মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক কৃষি প্রতিমন্ত্রী এবং জাতীয় পার্টির নেতা সৈয়দ মোঃ কায়সারের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। আজ প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চে এ রায় ঘোষণা করেন। বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন- বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি জিনাত আরা ও বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান।
এর আগে গত ৩ ডিসেম্বর উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ১৪ জানুয়ারি আপিলের উপর রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ।
আপিল আবেদনের শুনানিতে আসামিপক্ষে আইনজীবী সিনিয়র অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন ও এসএম শাহজাহান তাকে খালাস দেয়ার আবেদন করেন। আর রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বহালের আবেদন জানান।
২০১৫ সালের ১৯ জানুয়ারি সৈয়দ মোঃ কায়সার ট্রাইব্যুনালের দেয়া মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে ৫৬টি যুক্তি দেখিয়ে খালাস চেয়ে আপিল আবেদন দায়ের করেন।
২০১৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর সৈয়দ মোঃ কায়সারকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। তার বিরুদ্ধে গণহত্যা, হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও লুণ্ঠনের পৃথক ১৬ টি অভিযোগের ঘটনার মধ্যে ১৪টিতে দোষীসাব্যস্ত করা হয়। এরমধ্যে সাতটি অভিযোগে ঘটনায় পৃথক পৃথকভাবে প্রত্যেকটিতে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হয়। চারটি অভিযোগের ঘটনায় আলাদাভাবে প্রত্যেকটিতে আমৃত্যু কারাদ- প্রদান করা হয়। অপর তিনটি অভিযোগে ২২ বছর কারাদ- প্রদান করা হয়। এছাড়া প্রমানিত না হওয়ায় অপর দুটি অভিযোগ থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
সৈয়দ কায়সার ১৯৪০ সালের ১৯ জুন জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬২ সালে তিনি কনভেনশন মুসলিম লীগে যোগদান করেন। তিনি ১৯৭০ সালের প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে অংশ নেন। তিনি ১৯৭৯ সালে সিলেটের একটি আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন। এরপর তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। এরশাদের জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন এবং হবিগঞ্জ জেলার সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে তিনি জাতীয় পার্টি থেকে এমপি নির্বাচিত হন এবং কৃষি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন। ২০১৩ সালের ১৫ মে কায়সারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। একই বছরের ২১ মে তাকে রাজধানীর এ্যাপোলো হাসপাতাল থেকে গ্রেফতার করা হয়