বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৯ অপরাহ্ন

পোল্ট্রি ও ডিমে ৫২০ কোটি টাকা লুটে নিয়েছে বড় কোম্পানিগুলো

বাংলাদেশ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২০ আগস্ট, ২০২২
  • ১২৪ বার

বিগত ১৫ দিনে দেশে মুরগির বাচ্চা, ডিম ও গোশতের দাম বাড়িয়ে ভোক্তা ও ক্ষুদ্র খামারিদের কাছ থেকে পোল্ট্রি খাতের বড় কোম্পানিগুলো ৫২০ কোটি টাকা লুটে নিয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন।

শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করে দেশের ক্ষুদ্র খামারিদের সংগঠনের নেতারা।

তারা বলেন, কোম্পানিগুলো গত ১৫ দিনে ডিমের দাম বাড়িয়ে বাড়তি মুনাফা করেছে ১১২ কোটি টাকা। পাশাপাশি মুরগির বাচ্চার দাম বাড়িয়ে লুটে নিয়েছে ২৩৪ কোটি টাকা এবং ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়িয়ে লুটে নিয়েছে ১৭২ কোটি টাকা। আর এই সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত রয়েছে পোল্ট্রি খাতের ১০-১২টি দেশি-বিদেশী কোম্পানি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোঃ সুমন হাওলাদার বলেন, দেশে পোল্ট্রি খাতটি এখন মাফিয়া চক্রের হাতে চলে গেছে। কাজী ফার্মস, প্যারাগন, সিপি, নারিশ, ৭১, আফিল, সাগুনাসহ ১০ থেকে ১২টি বড় কোম্পানি যৌথভাবে এই মাফিয়া চক্র তৈরি করেছে। চক্রটি সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে সারাদেশে প্রান্তিক খামারিদের ধ্বংস করতে চাচ্ছে। ইতোমধ্যে তাদের পরিকল্পিত চক্রান্তে সারাদেশে প্রায় অর্ধেক প্রান্তিক খামার বন্ধ হয়ে গেছে।

সুমন হাওলাদার জানান, বর্তমানে এক বস্তা ফিড প্রান্তিক খামারিকে কিনতে হলে লাগে তিন হাজার তিন শ’ টাকা। কিন্তু কোনো খামারি তাদের সাথে কন্ট্রাক্ট ফার্মিং করলে ওই বস্তা পাওয়া যায় আড়াই হাজার টাকা। অর্থাৎ তারা বস্তা প্রতি ফিডে লাভ করছে আট শ’ টাকা। তারা প্রতিটি ডিমে লাভ করছে তিন টাকা এবং প্রতিটি ব্রয়লারের বাচ্চা বিক্রি করে লাভ করছে ২০ থেকে ২২ টাকা।

তিনি জানান, দেশে প্রতিদিন ডিমের চাহিদা সাড়ে চার কোটি পিস। এর মধ্যে বড় কোম্পানিগুলো এই চাহিদার আড়াই কোটি সরবরাহ করে। প্রতি ডিমে তিন টাকা করে বেশি নিয়ে প্রতিদিন সাত কোটিরও বেশি টাকা তারা অবৈধভাবে লাভ করেছে। এভাবে গত ১৫ দিনে বড় কোম্পানিগুলো ডিমের বাজার থেকে ১১২ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

অন্যদিকে দেশের ব্রয়লার মুরগির সরবরাহ কমিয়ে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে। এভাবে প্রতিদিন ১৯ কোটি ৫০ লাখ কেজি মজুদ সঙ্কট তৈরি করে এবং পরবর্তীতে তা ছেড়ে প্রতি কেজিতে বাড়তি নিয়েছে ১৫ টাকা। এর মাধ্যমে গত ১৫ দিনে তারা ১৭২ কোটি টাকার বেশি ভোক্তার পকেট কেটেছে। এছাড়া প্রতিদিন এক কোটি ৩০ লাখ বাচ্চা মুরগি বিক্রি থেকে গড়ে ১২৯ টাকা বেশি নিয়েছে বড় কোম্পানিগুলো। এর মাধ্যমে গত ১৫ দিনে ২৩৪ কোটি টাকা অবৈধ মুনাফা করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে অবহিত করা হয়, মুরগি ও ডিমের দাম আসলে আড়তে নির্ধারণ হয় না। সারাদেশে আড়তগুলোয় বড় কোম্পানির লোক থাকে। কোম্পানিরা যে দাম নির্ধারণ করতে বলে আড়তগুলোতে সেই দামেই নির্ধারণ হয়ে থাকে।

তিনি বলেন, এই প্রক্রিয়া দেশের ভোক্তাদের জন্য শুভ নয়। এতে প্রান্তিক খামারিরা অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়বে এবং প্রতিটি ডিম ২০ টাকায় খেতে হবে। আর ব্রয়লার মুরগি খেতে হবে চার শ’ টাকা কেজিতে। বড় কোম্পানিগুলো সেই নীল নকশা ধরেই এগুচ্ছে। তাদের এই চক্রান্তে মদদ দিচ্ছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের কর্মকর্তারা।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইলিয়াস খন্দকার, সহ-সভাপতি বাপ্পি কুমার দেব সহ সংগঠনের ঊর্ধ্বতন নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com