সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৯ অপরাহ্ন

‘অসুস্থের সেবা কর, ক্ষুধার্তকে দাও অন্ন’

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২২
  • ১১৯ বার

রমজানে ঘরে-বাইরে চলছে ইফতার আয়োজন। ইফতারে সামান্য ভাগ রাখা হয় গরিব-দুঃখীদের জন্য। বুট-মুড়ির সেই ভাগ পেতে পলিথিন হাতে ছোটাছুটি করে অসহায় শিশু-কিশোররা। করুণ কণ্ঠে অনুনয় জানায় সারিসারি বৃদ্ধ অসহায় মা-বোনেরাও। রোজামুখে কাঠফাটা রোদে দিনভর বাড়ি বাড়ি ফেরি করে ওরা। গ্রামীণ চিত্র আরও বেদনাময়। অনেক পরিবারের ইফতার-সাহরি চলে মোটা-পচা চালের ভাতেই। সামান্য তরকারির ব্যবস্থাও অনেকে করতে পারেন না। কিন্তু তাদের জীবনে কি স্বাদ-আহ্লাদ ফুরিয়ে গেছে? তাদের কি ইচ্ছা জাগে না ফ্রিজের শরবতে কলিজা ঠাণ্ডা করতে! রাস্তার ধুলাবালি নয়, শান্ত মনে ঘরে বসে ইফতার করতে!

সংযম সহমর্মিতার মাস রমজান। দুঃখীজনের ব্যথা-বেদনা অনুভবেরও মাস এটি। সমাজের বিত্তবানরা যদি ইফতারে ভূরিভোজ না করে মিতব্যয়ী হতেন, অপচয় না করতেন; তা হলে অসহায়রা হয়তো আরও একটু ভালো থাকতে পারত। অথচ ইসলাম আমাদের শুনিয়েছে সংযম, সহমর্মিতা এবং মিত্যবয়ের কথা। আল্লাহতায়ালা বলেনÑ ‘তোমাদের মধ্যে যারা বিশ্বাসী। অসহায়দের প্রতি সহানুভূতি প্রবণ হয়ে দান করে, পরকালে তারা যথার্থ প্রতিদান পাবে।’ (সূরা হাদিদ-৭)। আর রাসূল (সা) বলেন, ‘যে ব্যক্তি রোজাদারকে ইফতার করাবে, সে রোজাদারের সমান সওয়াব পাবে। তবে রোজাদারের সওয়াব সামান্যও কমানো হবে না।’ (তিরমিজি শরিফ : ৮০৭)।

আম্মাজান হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা)-কে জিজ্ঞেস করা হলো রমজান এলে মহানবী (সা) কী করতেন? হজরত আয়েশা (রা) বলেন, ‘যখন রমজান মাস শুরু হতো, তিনি অসহায়দের সেবায় কোমর বেঁধে নেমে যেতেন। ঘরে-পরিবারের লোকদের দ্বীন সচেতন করতেন। রাতভর জেগে ইবাদত করতেন।’ (বোখারি শরিফ : ২৪১৭৭)। অসহায়দের ব্যাপারে নবীজি আরও বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের পার্থিব কষ্টগুলো থেকে কোনো কষ্ট দূর করবে, কেয়ামতের কষ্টগুলো থেকে আল্লাহ তার একটি কষ্ট দূর করবেন। যে ব্যক্তি কোনো অভাবীকে দুনিয়াতে ছাড় দেবে, আল্লাহতায়ালা তাকে দুনিয়া ও আখিরাতে ছাড় দেবেন। যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের দোষ গোপন রাখবে, আল্লাহতায়ালা দুনিয়া ও আখিরাতে তার দোষ গোপন রাখবেন। আর আল্লাহতায়ালা বান্দার সাহায্যে থাকেন যতক্ষণ সে তার ভাইয়ের সাহায্য করে যায়।’ (মুসলিম : ৭০২৮)। হজরত আবু মূসা (রা) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা) আরও বলেছেন, ‘অসুস্থ লোকের সেবা করো, ক্ষুধার্তকে অন্ন দাও এবং বন্দিকে মুক্ত করো।’ (বুখারি শরিফ : ৫৬৪৯); (মুসনাদ আবী ই’আলা : ৭৩২৫)।

তাই যারা সমাজ ও রাষ্ট্রের বিত্তবান, তাদের একান্ত করণীয়, ভোজনবিলাস নয়, রোজা পালন করতে হবে সংযমের মাধ্যমে। দুঃখিদের পাশে দাঁড়ানো, দয়া-মায়ার আঁচলে তাদের বেঁধে রাখা। কেননা দুঃখিদের প্রতি সমবেদনা, নিজেদের জীবনেই বয়ে আনবে স্নিগ্ধ প্রশান্তি। সজীব হয়ে উঠবে মন। প্রশস্ত হবে আয় রোজগারের পথ। মুছে যাবে সব পাপ। তিরমিযি শরিফে বর্ণিত, রাসুল (সা) বলেন, ‘দানশীলতা পাপ নিভিয়ে দেয়, যেমন পানি নিভিয়ে দেয় আগুন।’

সম্পাদক, আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকম

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com