শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:১১ অপরাহ্ন

আবারো সুপার ওভারে কপাল পুড়লো নিউজিল্যান্ডের

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী, ২০২০
  • ২৬১ বার

আবারো সুপার ওভারে ম্যাচ হারলো নিউজিল্যান্ড। গত ম্যাচের পর এবার হ্যামিল্টনে সিরিজের চতুর্থ টি-২০ ম্যাচে ভারতের কাছে সুপার ওভারে হারতে হলো কিউইদের। নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে আটটি (১টি ওয়ানডে ও সাতটি টি-২০) সুপার ওভারে সাতটিতেই হারলো নিউজিল্যান্ড। এরমধ্যে টানা ছয়টি ম্যাচে হারের স্বাদ পেল কিউইরা।

গেল ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে ইংল্যান্ডের সাথে ৫০ ওভার ও সুপার ওভারে টাই করেও বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারির হিসেবে পিছিয়ে থেকে শিরোপা হাতছাড়া করেছিলো নিউজিল্যান্ড। সুপার ওভারের দুভার্গ্য যেন পিছু ছাড়ছে না নিউজিল্যান্ডের। আজ সিরিজের চতুর্থ টি-২০ ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৬৫ রান করে ভারত। জবাবে নিউজিল্যান্ড নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৬৫ রান করলে ম্যাচটি টাই হয়। ফলে সুপার গড়ায় চতুর্থ টি-২০। সেখানে প্রথমে ব্যাট করে ১ উইকেটে ১৩ রান করে নিউজিল্যান্ড। জবাবে ১ বল বাকী রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় ভারত। এই জয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ৪-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ভারত।

প্রথম তিন ম্যাচ হেরে সিরিজ হাতছাড়া করে প্রথম জয়ের সন্ধ্যানে চতুর্থ টি-২০ খেলতে নামে নিউজিল্যান্ড। কাঁধের ইনজুরির কারনে এ ম্যাচে একাদশে ছিলেন না নিয়মিত অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। তাই দলের নেতৃত্বে ডান-হাতি পেসার টিম সাউদি। টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্বান্ত নেন সাউদি। তিনটি পরিবর্তন নিয়ে খেলতে নামে ভারত। আগের ম্যাচের হিরো ওপেনার রোহিতের পরিবর্তে লোকেশ রাহুলের সাথে ইনিংস শুরু করেন সঞ্জু স্যামসন। দ্বিতীয় ওভারে বিদায় নেন তিনি। ১টি ছক্কায় ৫ বলে ৮ রান করেন স্যামসন।

এরপর বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ হন অধিনায়ক বিরাট কোহলি ও শ্রেয়াস আইয়ারও। কোহলি ১১ ও আইয়ার ১ রান করেন। তবে এক প্রান্ত আগলে দলের রানের চাকা সচল রেখেছিলেন ইনফর্ম রাহুল। তবে এবার আর হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পাননি তিনি। ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ২৬ বলে ৩৯ রান করে আউট হন সিরিজে দু’টি হাফ-সেঞ্চুরি করা রাহুল।

রাহুলের বিদায়ের পর শিবম দুবে ১২ ও ওয়াশিংটন সুন্দর শুন্য রানে ফিরলে দলীয় ৮৮ রানের মধ্যে ৬ উইকেট হারিয়ে বড় ধরনের চাপে পড়ে ভারত। এতে ভারতের বড় স্কোরের সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়। কিন্তু সপ্তম উইকেটে মাত্র ৩০ বলে ৪৩ রান করে ভারতকে লড়াইয়ে ফেরান মনিষ পান্ডিয়া ও শারদুল ঠাকুর।

ঠাকুর ১৫ বলে ২০ রানে থামলেও টি-২০ ক্যারিয়ারে তৃতীয় হাফ-সেঞ্চুরি তুলে ভারতকে লড়াকু সংগ্রহ এনে দেন পান্ডিয়া। ৩৬ বলে ৩টি চারে অপরাজিত ৫০ রান করেন পান্ডিয়া। শেষদিকে, নবদ্বীপ সাইনি ৯ বলে অপরাজিত ১১ রান করেন। এতে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৬৫ রানের সংগ্রহ পায় ভারত। নিউজিল্যান্ডের স্পিনার ইশ সোধি ২৬ রানে ৩ উইকেট নেন।

জবাবে শুরুটা ভালো হয়নি নিউজিল্যান্ডের। ভারতের টাইট বোলিং-এ প্রথম ৫ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে মাত্র ২৩ রান তুলতে পারে কিউইরা। ৪ রান করে ভারতের পেসার জসপ্রিত বুমরাহর বলে প্যাভিলিয়নে ফিরেন ওপেনার মার্টিন গাপটিল। শুরুটা নড়বড়ে হলেও দ্বিতীয় উইকেটে ভারতীয় বোলারদের উপর চড়াও হন আরেক ওপেনার কলিন মুনরো ও উইকেটরক্ষক টিম সেইফার্ট। ভারতের পেসার ঠাকুরের ষষ্ঠ ওভারে ১৬ রান তুলে পাওয়ার প্লে শেষ করেন মুনরো। তখন নিউজিল্যান্ডের স্কোর ছিলো ১ উইকেটে ৩৯ রান।

পরের ওভারগুলোতে রানের চাকা দ্রুত ঘুড়িয়ে দলের স্কোরকে শতরানের কাছাকাছি নিয়ে যান মুনরো ও সেইফার্ট। এরমধ্যে টি-২০ ক্যারিয়ারের ১১তম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান মুনরো। রান আউট হয়ে ব্যক্তিগত ৬৪ রানে থামেন মুনরো। এই জুটিতে ৪৪ বলে ৭৪ রান যোগ হয়। মুনরোর ইনিংসে ৬টি চার ও ৩টি ছক্কা ছিলো।

চার নম্বরে নামা টম ব্রুসকে শুন্য রানে বোল্ড করে ভারতকে খেলায় ফেরান স্পিনার যুজবেন্দ্রা চাহাল। দলীয় ৯৬ ও ৯৭ রানে দুই উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরেন সেইফার্ট ও রস টেইলর। চতুর্থ উইকেটে ৪১ বলে ৬২ রানের জুটি গড়ে নিউজিল্যান্ডের জয়ের পথ সহজ করে ফেলেন তারা। ১৯ ওভার পর্যন্ত খেলে দলের স্কোর ৩ উইকেটে ১৫৯ রানে নিয়ে যান সেইফার্ট ও টেইলর। এমন অবস্থায় শেষ ওভারে জয়ের জন্য ৭ রান দরকার পড়ে কিউইদের। আগের টি-২০তে ৯ রানের লক্ষ্যে ম্যাচ টাই করেছিলো নিউজিল্যান্ড।

আগের ম্যাচে ভারতের পক্ষে শেষ ওভার করেছিলেন মোহাম্মদ সামি। এ ম্যাচে বিশ্রামে ছিলেন তিনি। তাই বল হাতে আক্রমনে আসেন ঠাকুর। প্রথম বলেই টেইলরকে বিদায় করেন ঠাকুর। পরের বলে বাউন্ডারি মারেন ড্যারেল মিচেল। তৃতীয় বলে রান আউট হন সেইফার্ট। চতুর্থ ডেলিভারিতে ১ রান নেন মিচেল স্যান্টনার। ফলে শেষ দুই বলে জিততে ২ রান দরকার পড়ে নিউজিল্যান্ডের। পঞ্চম বলে আউট হন মিচেল। আর ষষ্ঠ বলে ২ রান নিতে গিয়ে রান আউট হন স্যান্টনার। ফলে ১ রান পেয়ে ম্যাচ টাই করে নিউজিল্যান্ড। শেষ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ৬ রান তুলে স্বাগতিকরা। ফলে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৬৫ রান করে কিউইরা। ৩৯ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৫৭ রান করেন সেইফার্ট। ঠাকুর ৩৩ রানে ২ উইকেট নেন।

সুপার ওভারে প্রথমে ব্যাট করে ১ উইকেট হারিয়ে ১৩ রান করে নিউজিল্যান্ড। বোলার ছিলেন ভারতের বুমরাহ। ১টি করে চার মারেন সেইফার্ট ও মুনরো। গত ম্যাচে সুপার ওভারে ১৭ রান করেছিলো কিউইরা।

আগের ম্যাচে সাউদির শেষ দুই বলে ১০ রানের লক্ষ্যমাত্রায় দু’টি ছক্কা মেরে ভারতের জয় নিশ্চিত করেছিলেন রোহিত। এবার ভারতকে জয়ের স্বাদ দেন রাহুল ও অধিনায়ক কোহলি। এবারও বল হাতে আক্রমনে ছিলেন সাউদি। প্রথম বলে ছক্কা ও দ্বিতীয় বলে চার মেরে দলের জয়ের পথ সহজ করেন রাহুল। তৃতীয় বলে আউট হন তিনি। চতুর্থ বলে ২ রান নেন কোহলি। তাই শেষ দুই বলে জিততে ২ রান লাগে ভারতের। পঞ্চম বলে বাউন্ডারি মেরে সিরিজে টানা দ্বিতীয় সুপার ওভারে ভারতকে জয়ের স্বাদ দেন কোহলি। ম্যাচের সেরা হয়েছেন ভারতের ঠাকুর।

আগামী ২ ফেব্রুয়ারি মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের পঞ্চম ও শেষ টি-২০। সূত্র : বাসস।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com