সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৯ অপরাহ্ন

শোকেসে কোরআন! মায়ের জায়গা বৃদ্ধাশ্রমে

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২২
  • ১২২ বার

কোরআন অবতীর্ণের মাস রমজান। মৌমাছি-মধুর নিবিড় বন্ধনের মতোই কোরআন ও রোজার বন্ধন। আল্ল­াহ বলেন, রোজার মাসে আমি কোরআন অবতীর্ণ করেছি, যা মানুষের জন্য কল্যাণময় পথের দিশা এবং যা কল্যাণ ও অকল্যাণের পার্থক্যকারী। বাকারা : ১৮৫

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা)-এর সূত্রে হজরত রাসুল (স) বলেছেন, রোজা ও কোরআন কেয়ামতের মাঠে বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। রোজা বলবে, হে আল্লাহ আমার প্রতিপালক! আমি এই বান্দাকে দিনের বেলায় পানাহার ও স্ত্রী সম্ভোগ থেকে বিরত রেখেছিলাম। তার ক্ষমার জন্য আমার সুপারিশ গ্রহণ কর। কোরআন বলবে, আমি তাকে রাতের নিদ্রা থেকে বিরত রেখেছি, তার ক্ষমার জন্য আমার সুপারিশ গ্রহণ কর। কেয়ামতের মাঠে উভয়ের সুপারিশ গ্রহণ করা হবে। (বায়হাকি শরিফ)

রোজার সওয়াব অর্জনে প্রধান অবলম্বন কোরআন তেলাওয়াত। তারাবিহ, তাহাজ্জত ও নফল নামাজে। অধিক তেলাওয়াতে অভ্যাস করা, সময়, সুযোগ বের করে

তেলাওয়াতে ডুবে থাকা। হযরত রাসুল (স) বলেন, কোরআন তেলাওয়াতকারী প্রতিটি বর্ণে দশটি সওয়াব পায়। আমি বলছি না, ‘আলিফ লাম মিম’-এর মধ্যে একটি অক্ষর; বরং আলিফ আলাদা, লাম আলাদা, মিম আলাদা বর্ণ। সুনানে তিরমিজি : ৩০৭৫

প্রতিটির জন্য ভিন্ন সওয়াব। কোরআন তেলাওয়াতে দেহ-মন সজীব হয়ে ওঠে এবং আধ্যাত্মিক শক্তি বাড়ে।

মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশি মুদ্রার নাম টাকা। সৌদি আরবের রিয়াল, আমেরিকায় ডলার, ইউরোপে ইউরো। পরকালের একটিই মুদ্রা, যার নাম- সওয়াব। কোরআনের প্রতিটি বর্ণ পাঠে দশটি সওয়াব। রোজায় সত্তরটি। টাকা-রিয়াল-ডলার-ইউরো উপার্জনের চেয়ে চিরস্থায়ী জগৎ পরকালের সওয়াব উপার্জনের প্রতিযোগিতা করা উচিত। সওয়াব অর্জনে রোজার চেয়ে উত্তম সময় আর নেই।

দুই. কোরআনের অর্থ ও মর্ম বোঝার গতি ক্রমেই কমে আসছে আমাদের জীবনে। শিল্পনন্দিত মুদ্রিত কোরআন বুকে নয়, আমরা সাজিয়ে রাখি শোকেসে। মাঝে-মধ্যে চুমো খেয়ে সম্মান জানাই। এমনও তো হয়, শ্রদ্ধাভরে ঘরের কোরআনটি পাঠিয়ে দিই মসজিদে। বাসাবাড়িতে এত সামগ্রীর ভিড়ে কোরআন রাখব কোথায়! ওই আদুরে ছেলের মতো, যে মাকে উদ্দেশ করে বলে, বাসায় তোমার কষ্ট হয়, বৃদ্ধাশ্রম ভালো লাগবে।

বৃদ্ধ বাবা-মাকে বৃদ্ধাশ্রমের জীবন্ত কবরে পাঠিয়ে ছেলে যে তৃপ্তি পায়, ঘরের কোরআন মসজিদে পাঠিয়েও আমাদের সে রকম উপলব্ধি। সত্যিই কোরআনের মর্মকথা আমরা বুঝি না। খুব সহজে রঙিন মোড়কে আমরা কোরআন পেয়েছি বলে। বুখারি শরিফে আছে- একটি আয়াতের জন্য সাহাবিরা দিনের পর দিন পথে অপেক্ষার কষ্ট আমরা কি অনুভব করতে পারব? আল্লাহ বলেন, এক কল্যাণময় কিতাব আমি অবতীর্ণ করেছি, যেন মানুষ কোরআন অনুভব করে। বোধসম্পন্ন ব্যক্তিরা তা উপদেশ হিসেবে গ্রহণ করে। (সূরা সদ : ২৯)।

দয়াময় প্রভু! কোরআনের মর্মোপলব্ধি করার শক্তি দাও আমাদের।

লেখক : সম্পাদক, আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকম

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com