জিয়াউর রহমান বীর উত্তম জাতির অন্যতম শ্রেষ্ঠ সন্তান। জাতির এক গুরুতর ক্রান্তিকালে ১৯৭১ সালে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে দেয়া তার ঘোষণার মাধ্যমে জিয়া এ দেশের জনমানুষের সামনে পরিচিতি লাভ করেন। পরে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের পর অভ্যুত্থান-পাল্টা অভ্যুত্থানের ফলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে সৃষ্ট ক্রমবর্ধমান অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে সিপাহি-জনতার এক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের রাজনীতির ভরকেন্দ্রে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন এবং ১৯৮১ সালে শাহাদতবরণের মধ্য দিয়ে তার শাসনামলের অবসান ঘটে।
বাংলাদেশের ইতিহাসে তার শাসনামল (১৯৭৫-১৯৮১) এক উল্লেখযোগ্য অধ্যায়। রাষ্ট্রপতি হিসেবে জিয়াউর রহমান বহুবিধ সাফল্যের অধিকারী। স্বল্প সময়ের শাসনামলে নানা সঙ্কটে বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে উন্নতি ও সমৃদ্ধির এক বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে অধিষ্ঠিত করে জিয়া ইতিহাসে নিজের অক্ষয় স্থান নিশ্চিত করেন। বাংলাদেশে বহুদলীয় ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, অর্থনীতির পুনরুজ্জীবন, সময়োপযোগী গতিশীল পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণের মাধ্যমে বিশ^রাজনীতিতে বাংলাদেশের স্বতন্ত্র অবস্থান ও গতিপথ নির্ধারণ এবং আঞ্চলিক পর্যায়ে সহযোগিতার পথনির্দেশ শহীদ জিয়ার অন্যতম অবদান। রাষ্ট্রপতি হিসেবে জিয়াউর রহমানের এসব বহুমাত্রিক সাফল্য বা কৃতিত্ব সম্পর্কে আলোচনা নয়, বরং বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অগ্রগতি ও বিকাশে তার অবদান সম্পর্কে আলোকপাত করতে চাই। আজ ১৯ জানুয়ারি শহীদ জিয়ার শুভ জন্মদিন। জন্মদিনে তার স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা।
আভিধানিক অর্থে সংস্কৃতি বলতে চিৎপ্রকর্ষ বা মানবীয় বৈশিষ্ট্যের উৎকর্ষ সাধনকে বোঝানো হয়। ব্যাপক অর্থে সংস্কৃতি বলতে মানুষের জ্ঞান, আচার-আচরণ, বিশ্বাস, রীতিনীতি, নীতিবোধ, চিরাচরিত প্রথা, সমষ্টিগত মনোভাব, সামাজিক প্রতিষ্ঠান এবং অর্জিত সুকুমার বৃত্তি ও কীর্তিকর্মকে বুঝায়। একটি জাতির জীবনে তার সংস্কৃতির গুরুত্ব অপরিসীম। সংস্কৃতি হলো একটি জাতির টিকে থাকার কৌশল এবং সংস্কৃতির মধ্য দিয়েই একটি জাতির মনন ও রুচির বহিঃপ্রকাশ ঘটে। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ছিলেন একজন সুরুচিসম্পন্ন সংস্কৃতিবান মানুষ। বই পড়া ও গান শুনা ছিল তার প্রিয় ও পছন্দের কাজ। তিনি একজন চৌকস ক্রীড়াবিদ ছিলেন। দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ও সংস্কৃতিবান মানুষ হিসেবে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান জাতীয় জীবনে সংস্কৃতি চর্চার গুরুত্ব উপলব্ধি করেন এবং এর উন্নয়ন বিকাশে নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেন।
জিয়াউর রহমান ছিলেন বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা। তিনি বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদে ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গ-সংস্কৃতি নির্বিশেষে সব নাগরিকের ঐক্য ও সংহতির ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। শহীদ জিয়া বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের চেতনার অনুক‚লে এবং এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ আপন বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল সংস্কৃতির বিকাশ সাধনে চেষ্টা করেছিলেন। ১৯৮১ সালের ৮ জুলাই দৈনিক বাংলা পত্রিকায় ‘বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ’ নামে জিয়াউর রহমানের একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। নিবন্ধে তিনি বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের যে সাতটি মৌলিক বিবেচ্য বিষয়ের কথা বলেন এর মধ্যে অন্যতম হলো- আমাদের সংস্কৃতি। এ প্রসঙ্গে বলা হয়- ‘আমাদের আশা-আকাক্সক্ষা, উদ্দীপনা, আন্তরিকভাবে ধারক ও বাহক আমাদের নিজস্ব কৃষ্টি ও সংস্কৃতি।’ জিয়া মনে করতেন, আমাদের সংস্কৃতি আমাদের দেশজ কৃষ্টির ধারক ও বাহক। এ সংস্কৃতির রয়েছে বিকাশ ও সমৃদ্ধিপ্রাপ্তির এক অনন্য সাধারণ ঐতিহ্য- যা বলিষ্ঠ স্বকীয় বৈশিষ্ট্যের স্বাতন্ত্র্যে সমুজ্জ্বল। নিবন্ধে জিয়াউর রহমান উল্লেখ করেন যে, ‘আমাদের মহান স্বাধীনতার যুদ্ধ এ দেশের সংস্কৃতিকে দিয়েছে দুর্বার শক্তি।’ সেই চেতনার আলোকে আমাদের সংস্কৃতির নিজস্ব সত্তা ও বৈশিষ্ট্যকে আরো মহিমান্বিত করার ব্যাপারে জিয়াউর রহমান তার দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন পূর্বোক্ত নিবন্ধে।
১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) প্রতিষ্ঠা করেন। দলটির প্রতিষ্ঠাকালীন ঘোষণাপত্রে ২৮ নম্বর ধারায় বাংলাদেশী সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ক্রীড়ার বিকাশে বিএনপির কর্মপ্রয়াসের কথা বলা হয়। ঘোষণাপত্রে বলা হয়- ‘জাতির স্বতঃস্ফূর্ত সৃজনশীল প্রতিভার সুষ্ঠু সার্বিক বিকাশের উদ্দেশ্যে আমাদের দল সংস্কৃতি, সাহিত্য ও ক্রীড়ার সংগঠিত ও বিস্তৃততর উন্নয়নের প্রচেষ্টা নেবে।’ এ লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য- (ক) দেশের প্রতিটি এলাকায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক সংস্কৃতি ও ক্রীড়া কেন্দ্র পর্যায়ক্রমে ও সুবিন্যস্তভাবে গড়ে তোলা হবে; (খ) সংস্কৃতি, সাহিত্য ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে সব জননির্ভর এবং জীবনমুখী লোক প্রচেষ্টাকে প্রয়োজনীয় ও বাস্তব সহায়তা দেয়া হবে; এবং (গ) দেশের আনাচে-কানাচে সংস্কৃতি, সাহিত্য ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে যেসব প্রতিভাশীল ব্যক্তি ও গোষ্ঠী রয়েছে তাদের চর্চা ও প্রশিক্ষণের সুযোগ দিয়ে তাদের সাধনালব্ধ কৃতিত্বকে জাতীয় সম্মান ও সম্পদে রূপান্তরিত করার সুসংগঠিত চেষ্টা চালানো হবে।
বিশ্বের ইতিহাসে আমরা ব্যতিক্রমী জাতি। ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠাকে কেন্দ্র করে সাংস্কৃতিক আন্দোলনের পথ ধরে একটি রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের জন্ম হয়। নিজেদের সংস্কৃতির মধ্য দিয়ে বাঙালি ঠিক করে নেয় তার সাংস্কৃতিক আত্মপরিচয়। তাই একজন সত্যিকারের দেশপ্রেমিক হিসেবে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এ দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সংরক্ষণের জন্য ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেন। বাংলাদেশের জাতীয় সংস্কৃতির চর্চা এবং এর বিকাশ ও উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি প্রতিষ্ঠার অব্যবহিত পর একই বছরের ২৭ ডিসেম্বর ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংস্থা’ (জাসাস) প্রতিষ্ঠা করেন।
শহীদ জিয়া বিশ্বাস করতেন, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য আমাদের জাতীয় পরিচয়ের ও আত্মোপলব্ধির অনস্বীকার্য উপাদান। তাই বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য যাতে জাতীয় জীবনে পূর্ণ ও ব্যাপক মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত হয় সে জন্য বিএনপি ও তার সরকার নিরলসভাবে চেষ্টা করবে। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের উন্নয়নের জন্য নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার কার্যক্রম সুসংহত ও বলিষ্ঠ করার ব্যাপারে সর্বাত্মক ভূমিকা রাখবে। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যবিষয়ক সর্ববৃহৎ গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি। এ বাংলা একাডেমির উন্নয়নে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে শহীদ জিয়া তার বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের উন্নয়নে তার অঙ্গীকার ও প্রত্যয় বাস্তব রূপ দেন। বাংলা একাডেমির সার্বিক উন্নয়ন ও এর কাঠামোগত বিকাশ সাধনে শহীদ জিয়া ১৯৭৮ সালের ৬ জুন ‘দি বাংলা একাডেমি অর্ডিন্যান্স, ১৯৭৮’ জারি করেন। বাংলা একাডেমির পরিচালনায় এ অধ্যাদেশটি এখনো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
শিশুরা জাতির ভবিষ্যৎ। তাই এ দেশের শিশুদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে তাদের সাংস্কৃতিক-মানসিক ও সৃজনশীল প্রতিভা বিকাশের উদ্দেশ্যে ১৯৭৬ সালে রাষ্ট্রপতির এক অধ্যাদেশ বলে একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে ‘বাংলাদেশ শিশু একাডেমি’ প্রতিষ্ঠা করেন। বাংলাদেশ শিশু একাডেমি বছরব্যাপী যেসব কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ‘জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতা’। জিয়াউর রহমান ১৯৭৮ সালে এ প্রতিযোগিতার দ্বার উদ্ঘাটন করেন।
শহীদ জিয়া কোমলমতি শিশুদের বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে ১৯৭৯ সালে ঢাকার প্রাণকেন্দ্র শাহবাগে একটি শিশুপার্ক প্রতিষ্ঠা করেন। স্বাধীন বাংলাদেশে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানই সর্বপ্রথম শিশু-কিশোরদের প্রতিভা ও মানসিক বিকাশের কথা চিন্তা করেছিলেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনে চালু করেছিলেন ‘নতুন কুঁড়ি’ নামক এক সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতারও। এ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এমন অনেক প্রতিভা বেরিয়ে এসেছেন, যারা আজ বাংলাদেশের সংস্কৃতি অঙ্গনে স্বমহিমায় উজ্জ্বল এবং তারা বাংলাদেশের সংস্কৃতির বিকাশ ও উন্নয়নে অনবদ্য অবদান রেখে চলেছেন।
বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর বাংলাদেশের ঐতিহাসিক, প্রতœতাত্তি¡ক, নৃ-তাত্তি¡ক, শিল্পকলা ও প্রাকৃতিক ইতিহাস সম্পর্কিত নিদর্শনাদি সংগ্রহ, সংরক্ষণ, প্রদর্শন ও গবেষণার উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান। শহীদ জিয়া এ জাদুঘরের উন্নয়নে নানা পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।
বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী রয়েছে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নিজস্ব সংস্কৃতি যেন বিলীয়মান না হয়ে পড়ে জিয়াউর রহমান এ বিষয়ে সচেতন ছিলেন। তাই এ সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও প্রচার-প্রসারের লক্ষ্যে রাঙ্গামাটিতে ‘উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট’ (বর্তমানে এ প্রতিষ্ঠানের নাম ‘ক্ষদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট’) এবং নেত্রকোনার দুর্গাপুরের বিরিশিরিতে ‘উপজাতীয় কালচারাল একাডেমি’ প্রতিষ্ঠা করেন।
শহীদ জিয়া বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের বিকাশের লক্ষ্যে ঢাকার অদূরে গাজীপুরে একটি চলচ্চিত্র নগরী, ফিল্ম ইনস্টিটিউট ও আর্কাইভ প্রতিষ্ঠা, সৃজনশীল ও উন্নতমানের চলচ্চিত্র নির্মাণে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান এবং জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অব্যাহত রাখেন। সংবাদপত্র ও গণমাধ্যমের বিকাশের জন্য ‘প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআইবি)’ প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি শিক্ষা ও সংস্কৃতিসহ জাতীয় জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য ‘একুশে পদক’ ও ‘স্বাধীনতা পদক’ প্রবর্তন করেন। তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের রঙিন ট্রান্সমিশন চালু করেন।
একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে জিয়াউর রহমান শুধু রাজনীতি, প্রশাসন, অর্থনীতি ও পররাষ্ট্রনীতিতে তার কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেননি। স্বাধীন বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক উন্নয়ন ও অগ্রগতিতেও তার বলিষ্ঠ ভূমিকা ও অবদান রেখে গেছেন। একটি আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে সংস্কৃতির গুরুত্ব অপরিসীম। এ সত্য উপলব্ধি করে বাংলাদেশের সংস্কৃতির অগ্রগতির জন্য নানামুখী কর্মতৎপরতা চালান। তাই বর্তমান বাংলাদেশের সংস্কৃতি অঙ্গনের যে দিকেই তাকানো হোক না কেনো, সে দিকেই দেখা যাবে জিয়ার হাতের স্পর্শ, মানসপটে ভেসে উঠবে শহীদ জিয়ার প্রতিকৃতি। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বর্তমানে শহীদ জিয়ার এসব অবদানকে অস্বীকার করার প্রবণতা দেখা যায়। কিন্তু ইতিহাস থেকে কারো অবদান জোর করে মুছে দেয়া যায় না। ইতিহাস চলে তার আপন গতিতে।
লেখক : অধ্যাপক, ইসলামের ইতিহাস ও
সংস্কৃতি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়