সৃষ্টির সেরা জীব তথা আশরাফুল মাখলুকাত। পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতেই ইসলামের আবির্ভাব। অশান্তি, অন্যায়, অত্যাচার, দ্বিধা-দ্বন্দ্ব, জুলুম, নির্যাতন ইসলাম কখনো সমর্থন করে না। ইসলাম অন্যায়, অবিচারকে কখনো আশ্রয় দেয় না বা সহ্য করে না। বিনা কারণে কাউকে কষ্ট দেয়া ইসলামে গর্হিত কাজ।
মানুষকে কষ্ট দানকারী বা উৎপীড়নকারীকে আল্লাহ তায়ালা পছন্দ করেন না। মানুষকে কষ্ট দেয়া পবিত্র কুরআনে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সূরা আহজাবের ৫৮ নম্বর আয়াতে ইরশাদ করেন- ‘যেসব লোক অপরাধ না করা সত্ত্বেও কোনো মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীকে কষ্ট দেয় তারা মিথ্যা অপবাদ ও প্রকাশ্য গুনাহের বোঝা নিজেদের মাথায় তুলে নেয়।’ রাসূলে আকরাম সা: বিভিন্ন সময় প্রকৃত মুসলমানের পরিচয় বিভিন্নভাবে ব্যক্ত করেছেন। তার সারাংশ এই- কোনো ব্যক্তিকে প্রকৃত মুসলমান হতে হলে আল্লাহর ওপর বিশ্বাসের পাশাপাশি উত্তম কাজে অংশগ্রহণ, উত্তম আদর্শে পরিচালন ও নিজের জিহ্বাকে সংযত রাখতে হবে। মানুষকে কোনোভাবেই কষ্ট দেয়া ইসলাম সমর্থন করে না। রাসূল সা: বলেছেন, ‘সেই প্রকৃত মুসলমান যার মুখ ও হাতের অনিষ্টতা থেকে অপর মুসলমান নিরাপদ থাকে। আর যে আল্লাহর নিষিদ্ধ কাজগুলো পরিত্যাগ করেছে সেই প্রকৃত মুহাজির’ (বুখারি, মুসলিম)।
আল্লাহ তায়ালা সুন্দর, তিনি সৌন্দর্যকে ভালোবাসেন। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের হাজারো সৃষ্টির মধ্যে শ্রেষ্ঠ জীব মানুষও সুন্দরের পূজারী। মানুষ স্বভাবতই সুন্দর। তাই ইসলাম মানুষের চাহিদা ও ইচ্ছার প্রতি সম্মান জানিয়ে ঘোষণা করেছে, তুমি অপরের কাছ থেকে যেমন ভালো ব্যবহার আশা করো তুমিও তার সাথে ভালো ব্যবহার করো। এ প্রসঙ্গে রাসূল সা: ইরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যে এমন পছন্দ করে যে, তাকে জাহান্নাম থেকে দূরে রাখা হোক এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হোক তবে তার মৃত্যু যেন এমন অবস্থায় হয় যে, সে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান রাখে এবং অন্যের প্রতি এমন ব্যবহার করে যা সে নিজের জন্য পছন্দ করে’ (সহিহ মুসলিম-১৮৪৪)।
লেখক : শিক্ষার্থী, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, ঢাকা কলেজ