সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৮ অপরাহ্ন

আত্মবিশ্বাসী আওয়ামী লীগ, চলছে চূড়ান্ত কৌশল নির্ধারণ

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০২০
  • ২৫১ বার

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন আগামী ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন সামনে রেখে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সরকারের টানা ১১ বছরের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড ভোটারদের মাঝে ইতিবাচক সাড়া ফেলবে বলে মনে করছে দলটি। এ জন্য দুই সিটি নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ক্ষমতাসীনরা। গতবারেও তারা দুই সিটিতে জয়লাভ করেছিল। দলটির নেতারা মনে করছেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচন যদিও স্থানীয় সরকার সংশ্লিষ্ট; তার পরও এখানে সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড ভোটারদের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। আর নির্বাচন হচ্ছে খোদ রাজধানীর দুই সিটির। বর্তমানে রাজধানীতে মেট্রোরেলের কাজ চলছে। তা ছাড়া ঢাকাকে নিয়ে সরকারের রয়েছে মহাপরিকল্পনা। এই উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখতে হলে নৌকার কোনো বিকল্প নেই।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের অন্যতম সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক নয়া দিগন্তকে বলেন, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আমরা জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি ধরে রাখতে নৌকার বিকল্প দেখছি না। তিনি বলেন, আমরা জানতে পেরেছি বিএনপি ঢাকার বাইরে থেকে অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী ভাড়া করে ঢাকায় এনেছে। তারা নির্বাচনে ভরাডুবি জেনে নির্বাচন বানচাল করার ষড়যন্ত্র করছে। তাদের এই ষড়যন্ত্র আমরা সফল হতে দেবো না। নেতাকর্মীরা মাঠে রয়েছে, তাদেরকে সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যেকোনো ষড়যন্ত্র জনগণকে সাথে নিয়ে আমরা মোকাবেলা করব। জানা গেছে, নির্বাচনের সুফল ঘরে তোলার জন্য ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগসহ আওয়ামী লীগের সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সমন্বয়ে ইতোমধ্যে কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি গঠন করেছে দলটি। এই কমিটি নির্বাচন দিনের আগের রাত থেকে উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রত্যেক কেন্দ্র পাহারায় থাকবে। আগের রাতেই ভোটারদের কাছে পৌঁছে দেয়া হবে স্লিপ। ইতোমধ্যে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছে ক্ষমতাসীনরা। পাড়া-মহল্লায় মিছিল-মিটিং, উঠোন বৈঠকসহ সব নির্বাচনী কার্যক্রম ইতোমধ্যে সম্পন্ন করেছে।

আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, যাতে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র সফল হতে না পারে সে জন্য কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি গঠন করা হয়েছে। ভোট গণনা পর্যন্ত ওই কমিটি মাঠে থাকবে।
আওয়ামী লীগ নেতাদের মতে, ঢাকা উত্তর সিটিতে তাদের মনোনীত প্রার্থী হলেন আতিকুল ইসলাম- যিনি গত ৯ মাস ওই সিটিতে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এতে তার অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে। এই সিটিতে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। তিনি গতবার নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন। বড় পরিসরে দায়িত্ব পালনের তেমন অভিজ্ঞতা আছে বলে মনে হয় না। ভোটাররা এ বিষয়টি আমলে নেবেন বলে বিশ্বাস করি। আর দক্ষিণ সিটিতে তাদের মনোনীত প্রার্থী যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মনির ছোট ছেলে শেখ ফজলে নূর তাপস। যিনি ঢাকা-১০ আসনে টানা তিনবারের এমপি ছিলেন। অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করার অভিজ্ঞতাও রয়েছে। সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠতা থাকায় তিনি মেয়র নির্বাচিত হলে দক্ষিণ সিটির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবেন। এখানে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হলেন প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন। যদিও অতীতে ইশরাকের বাবা সাদেক হোসেন খোকা অবিভক্ত ঢাকা সিটির মেয়র ছিলেন। তবে ইশরাক মেয়র প্রার্থী হিসেবে একেবারে নতুন। তিনি নির্বাচিত হলে ঢাকার উন্নয়ন থেমে যাবে। এই বিষয়টাও ভোটাররা গুরুত্বের সাথে আমলে নেবেন। ফলে দুই সিটিতে তাদের প্রার্থীদের বিজয় শতভাগ নিশ্চিত ধরে নিয়েই আগামী ১ ফেব্রুয়ারির ভোটের পরিকল্পনা সাজিয়েছে দলটি।

নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন নয়া দিগন্তকে বলেন, দক্ষিণের প্রতিটি ওয়ার্ডের তৃণমূল পর্যায়ে প্রতিদিন আমরা মিছিল মিটিং, উঠোন বৈঠকসহ ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছি। কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি গঠন করে আমরা কাজ করছি। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চাচ্ছি। প্রচারণায় ভোটারদের যেভাবে সাড়া পাচ্ছি, তাতে বিপুল ভোটের মাধ্যমে আমাদের নৌকার প্রার্থী বিজয়ী হবে। এ প্রসঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ নয়া দিগন্তকে বলেন, উত্তর সিটির সমন্বয়ক হিসেবে আমি কাজ করছি এবং দক্ষিণ সিটির সমন্বয়ক হিসেবে রয়েছেন সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু। আমরা টিম ভিত্তিক আমাদের প্রার্থীদের পক্ষে প্রতিদিনই প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছি, গণসংযোগ, পথসভাসহ নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করছি। তিনি বলেন, আমাদের নির্বাচনী কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি জনগণের ভোটে আমাদের প্রার্থীদের বিজয় সুনিশ্চিত করেই আমরা ঘরে ফিরব।

নির্বাচনী প্রস্তুতি প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ মো: বজলুর রহমান নয়া দিগন্তকে বলেন, ইতোমধ্যে আমরা প্রচার-প্রচারণার কাজ শেষ করেছি। নির্বাচনের দিন যাতে মানুষ নির্বিঘেœ ভোট দিতে পারে সে জন্য আমাদের নেতাকর্মীরা মাঠে রয়েছে। উত্তর সিটিতে প্রতিটি কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটি ভোটারদের স্লিপ দেয়া থেকে শুরু করে নির্বাচনী সব দায়িত্ব পালন করবে। প্রত্যেকের দায়িত্ব ভাগ করে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, নির্বাচনী প্রচারণায় ভোটারদের যে বিপুল সাড়া পেয়েছি, তাতে আমাদের প্রার্থীর বিজয় সুনিশ্চিত- ইনশা আল্লাহ।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com