ঢাকা দক্ষিণের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বহিষ্কৃৃত কাউন্সিলর মমিনুল হক সাঈদ ওরফে ‘ক্যাসিনো’ সাঈদ ঢাকায় এসেছেন। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরুর পর বিদেশ পাড়ি জমান তিনি। সম্প্রতি দেশে এসে ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে দক্ষিণ সিটির ৯ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থীও হন।
মতিঝিল-ফকিরাপুল-দৈনিক বাংলা এলাকার ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের কাছে রহস্যমানব হিসেবে পরিচিত মমিনুল হক সাঈদ। তিনি বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদকও। এ ছাড়া ওয়ান্ডারার্স ক্লাব পরিচালিত হতো সাঈদের নেতৃত্বে। তার বেশভুষায় রয়েছে আধ্যাত্মিকতার ভাব। অবশ্য তার ভেতরের
রূপ পুরোটাই উল্টো। স্বার্থের জন্য হয়ে যেতেন ভয়ঙ্কর। ঢাকায় ক্যাসিনোবাণিজ্যের অন্যতম হোতা হিসেবে তার নামও আলোচিত। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হলে মমিনুল হক সাঈদ পাড়ি জমান বিদেশে। যুবলীগের বহিষ্কৃৃত নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া ও ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটসহ কয়েকজন গ্রেপ্তার হলেও তিনি চলে যান আড়ালে। সম্প্রতি তিনি দেশে ফিরেছেন বলে তার ঘনিষ্ঠ লোকজন জানিয়েছেন।
ক্যাসিনোকাণ্ডে জড়িত থাকার কারণে এরই মধ্যে কাউন্সিলর পদ হারিয়েছেন মমিনুল সাঈদ। ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে আবার প্রার্থী হয়েছেন। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবেই মনোনয়ন দাখিল করেন। প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন স্ত্রী ফারহানা হক বৈশাখিকেও। উভয়েই নির্বাচন কমিশনে বৈধ প্রার্থী হিসেবে ছাড়পত্র পেয়েছেন।
জানা যায়, মমিনুল হক সাঈদ গত মাসের শেষ সপ্তাহে দেশে ফিরলেও মতিঝিল এলাকায় আসেননি। মমিনুল হক সাঈদের মোবাইল নম্বরে ফোন করলে তিনি তা রিসিভ করেননি। তবে তার স্ত্রী ফারহানা হক বৈশাখি ফোনে জানান, তিনি প্রার্থী হচ্ছেন। অন্য বিষয়ে তিনি কোনো কথা বলতে চাননি।
৯ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী মোজাম্মেল হক বলেন, আমি আওয়ামী লীগের সমর্থন পেয়েছি। সাবেক কাউন্সিলর সাঈদ ও তার স্ত্রীও প্রার্থী হয়েছেন। আশা করছি, দলের প্রতি সম্মান দেখিয়ে তারা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করবেন।
জানা যায়, মমিনুল হক সাঈদের স্ত্রী ফারহানা বৈশাখি গত শুক্রবার মতিঝিলের আশপাশের কোনো এলাকায় অনুগতদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন। সেখানে সাঈদই প্রার্থী থাকবেন এটা নিয়ে প্রচার চালাতে বলা হয়। তবে কোনো কারণে সাঈদ মাঠে থাকতে না পারলে ফারহানা বৈশাখি প্রার্থী হবেন এটা নিশ্চিত করা হয়।
নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর থেকেই সাঈদের পক্ষে প্রচার শুরু করে স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। গতকাল মতিঝিল-ফকিরাপুল এলাকায় আওয়ামী লীগদলীয় বিভিন্ন নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। স্থানীয় পদধারী বেশিরভাগ নেতা বলেন, তারা সাঈদ বা তার স্ত্রীর পক্ষ হয়েই নির্বাচন করবেন। গতকাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কাউকে মাঠে দেখা যায়নি। এ কথা স্বীকার করেন প্রার্থী মোজাম্মেল হকও। তিনি বলেন, আশা করছি সবাই মাঠে নামবেন।