে নয়া কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তরুণ কর্মপ্রত্যাশীদের আশাভঙ্গ ঘটেছে। তাই ফের ‘লকডাউনে’ যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কোভিডের সঙ্গে বাঁচার মতো পথ আমাদের খুঁজে নিতেই হবে। নিশ্চয় বঙ্গবন্ধুর ‘শান্তি, প্রগতি ও সমৃদ্ধির’ বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই। আগামী দিন হবে আমাদের!
ড. আতিউর রহমান : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর