বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
কলকাতায় বাংলাদেশি কনস্যুলেট ঘেরাওয়ের চেষ্টা, সংঘর্ষে আহত পুলিশ চলমান অস্থিরতার পেছনে ‘উদ্দেশ্যমূলক ইন্ধন’ দেখছে সেনাবাহিনী জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে যারাই যাবে, তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে : জামায়াত আমির বিচারপতিকে ডিম ছুড়ে মারার ঘটনায় প্রধান বিচারপতির উদ্বেগ ইসরাইলের বিরুদ্ধে জয় ঘোষণা হিজবুল্লাহর বাংলাদেশ ইস্যুতে মোদির সাথে কথা বলেছেন জয়শঙ্কর ইসকন ইস্যুতে কঠোর অবস্থানে সরকার : হাইকোর্টকে রাষ্ট্রপক্ষ আইনজীবী সাইফুল হত্যা : সরাসরি জড়িত ৮, শনাক্ত ১৩ র‍্যাবের সাবেক ২ কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ ছেলেসহ খালাস পেলেন বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ

তিন মাসে ১২ ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি দেড় হাজার কোটি টাকা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৬ জানুয়ারী, ২০২০
  • ৩৩৫ বার

১৭ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকার মূলধন ঘাটতির মুখে পড়েছে ১২টি সরকারি ও বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক। এর মধ্যে সরকারি মালিকানাধীন ব্যাংকই সাতটি। জনগণের অর্থে গত কয়েক বছরে দফায় দফায় মূলধনের জোগান দেয়ার পরও আবারো নতুন করে ঘাটতির মুখে পড়েছে এসব ব্যাংক। আর সরকারি ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি বেড়ে যাওয়ায় সামগ্রিকভাবে ঝুঁকির মুখে পড়েছে ব্যাংকিং খাত।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ঋণের প্রবৃদ্ধি বেড়ে যাওয়ায় ও খেলাপি ঋণের আধিক্যের কারণে ব্যাংকিং খাতে ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদ বেড়ে গেছে। ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে মূলধন সংরক্ষণ করতে হয়। এ কিন্তু এ ১২টি ব্যাংক ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদ বেড়ে যাওয়ার বিপরীতে কাক্সিক্ষত হারে মূলধন সংরক্ষণ করতে পারেনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান মতে, গত সেপ্টেম্বর শেষে ১২টি ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি আগের তিন মাসের চেয়ে ১ হাজার ৫১১ কোটি টাকা বেড়ে ১৭ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, উচ্চ খেলাপি ঋণের কারণে সেপ্টেম্বর শেষে মূলধন ঘাটতি মেটাতে ব্যর্থ হয়েছে ব্যাংকগুলো। এর মধ্যে সরকারি ও বিশেষায়িত খাতের ৭টি, বেসরকারি খাতের ৪টি ও বিদেশি একটি ব্যাংক রয়েছে। একই বছরের জুন শেষে ব্যাংকিং খাতের মূলধন ঘাটতির পরিমাণ ছিল প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা।

সরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মূলধন ঘাটতির মুখে পড়েছে সোনালী ব্যাংক। ব্যাংকটির আলোচ্য সময়ে মূলধন ঘাটতি হয়েছে ২ হাজার ৫৬ কোটি টাকা। এর বাইরে অগ্রণী ব্যাংকে ৭৮৮ কোটি টাকা, বেসিক ব্যাংকে ৫৬২ কোটি টাকা, জনতা ব্যাংকে ৯৩৩ কোটি টাকা ও রূপালী ব্যাংকে ৫৪৬ কোটি টাকা মূলধন ঘাটতি দেখা দিয়েছে আলোচ্য সময়ে।

এ দিকে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে এ বি ব্যাংকের ৬৫২ কোটি টাকা, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ৬৯১ কোটি টাকা, কমিউনিটি ব্যাংকের ৩ কোটি টাকা এবং আইসিবি ইসলামী ব্যাংক ১ হাজার ৫৯১ কোটি টাকা মূলধন ঘাটতি হয়েছে আলোচ্য সময়ে। এর বাইরে বিশেষায়িত ব্যাংকের মধ্যে কৃষি ব্যাংকের ৯ হাজার ৭৮ কোটি টাকা এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ৭০১ কোটি টাকা মূলধন ঘাটতি হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে সেপ্টেম্বর শেষে সাড়ে ১২ শতাংশ হারে মূলধন সংরক্ষণের কথা থাকলেও ব্যাংকগুলো তা অর্জন করতে পারেনি বরং এ সময়ে ১২ ব্যাংকের বিশাল মূলধন ঘাটতির কারণে ব্যাংকিং খাতে সামগ্রিক মূলধন সংরক্ষণের হার আলোচ্য সময়ে হয়েছে সাড়ে ১১ শতাংশ।

জানা গেছে, সংশোধিত ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী, বছরের পর বছর কোনো ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি থাকতে পারবে না। আইন অনুযায়ী, একটি ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি সর্বোচ্চ দুই বছর পর্যন্ত মেনে নেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। দুই বছর পর মূলধন ঘাটতি হলে ওই ব্যাংককে হয় মার্জার অর্থাৎ অন্য কোনো ব্যাংকের সাথে একীভূত হয়ে যেতে হবে অথবা বন্ধ হয়ে যাবে।

এ কারণে কোনো ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি হলে, সেটিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে কিভাবে মূলধন ঘাটতি পূরণ করবে তার পরিকল্পনা জমা দিতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক সময়ে সময়ে তা মনিটরিং করবে। এভাবে দুই বছর পর আইন অনুযায়ী ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু বছরের পর বছর ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি দেখা দিলেও এর বিরুদ্ধে ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী মূলধন সংরক্ষণ করতে না পারলে নানাবিধ সমস্যা দেখা দেবে। এর মধ্যে অন্যতম হলো- আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নিষ্পত্তিতে ব্যয় বেড়ে যাবে। কারণ মূলধন ঘাটতি থাকলে ব্যাংকিং খাতের রেটিং খারাপ হবে। ফলে পণ্য আমদানিতে দেশীয় ব্যাংকগুলোর গ্রহণযোগ্যতা কমে যাবে।

এতে থার্ড পার্টি গ্যারান্টির মাধ্যমে পণ্য আমদানি করতে হবে। এতে ব্যয় স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যাবে। পরিস্থিতি উন্নতি করতে হলে ব্যাংকগুলোকে আরো সতর্কতার সাথে ঋণ বিতরণ করতে হবে। পাশাপাশি খেলাপি ঋণ আদায়ে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com