বুড়িগঙ্গা দূষণ রোধে আদালতের রায় ও আদেশ বাস্তবায়ন না করা, অসত্য তথ্য দিয়ে আদালতের স্বাভাবিক কাজে বিঘ্ন ঘটানোর কারণে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ’র হাইকোর্ট বেঞ্চ এ সংক্রান্ত রুলের শুনানিকালে এ রুল জারি করেন।
আদালতে ওয়াসার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী উম্মে সালমা। পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আমাতুল করিম। রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরশেদ।
পরে রিটকারী আইনজীবী জানান, ২০১০ সালে বুড়িগঙ্গার পানি দূষণ বন্ধের জন্য একটি রিট পিটিশন করেছিলাম। ২০১১ সালে রায় দিয়ে আদালত বলেছিলো- ছয় মাসের মধ্যে বুড়িগঙ্গার ভেতরে যে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিসচার্জ লাইনগুলো (শিল্প বর্জ্য নিঃস্বরণ লাইন) আছে সেগুলো বন্ধ করে দিতে ওয়াসার এমডির প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়। ২০১৪ সালে পরিবেশ অধিদপ্তর বিদুৎ সংযোগ কেটে দিয়েছিলো। তখন শিল্পমালিক সমিতি আদালতে এসে স্থগিতাদেশ নিয়ে আপিল বিভাগ পর্যন্ত শুনানি হয়েছিলো। ২০১৬ সালে আপিল বিভাগের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পরে পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যক্রম বৈধ হিসেবে বিবেচিত হয়। কিন্তু ৩ বছরেও কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় আমরা ফের আবেদন করি। গত জুলাই মাসে ওয়াসার এমডির বিরুদ্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ এনেছিলাম। তখন আদালত তাদের সময় দিয়েছিলো প্রতিবেদন দেয়ার জন্য। তারা প্রতিবেদন দিলো, ওয়াসার কোনো লাইন বুড়িগঙ্গায় নাই। পরে বিআইডব্লিউটিএ প্রতিবেদন দিয়ে বললো ৬৮টি লাইন আছে। এরমধ্যে ওয়াসার আছে ৫৮টি। এরপর আদালত এক আদেশে অসত্য তথ্য দেয়ার জন্য তার বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না এবং আদালতের নির্দেশ পালনে অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে বলেন। এরপর ২/৩ বার তারা প্রতিবেদন দিয়েছেন। কিন্তু কোনো প্রতিবেদনে আদালতের নির্দেশ পালনের পদক্ষেপ তারা দেখাতে পারেনি। সিদ্ধেশ্বরী, মোহাম্মদপুর ও কলাবাগানে ওয়াসার নিয়মিত কাজের ছবি দেখিয়েছেন তারা। এসব কারণে আমাদের আবেদন মঞ্জুর করে ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।