রানা প্লাজা ধসের পর বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশি পোশাক বর্জনের রব উঠেছিল। পোশাক কারখানাগুলো নিরাপদ নয়—এই অভিযোগে অনেক বড় বড় ব্র্যান্ড ও ক্রেতা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ থেকে পোশাক কেনা বন্ধ করে দেয়। তখন ক্রেতা প্রতিষ্ঠান ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠনের উদ্যোগে কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নয়নে ইউরোপীয় ক্রেতাদের জোট অ্যাকর্ড ও উত্তর আমেরিকার ক্রেতাদের জোট অ্যালায়েন্স গঠিত হয়। তাদের নজরদারিতে দুই হাজারের বেশি কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নয়নে ব্যাপক কাজ শুরু হয়।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি তাঁদের অনেক কিছু শিক্ষা দিয়েছে। ওই দুর্ঘটনার পর কারখানার নিরাপত্তা ইস্যুতে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করে। এতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে যে পরিবর্তন এসেছে, সেটা খুবই আশাব্যঞ্জক।
পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বাংলাদেশের টেক্সটাইল ও তৈরি পোশাক খাতের ১৫৭টি কারখানা গ্রিন ফ্যাক্টরি সার্টিফিকেটধারী। এর মধ্যে ৪৭টি প্লাটিনাম ও ৯৪টি গোল্ড সার্টিফিকেট পেয়েছে। প্রতি মাসে গ্রিন হিসেবে সার্টিফিকেট পাচ্ছে কারখানাগুলো। ’ তিনি বলেন, বিজিএমইএ অনেক আগে থেকেই সবুজ শিল্পায়ন নিয়ে কাজ করছে। আরো কাজ করতে হবে।
ফারুক হাসান বলেন, ‘এ খাতের জন্য দক্ষ শ্রমিক তৈরি করতে হবে। কোনো দুর্ঘটনা হলেই গার্মেন্টসের নাম আগে উচ্চারিত হচ্ছে। কিন্তু ব্যবসায়ীরা প্রমাণ করে দেখিয়েছেন, দেশে বিশ্বমানের সবুজ কারখানা গড়ে তোলা সম্ভব। শুধু সমালোচনা না করে ভালো কাজগুলো ফোকাস করাও জরুরি। তাহলেই আমরা এগিয়ে যাব। ’
সংস্থার নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, বাংলাদেশে যেসব গ্রিন কারখানা হয়েছে, তা কিন্তু উদ্যোক্তারা নিজ উদ্যোগে করেছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে প্রায় ৪০ লাখ মানুষ নিয়োজিত, যেখান থেকে প্রায় ৩৪ বিলিয়ন ডলার আয় করে বাংলাদেশ, যা মোট রপ্তানির ৮৪ শতাংশের বেশি। রপ্তানির এই আয় বাড়াতে হলে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে এ খাতে। এর মধ্যে অন্যতম হলো আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে শ্রম ও শ্রমিকের নায্যতা নিশ্চিত করা, কর্মপরিবেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ দূষণ কমানো।