সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৩ পূর্বাহ্ন

অভিযোগের পাহাড় বিএনপির, প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি আ.লীগের

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৬ জানুয়ারী, ২০২০
  • ৩৪৯ বার

প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোছলেম উদ্দীন আহমেদ ও বিএনপির আবু সুফিয়ান। নির্বাচনী প্রচার শুরুর পর থেকেই বিএনপি প্রার্থী নানা অভিযোগ করে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে। রিটার্নিং অফিসার বরাবর একাধিক অভিযোগ দিয়েছেন। সর্বশেষ গত শুক্রবার বিএনপির প্রচারে হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে।

অন্যদিকে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারদের আশ্বস্ত করতে ব্যস্ত মোছলেম উদ্দীন। দলীয় সরকার ক্ষমতায় থাকায় তিনিই এলাকার সর্বোচ্চ উন্নয়ন করতে পারবেন বলে প্রচার চালাচ্ছেন। তবে প্রার্থীদের প্রতিশ্রুতিতেও খুব বেশি আশ্বস্ত হতে পারছেন না কয়েক দশক ধরে পিছিয়ে থাকা জনপদ চান্দগাঁও-বোয়ালখালীর ভোটাররা।

এ দিকে ভিত্তিহীন অভিযোগ করে বিএনপি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায় বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোছলেম উদ্দীন আহমদ। অন্যদিকে নির্বাচনে পরাজয় নিশ্চিত জেনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী দিশেহারা হয়ে পড়েছেন বলে দাবি করেছেন বিএনপির প্রার্থী আবু সুফিয়ান। সুষ্ঠু নির্বাচন দাবি করে আবু সুফিয়ান বলেন, ১১ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকলেও আওয়ামী লীগ এলাকার উন্নয়ন করেনি। ফলে আমি প্রতিশ্রুতি দিতে চাই না। সুষ্ঠু ভোট হলে জনগণ ভোটের মাধ্যমে তাদের ক্ষোভের জবাব দিবে।

বোয়ালখালীর দুঃখ পুরনো কালুরঘাট সেতু নির্মাণ না হলে সংসদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছিলেন সদ্য প্রয়াত সংসদ সদস্য মঈন উদ্দীন খান বাদল। কয়েক দশকে সেতুটি না হওয়ায় বেশ হতাশ বোয়ালখালীর বাসিন্দারা। সেই সেতুটিকে প্রধান ইস্যু হিসেবে নিয়ে নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন মোছলেম উদ্দীন। এছাড়া এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডে জলাবদ্ধতা নিরসন, রাস্তাঘাট উন্নয়ন, শিল্পাঞ্চলে আধুনিকায়নে আশার কথা শোনাচ্ছেন। সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান রাখতে উন্নয়নের স্বার্থে নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রচারে ব্যস্ত থাকলেও সুষ্ঠু ভোটের দাবিতে সরব বিএনপির আবু সুফিয়ান। এছাড়া প্রচারে হামলা ও বাধার অভিযোগের বৃত্তে ঘুরছেন তিনি। আবু সুফিয়ান বলেন, কালুরঘাট সেতু বোয়ালখালীবাসীর দুঃখ। নির্বাচন এলেই বৈতরণী হতে এটি সামনে আনা হয়। আওয়ামী লীগ ১১ বছর ক্ষমতায় থেকেও সেতু করতে পারেনি। আগামী এক বছরে যে পারবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। আমরা মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিতে চাই না। জনগণের জোয়ার দেখে সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনে কয়েকটি অভিযোগ দিয়েছি কিন্তু কোনো প্রতিকার পাইনি। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট হলে ৮০ শতাংশ ভোটে জয়ী হব।

সংসদ সদস্য মঈন উদ্দীন খান বাদলের মৃত্যুতে চট্টগ্রাম-৮ আসনটি শূন্য হয়। উপনির্বাচনে ৬জন প্রার্থী হলেও মূল প্রতিদ্বন্দি¦তা হবে মোছলেম উদ্দীনের সঙ্গে আবু সুফিয়ানের।

জরাজীর্ণ একমুখী কালুরঘাট সেতু দিয়ে গ্রাম থেকে রোগী নিয়ে শহরে আসতে দুর্ভোগে পড়েন বোয়ালখালীর মানুষ। অনেক সময় সেতুর মাঝখানে বিকল হয়ে যায় গাড়ি। তখন ভয়াবহ জানজট তৈরি হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সেতুর দুই পাড়ে অপেক্ষা করতে হয় যাত্রীদের। বিকল্প সড়কে পটিয়া হয়ে শহরে আসতে গেলেও ঝামেলায় পড়তে হয়।

তিনদিন মোটরযান চলবে না

এ দিকে চান্দগাঁও-বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম-৮) আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৩ জানুয়ারি। এই ভোটকে কেন্দ্র করে ১১ জানুয়ারি থেকে ১৪ জানুয়ারি তিনদিন ওই এলাকায় মোটরযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল রবিবার নির্বাচন কমিশনের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।

১১ জানুয়ারি রাত ১২টা থেকে ১৪ জানুয়ারি রাত ১২টা পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় মোটরসাইকেল ও ১২ জানুয়ারি রাত ১২টা থেকে ১৩ জানুয়ারি রাত ১২টা পর্যন্ত যানবাহন চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

নির্বাচন কমিশন অফিস সূত্র জানায়, নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা যানবাহনগুলোর মধ্যে রয়েছে, বেবি ট্যাক্সি, অটোরিকশা, ইজিবাইক, ট্যাক্সিক্যাব, মাইক্রোবাস, জিপ, পিকআপ, কার, বাস, ট্রাক, টেম্পো, ইজিবাইক ও স্থানীয় পর্যায়ের বিভিন্ন যন্ত্রচালিত যানবাহন। তবে এ নিষেধাজ্ঞা রিটার্নিং কর্মকর্তার অনুমতিসাপেক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও তাদের নির্বাচনী এজেন্ট, দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের (পরিচয়পত্র থাকতে হবে) ক্ষেত্রে শিথিলযোগ্য।

তাছাড়া নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত দেশি-বিদেশি সাংবাদিক (পরিচয়পত্র থাকতে হবে) নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, নির্বাচনের বৈধ পরিদর্শক এবং কতিপয় জরুরি কাজে যেমন অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ডাক, টেলিযোগাযোগ ইত্যাদি কার্যক্রমে ব্যবহারের জন্য যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না।

চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, আগামী ১১ জানুয়ারি থেকে ১৪ জানুয়ারি রাত ১২টা পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় মোটরযান চলাচল বন্ধ থাকবে। এটা করা হয়েছে নির্বাচনী পরিবেশ যাতে সুস্থ-সুন্দর হয়। এই জন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com