যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে আরো কয়েকটি দেশের নাগরিকদের নিষেধাজ্ঞা দেয়ার বিষয়ে চিন্তা করছে হোয়াইট হাউজ। নির্বাচনের বছরে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিবাসন ইস্যুতে আরো ফোকাস করতে এমন কিছু করতে যাচ্ছেন বলে সংশ্লিষ্ট ছয়জনের বরাতে বিষয়টি উল্লেখ করেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।
তবে সংশ্লিষ্ট দুই ব্যক্তির বরাত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদ সংস্থা এপির এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, হোয়াইট হাউজ নতুন একটি পরিকল্পনা তৈরি করেছে, যেটি ২০১৭ সালে নির্বাহীদের দেয়া বহুল আলোচিত আদেশকে (ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা) একত্র করবে। এতে নতুন করে কয়েকটি দেশকে যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হতে পারে।
নতুন নিষেধাজ্ঞায় যেসব দেশ অন্তর্ভুক্ত হবে, তাদের কাছে বিষয়টি অস্পষ্ট থাকবে। যদিও এটি এখনো নির্ধারণ করা হয়নি বলে ওই দুই ব্যক্তি জানিয়েছেন।
তবে কয়টি দেশ নতুন করে নিষেধাজ্ঞা পেতে যাচ্ছে, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু উল্লেখ করেনি। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা পেতে যাওয়া দেশগুলো বেশির ভাগই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ হবে বলে জানিয়েছেন এপিতে সাক্ষাৎকার দেয়া দুই কর্মকর্তা।
২০১৭ সালের শেষের দিকে অনেক মামলা-মোকদ্দমার পর ছয় দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। সেখানে মূলত ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ বহাল রাখা হয়। বর্তমানে পাঁচটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশসহ সাত দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
মুসলিম দেশগুলো হলো- ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সিরিয়া ও ইয়েমেন। মূলত যুদ্ধবিধ্বস্ত হওয়ায় এসব দেশের নাগরিকদের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিল বলে উল্লেখ করেছিল ট্রাম্প প্রশাসন। আর অন্য দু’টি দেশ হলো- ভেনিজুয়েলা ও উত্তর কোরিয়া।
আরেক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এপির প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সালে প্রাথমিকভাবে এ নিষেধাজ্ঞায় যেসব দেশের নাম ছিল, কিন্তু পরবর্তীকালে দেশটির আদালত নিষেধাজ্ঞার এ তালিকা থেকে সেসব দেশের নাম বাদ দিয়েছেন। এবার সেসব দেশকেই আবার নিষেধাজ্ঞা দেয়া হতে পারে।
যদিও এমন পরিকল্পনার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন হোয়াইট হাউজ মুখপাত্র হোগান গিডলি। তবে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার ফলে দেশের নিরাপত্তা বেড়েছে বলে উল্লেখ করেছেন এবং এর প্রশংসাও করেছেন তিনি। তিনি বলেছেন, ‘ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আমাদের দেশকে সফলভাবে রক্ষা করেছে। বিশ্বজুড়ে আমাদের নিরাপত্তার খুঁটি গড়েছে।’
তবে অনেকেই মনে করছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের ক্ষমতা গ্রহণের তিন বছর পূর্তি উপলক্ষে কোনো ধরনের সতর্কতা ছাড়াই এমন ঘোষণা দিয়ে দিতে পারে।
নতুন শরণার্থী নেবে না টেক্সাস
মার্কিন সরকারের পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় নতুন করে আর কোনো শরণার্থী নেবেন না বলে জানিয়েছেন টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের রিপাবলিকান গভর্নর গ্রেগ অ্যাবোট। গত বছর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক নির্বাহী আদেশে সব অঙ্গরাজ্যকেই ওই কর্মসূচি গ্রহণ করতে বলা হয়। তবে প্রথম অঙ্গরাজ্য হিসেবে ওই আদেশ না মানার ঘোষণা দিলো টেক্সাস কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার গভর্নর গ্রেগ অ্যাবোট বলেছেন, পুনর্বাসন কর্মসূচিতে সহায়তা করতে যে পরিমাণ শরণার্থী নেয়ার কথা টেক্সাসে তার চেয়েও বেশি আছে। তবে এই সিদ্ধান্তে গভীর হতাশা প্রকাশ করেছে শরণার্থী সংস্থাগুলো।
টেক্সাসের বড় কয়েকটি শহরে বিপুলসংখ্যক শরণার্থী রয়েছে। ২০১৮ অর্থবছরে এক হাজার ৬৯৭ জন শরণার্থী নেয়। এই পরিমাণ অন্য যেকোনো অঙ্গরাজ্য থেকে বেশি হলেও আগের অর্থবছরে নেয়া চার হাজার ৭৬৮ জন থেকে অনেক কম।
নিজের সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে লেখা এক চিঠিতে গ্রেগ অ্যাবোট লিখেছেন, ইতোমধ্যে এখানে থাকা শরণার্থী, অভিবাসী ও অন্য গৃহহীনদের ওপর মনোনিবেশ করা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
সূত্র : রয়টার্স ও বিবিসি