বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৪ অপরাহ্ন

নতুন দর কার্যকর : ডলারের ক্রেতা আছে বিক্রেতা নেই

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৩১ মে, ২০২২
  • ১০৩ বার

ডলারের নতুন দর গতকাল সোমবার থেকে কার্যকর হয়েছে। তবে বেশির ভাগ ব্যাংক নিজস্ব তহবিল থেকেই আমদানির লেনদেনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। আন্তঃব্যাংক ডলারের লেনদেন হয়নি বললেই চলে। অর্থাৎ বাজারে ডলারের ক্রেতা ছিল, বিক্রেতা ছিল না। এর ফলে যেসব ব্যাংকে ডলার সঙ্কট ছিল তারা বাজার থেকে ডলার কিনতে না পারায় আমদানি ঋণপত্র নিষ্পত্তি (এলসি সেটেলমেন্ট) করতে পারেনি। তবে, বাজারের প্রতি তীক্ষè নজর রেখেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, কোনো ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেঁধে দেয়া দর থেকে বেশি দামে ডলার লেনদেন করছে কি না তা তদারকি করা হচ্ছে। মাঠপর্যায়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাধিক টিম এ নিয়ে কাজ করছে বলে ওই সূত্র জানায়।

নতুন প্রজন্মের একটি ব্যাংকের তহবিল ব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, গতকাল তাদের ব্যাংকে কোনো আমদানি ঋণপত্র নিষ্পত্তি (এলসি সেটেলমেন্ট) হয়নি কারণ যে হার নির্ধারণ করা হয়েছে, ওই হারে কেউ আন্তঃব্যাংক, লেনদেন করেনি। এর ফলে আন্তঃব্যাংক থেকে কোনো ডলার না পাওয়ায় এলসি সেটেলমেন্ট করা যায়নি। অপর একটি ব্যাংকের তহবিল ব্যবস্থাপক জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেঁধে দেয়া দরেই গতকাল শুধু আমদানিতে ডলার লেনদেন হয়েছে। তাদের নিজস্ব তহবিল ছিল তাই এ নিয়ে কোনো সমস্যা হয়নি। অন্য ব্যাংক থেকে ডলার কেনার প্রয়োজন হয়নি। অপর একটি ব্যাংকের তহবিল ব্যবস্থাপক জানিয়েছেন, বাজারে ডলারের ক্রেতা ছিল, বিক্রেতা ছিল না। কারণ, কম দামে ডলার বিক্রি করে পরে নিজেদের প্রয়োজনে ডলার কিনতে না পারলে সমস্যায় পড়তে হতে পারে। এ কারণে যাদের কাছে কিছু বাড়তি ডলার ছিল তারা বিক্রি করেনি।

এদিকে গত রোববার ব্যাংকগুলোর দেয়া প্রস্তাব পর্যালোচনা করে ডলারের একক মূল্য হার নির্ধারণ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে আমদানি পর্যায়ে প্রতি ডলার ৮৯ টাকা ১৫ পয়সা নির্ধারণ করে দেয়া হয়। আর আন্তঃব্যাংক লেনদেনের সর্বোচ্চ সীমা দেয়া হয় ৮৯ টাকা। গতকাল অনেকেই বাজার পর্যবেক্ষণ করছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে অস্থিরতা কাটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলোতে তদারকি করা হচ্ছে। প্রায় ডজন খানেক ব্যাংক এ তদারকির আওতায় এসেছে। এর মধ্যে কয়েকটি ব্যাংক ডলার কারসাজির সাথে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে। এজন্য ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। কিছু ব্যাংক সঙ্কটের কথা বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে ডলার কিনে ব্যবসা করতে চেয়েছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরিদর্শনে গিয়ে দেখতে পেয়েছে, ওইসব ব্যাংকে ডলার সঙ্কট ছিল না। বড় ব্যাংক যখন ডলার সঙ্কটের কথা বলে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজার থেকে ডলার কিনতে চায়, তখন বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এ সুযোগটি কাজে লাগিয়েছিল মার্কেট প্লেয়াররা। তারা ডলারের দাম বাড়িয়ে দিয়েছিল। এ সুযোগে বড় কিছু রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান তাদের রফতানি বিল অন্য ব্যাংকের কাছে বেশি দামে বিক্রি করে বাড়তি মুনাফা তুলে নেয়। এ কারণেই বাজারে ডলার সঙ্কট হয় বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।

সূত্র জানিয়েছে, বড় কিছু সরকারি ব্যাংক রেমিট্যান্স আহরণে জোর দিচ্ছে না। প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে ডলার চাচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ওইসব সরকারি ব্যাংকে রেমিট্যান্স আহরণে মনোযোগ দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এর বাইরে দুইটি বিদেশী ব্যাংকও এ কারসাজিতে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। সব মিলেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা মাঠপর্যায়ে পরিদর্শন করে তাদের প্রতিবেদন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়েছে। প্রতিবেদনের আলোকেই ব্যাংকগুলোকে ডাকা হবে বলে সূত্র জানায়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, ডলারের নতুন দর নিয়ে হয়তো অনেকেই পর্যবেক্ষণ করছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকেও বাজারের প্রতি নজর রাখা হচ্ছে। তবে নতুন এ দরে লেনদেনে স্থিতিশীল হতে কয়েক দিন সময় লাগতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com