ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের শুরু থেকেই ইভিএমের বিরোধিতা করে আসছে বিএনপি। এই যন্ত্রের অসৎ উদ্দেশ্য আজকের ভোটের মধ্য দিয়ে আবার প্রমাণিত হয়েছে বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
শনিবার বিকালে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকারে তিনি এই মন্তব্য করেন। এর আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার সাথে দেখা করে বিভিন্ন অভিযোগ দেয় বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল।
ইভিএম প্রসঙ্গে আমীর খসরু বলেন, ‘আপনারা জানেন আমরা ইভিএম নিয়ে অনেক কথা বলেছি। ইভিএম নিয়ে বিতর্ক এমন জায়গায় এসেছে যে, জনগণ ভোটও দিতে যাচ্ছে না। সত্যি কথা বলতে কী, ইভিএম মানুষের মনে এমন একটা প্রশ্ন রেখেছে যে মানুষ আজকে ভোট দিতেও যাচ্ছে না। কারণ পুরো নির্বাচনব্যবস্থার ওপর অনাস্থা সৃষ্টি করার জন্য ইভিএমের অনেক বড় ভূমিকা। সেটা আজ প্রমাণিতও হয়েছে।’
‘এক শতাংশ ভোট প্রিজাইডিং অফিসার অথবা সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার অভার রাইট করতে পারেন, যদি আঙুলের ছাপ না মিলে তাহলে তাকে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে ওভাররাইট করার। আমরা পরবর্তী সময়ে দেখলাম তা তুলে দেয়া হয়েছে।
ইভিএম যে কী অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়েছে তা আজকেও প্রমাণিত হয়েছে। চট্টগ্রামে যে উপনির্বাচন হয়েছে সেখানেও প্রমাণিত হয়েছে। চট্টগ্রামটা ছিল পাইল প্রজেক্ট আর আজকে এটাকে পুরোপুরি ফাইনাল করা হয়েছে।’
বিএনপি নেতা অভিযোগ করেন, ‘ধর্ষণের নামে এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। মানে ধর্ষণ করবে এই ভয় দেখিয়ে ১২ জন নারী এজেন্টকে বের করে দিয়েছে। পারতপক্ষে এজেন্টতো ঢুকতেই পারেনি। যারা ঢুকেছে তাদের মারধর করে বের করে দিয়েছে।’
‘আর সাংবাদিকরা যারা গিয়েছেন আপনারা দেখেছেন তাদেরকে কীভাবে অসম্মান করা হয়েছে। কীভাবে তাদেরকে অপদস্থ করা হয়েছে, ছবি তুলতে গিয়ে সাংবাদিকের মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। মারধর করেছে। এমনকি অনেক জায়গায় সাংবাদিকদের একসেস পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।’
খসরু বলেন, ‘কয়দিন ধরে শুনে আসছি, যারা ঢাকার যারা ভোটার নন, তারা ঢাকায় থাকতে পারবেন না। কিন্তু এসেছেন তাদের বলা হয়েছে বের হওয়ার জন্য যদি বের না হন তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু আমরা দেখেছি, প্রতিটি কেন্দ্রের সামনে শত শত বহিরাগত রয়েছে। আপনাও দেখেছেন। সারাদেশ থেকে সন্ত্রাসী নিয়ে ঢাকা ভর্তি করা হয়েছে। বহিরাগতরা আওয়ামী লীগের ব্যাজ ব্যবহার করে দাঁড়িয়ে আছে।’
বিএনপি ভোট প্রত্যাখ্যান করবে কি না জানতে চাইলে খসরু বলেন, ‘ভোট নিয়ে আওয়ামী লীগ কী বলছে দেশের মানুষ সেটা বিশ্বাস করছে কি না সেটা আজ প্রশ্ন। আওয়ামী লীগ কী বলছে তা নিয়ে জনগণের মাথাব্যথা নেই।’
‘ভোট বিএনপি মেনে নেবে কি না সেটা বড় কথা নয়, দেশের মানুষ মেনে নেবে কি না সেটাই বড় কথা। মানুষ তাদের অধিকার ফিরে পাবে কি না সেটাই আজ প্রশ্ন।’
আমীর খসরুর সঙ্গে প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল মাহমুদ টুকু, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন।