সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২১ পূর্বাহ্ন

প্রাণহানি ও বিনাভোটের রেকর্ড গড়া ইউপি নির্বাচন

বিভুরঞ্জন সরকার
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২২
  • ১১৮ বার

এবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সহিংসতা এবং বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার রেকর্ড তৈরি হয়েছে। ভবিষ্যতে আর শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বিতর্কমুক্ত নির্বাচন করা সম্ভব হবে কিনা সে প্রশ্ন উঠছে। ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে এবার যত রকমের ঘটনা ঘটেছে, অতীতে সম্ভবত সে রকম ঘটতে দেখা যায়নি। সপ্তম বা শেষ ধাপের ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে গত ৭ ফেব্রুয়ারি সোমবার। অবশ্য নির্বাচনে সহিংসতার দায় নির্বাচন কমিশনের নয় বলে দাবি করেছেন কমিশনের একজন কর্মকর্তা। তা হলে দায় কি যারা নিহত বা আহত হয়েছে, তাদের? এমন প্রশ্নও স্বাভাবিকভাবেই আসছে।

নির্বাচন কমিশনার শাহাদাত হোসেন চৌধুরী একটি সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়ে বলেছেন, আমাদের সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় হয়েছে- যার প্রভাব পড়ছে ভোটের সংস্কৃতিতে। যেখানে মানুষ মরিয়া হয়ে ওঠে বিজয়ী হওয়ার জন্য। এমনকি অনেক স্থানে ভোটে জিতে বা হেরে দুপক্ষই সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ছে। মানুষ মারা যাচ্ছে। বর্তমান সময়ে ভোটে পরাজিতদের ফলাফল মেনে নিতে কষ্ট হয়। নির্বাচনী সংস্কৃতির এই অবক্ষয় থেকে বের হয়ে আসতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন এই বিদায়ী নির্বাচন কমিশনার। কিন্তু কীভাবে সেটা সম্ভব তা নিয়ে তিনি কিছু বলেননি।

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী সপ্তম ধাপের নির্বাচনই ছিল এবারের ইউপি নির্বাচনের শেষ ধাপ। যদিও ১০ ফেব্রুয়ারি আটটি ইউপিতে ভোট হবে। শেষ ধাপের এই নির্বাচনেও হামলা-সহিংসতায় নিহত হয়েছেন দুজন। এর মধ্যে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় এক স্কুলছাত্রসহ দুজন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ভোটের আগের দিন কুমিল্লার দেবিদ্বারে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভাগনের লাথিতে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সপ্তম ধাপে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে ১৩৮টি ইউপিতে। এর আগে গত ২১ জুন ও ২০ সেপ্টেম্বর প্রথম ধাপের নির্বাচনে ৩৬৯টি, ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে ৮৩৩টি, ২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে ১ হাজারটি, ২৬ ডিসেম্বর চতুর্থ ধাপের নির্বাচনে ৮৩৬টি, ৫ জানুয়ারি পঞ্চম ধাপের নির্বাচনে ৭০৮টি এবং ৩১ জানুয়ারি ষষ্ঠ ধাপের নির্বাচনে ২১৬টি ইউপিতে ভোট হয়েছে।

একটি হিসাবে বলা হচ্ছে, সাত ধাপে নির্বাচনী সহিংসতায় মৃত্যু হয়েছে ১০১ জনের। আরেক হিসাবে ইউপি নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতায় প্রাণ গেছে অন্তত ১২৮ জনের। আহত হয়েছে কয়েক হাজার। সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে, মোট ৩০ জন, আর সবচেয়ে কম ষষ্ঠ ধাপে, দুজন। শেষ ধাপের নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা এক কিশোরও। তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে নরসিংদীতে, মোট ১১ জন। দ্বিতীয় অবস্থান বগুড়ার, ৮ জন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সংঘর্ষের কারণে প্রাণহানি হয়েছে। গোলাগুলি ছাড়াও ধারালো অস্ত্রের কোপে, পিটুনিতে, এমনকি একজন চেয়ারম্যান প্রার্থীকে লাথি মেরে হত্যা করার কথাও শোনা গেছে।

সাত ধাপের নির্বাচনে ৪ হাজার ১১১টি ইউপিতে ভোট হয়েছে। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন ৩৬৮ জন। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ইউপি সদস্যের সংখ্যা কয়েকগুণ। কয়েকটি এলাকায় কয়েকটি ইউনিয়ন পরিষদে সব পদেই বিনাভোটে ‘নির্বাচিত’ হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। কোনো ভোটারকেই ভোটকেন্দ্রে যেতে হয়নি।

ভোটের ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, আগের ছয় ধাপে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন অন্তত ২ হাজার ১৭০ জন। বিজয়ীর হার শতকরা ৫৩ শতাংশ। প্রথম ধাপে ৭৩ শতাংশ আসনে জিতলেও শেষ ধাপে আওয়ামী লীগের জেতার হার অনেক কমেছে, সপ্তম ধাপে আওয়ামী লীগ জয় পেয়েছে ২৭ শতাংশ চেয়ারম্যান পদে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিদ্বতায় জিতেছেন ৩৬৮ জন অর্থাৎ ৯ শতাংশ। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রাথী হয়ে জয় পেয়েছেন ৯১১ জন, ২২ শতাংশ। বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন ৩৪৯ জন, ৮ শতাংশ। এর বাইরে জাতীয় পার্টি ও অন্যান্য দলের প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন ৩১৩ জন, ৮ শতাংশ। কয়েকটি ইউপিতে ভোটগ্রহণ স্থগিত হয়েছে।

সপ্তম ধাপের ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের চেয়ে আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ প্রার্থীরা বেশি জয় পেয়েছেন। একটি জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী ১৩৪ ইউনিয়ন পরিষদের মাত্র ৪০টিতে নৌকার প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। ৯৪টিতে জিতেছেন অন্য প্রতীকের প্রার্থীরা। কোনো কোনো ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী একশর নিচে ভোট পেয়েছেন। এমন উপজেলা আছে যেখানে একটি ইউনিয়নেও জয় পাননি নৌকার প্রার্থী। অবশ্য তার পরও সব মিলিয়ে নৌকার প্রার্থীই বেশি জিতেছেন। আওয়ামী লীগের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে আওয়ামী লীগেরই বিদ্রোহী বা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের। আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনে অংশ নেয়নি। তবে ব্যক্তিগতভাবে দলীয় প্রতীক ছাড়া ভোটে দাঁড়িয়ে জিতেছেন বিএনপির স্থানীয় পর্যায়ের অনেকেই।

জামায়াতে ইসলামীর কোনো প্রকাশ্য কার্যক্রম দেশে নেই। মুক্তিযুদ্ধের প্রকাশ্য বিরোধিতাকারী ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে অভিযুক্ত এই দলটি বেশ কয়েক বছর ধরেই সরকারের চাপের মুখে আছে। তার পরও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জামায়াতের বেশ কয়েকজন প্রার্থী স্বতন্ত্র পরিচয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হয়েছেন। এই সংখ্যাটি সংসদের প্রধান বিরোধী দলে জাতীয় পার্টির চেয়ে বেশি বলেও গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে।

সা¤প্রতিক সময়ে ভোটের রাজনীতিতে নানা কারণে যে খরা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, এবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তা অনেকটাই কেটেছে বলে মনে করা হচ্ছে। ভোট মানেই আমাদের দেশে একটি উৎসব। ভোটের সময় সারাদেশের মানুষের মধ্যে একটা চাঞ্চল্য তৈরি হয়। যারা ভোটার নন, তারাও মিছিলে- স্লোগানে শামিল হয়ে জমজমাট করে তোলেন নির্বাচনের পরিবেশ। এবার অনেক জায়গায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সেই অবস্থা দেখা গেছে। ভোটের দিন ভোটকেন্দ্রে উপস্থিতিও ছিল ভালো। সংঘাত, সংঘর্ষ, সহিংসতা না থাকলে বিষয়টি আনন্দের হতো। শতাধিক মানুষের মৃত্যু নির্বাচনী উৎসবকে কিছুটা হলেও ম্লান করেছে।

সপ্তম ধাপের ইউপি নির্বাচনে দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা এবং অন্তত দুজনের প্রাণহানি ঠেকাতে ব্যর্থতার দায় নিতে রাজি নয় নির্বাচন কমিশন। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় নির্বাচন ভবনে ভোট শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেছেন, সব মিলিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।

চট্টগ্রামে নির্বাচনী সহিংসতায় দুজনের মৃত্যুর বিষয়ে তিনি বলেন, তারা ভোটকেন্দ্রের বাইরে স্থানীয় গোষ্ঠীর মধ্যে মারামারিতে নিহত হয়েছেন। এ দুই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে স্থানীয় প্রশাসন।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন কারও জীবনহানি আশা করে না। কিন্তু এর পরও অনাকাক্সিক্ষত কিছু ঘটনা ঘটে গেছে। এ ক্ষেত্রে কমিশনের ব্যর্থতা নেই। কারণ সহিংস ঘটনাগুলো স্থানীয়ভাবে সংঘটিত হয়েছে। সরাসরি কমিশনের কোনো দায় নেই। এটা স্থানীয় প্রশাসন দেখবে। আমরা স্থানীয় প্রশাসনের চাহিদা অনুযায়ী অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করে থাকি।

এবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে অংশ না নেওয়ার পরও কেন এমন সহিংসতা হলো তার কারণ হিসেবে কেউ কেউ মনে করছেন, আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল, দলের বিপুলসংখ্যক বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়া, কিছু কিছু ক্ষেত্রে পুলিশ প্রশাসনের নজরদারির ঘাটতি এবং অবৈধ অস্ত্রের সহজলভ্যতা- এসব কিছুর মিলিত ফল ব্যাপক সংঘর্ষ এবং প্রাণহানি। তা ছাড়া নৌকা ডোবানোর একটি সুযোগ সরকারবিরোধীরা সম্মিলিতভাবে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীদের ঘাড়ে চেপে কাজে লাগাতে গিয়েও সংঘাতের পরিমাণ বেড়েছে বলে অনেকের ধারণা।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে এবার দলের মধ্যে বড় ধরনের অসন্তোষ লক্ষ করা গেছে। মন্ত্রী ও এমপিদের দ্বন্দ্ব এবং মনোনয়ন বাণিজ্যের কথা আলোচনায় এসেছে। তৃণমূলের তালিকা থেকে মনোনয়ন দেওয়ার কথা বলা হলেও অনেক জায়গা থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে যে, তৃণমূল থেকে নাম দেওয়া হয়নি এমন বিতর্কিত অনেকেই মনোনয়ন পেয়েছেন। কীভাবে এটা সম্ভব হয়েছে তা স্পষ্ট না হলেও এটা জানা যাচ্ছে যে, মোটা অঙ্কের টাকা-পয়সার লেনদেন হয়েছে কোনো কোনো ক্ষেত্রে। দুই-তিন কোটি টাকা দিয়ে মনোনয়ন কেনার অভিযোগও উঠেছে। হত্যা, ধর্ষণ, অর্থ ও চাল আত্মসাতের অভিযোগ আছে, এমন অনেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ায় ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। কয়েক ক্ষেত্রে প্রার্থী বদলাতেও হয়েছে। বিএনপি-জামায়াত থেকে আসা নবাগত কেউ কেউ মনোনয়ন পেয়ে বিতর্ক বাড়িয়েছে। আওয়ামী লীগের স্থানীয় পর্যায়ের দু-একজন নেতা বিতর্কিত ও উসকানিমূলক কথাবার্তা বলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার চেষ্টা করেছেন। কেউ একে-৪৭ রাইফেল ব্যবহারের হুমকি দিয়েছেন, কেউ বা নৌকার বিরুদ্ধে গেলে বাঁচন নেই বলেও হুমকি দিয়েছেন।

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বসুরহাট পৌরসভার চেয়ারম্যান কাদের মির্জা। তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই। ওবায়দুল কাদেরের সাজানো নির্বাচন তিনি মেনে নিতে পারেন না বলে প্রকাশ্যে বক্তব্য দিয়ে কাদের মির্জা আওয়ামী লীগবিরোধীদের মদদ দিয়ে সরকার এবং দলকে বিব্রত করেছেন। এক বছরের বেশি সময় ধরে মির্জা কাদের প্রকাশ্যে এমন সব কথা বলছেন, যা দল এবং সরকারের জন্য বিব্রতকর। অথচ এই সমস্যাটি কেন জিইয়ে রাখা হয়েছে, তা পরিষ্কার নয়। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই না হলে মির্জা কাদের এমন করতে পারতেন কিনা সে প্রশ্ন উঠেছে।

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ফলাফল এবং দলের অবস্থা নিয়ে আওয়ামী লীগের ভেতরে মূল্যায়ন-পর্যালোচনা হওয়া দরকার বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন। কোনো সমস্যা নেই, সব ঠিক আছে, বড় দলে এমন দ্ব›দ্ব-বিরোধ থাকেই বলে স্বস্তি পেলে পরিস্থিতি এক সময় নিরাময় অযোগ্য এবং বড় অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠতে পারে। শত্রু পক্ষ বসে নেই, নানাভাবে ঘুঁটি সাজানোর চেষ্টা চলছে, আলামতও গোপন থাকছে না, তাই আওয়ামী লীগ এবং সরকারের জন্য সতর্ক হওয়ার বিষয়টি আর অবহেলা করার পর্যায়ে নেই বলেই মনে হয়। অন্যের ঘর এলোমেলো করে বা এলোমেলো দেখে তৃপ্তির ঢেঁকুর না তুলে নিজের ঘর গুছিয়ে পরিপাটি রাখাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

বিভুরঞ্জন সরকার : জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com