শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০৩ অপরাহ্ন

ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন আজ

বাংলাদেশ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
  • ২১২ বার

আজ পয়লা ফাল্গুন। ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন। সে সাথে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। আবহমান বাংলার নৈসর্গিক প্রকৃতিতে আজ সাজ সাজ রব। হিমেল পরশে বিবর্ণ ধরায় জাগছে নবীন জীবনের প্রাণের উল্লাস। নীল আকাশে সোনা ঝরা আলোকের মতোই আজ হৃদয় আপ্লুত প্রাণভরা ভালোবাসায়।

ফুল ফুটুক না ফুটুক, আজ বসন্ত। ফাল্গুনের হাওয়ায় দোল লেগেছে প্রকৃতিতে। নতুনরূপে সেজেছে ঋতুরাজ। দখিনা হাওয়া, মৌমাছিদের গুঞ্জরণ, কচি-কিশলয় আর কোকিলের কুহুতানে জেগে ওঠার দিন আজ।
বসন্তের বন্দনা আছে কবিতা, গান, নৃত্য আর চিত্রকলায়। সাহিত্যের প্রাচীন নিদর্শনেও বসন্ত ঠাঁই করে নিয়েছে তার আপন মহিমায়। বাংলা পঞ্জিকা বর্ষের শেষ ঋতু বসন্তের প্রথম দিনকে বাঙালি পালন করে ‘পহেলা ফাল্গুন-বসন্ত উৎসব’ হিসেবে।
এ দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় আজ বসবে বসন্ত উৎসব। ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবর মঞ্চ, লক্ষ্মীবাজারের বাহাদুর শাহ পার্কসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে আজ নানান অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বসন্তকে বরণ করবে রাজধানীর মানুষ। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে বরেণ্য শিল্পীদের অংশ গ্রহণে সঙ্গীত, কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠ, আবৃত্তি, নৃত্য, বসন্তের পোশাক প্রদর্শনী ও কোরিওগ্রাফির নান্দনিক আয়োজন থাকছে একাডেমির নন্দন মঞ্চে।

অন্য দিকে আজ ভালোবাসার দিন। বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। ভালোবাসার উৎসবে মুখর হবে ধনী-গরিব, যুবা-বৃদ্ধা, তরুণ-তরুণী সবাই। বিশ্ব ভালোবাসার উৎসবের ছোঁয়া শহরের গণ্ডি পেরিয়ে ছড়িয়ে পড়বে সারা গ্রাম-বাংলায়। মুঠোফোনের খুদেবার্তা, অনলাইনের ই-মেইল আর ফেসবুক চ্যাটিংয়ে প্রেমকথার কিশলয়। তীব্র সৌরভ ছড়িয়ে ফুটবে ফুল সৌন্দর্যবিভায়। ভালোবাসার জয়গানে সুর মেলাবে স্বামী-স্ত্রী, মা-বাবা, ভাইবোন সবাই। বন্ধু-বান্ধব, সহপাঠী, এমনকি সহকর্মীর মাঝেও দিনভর হবে ভালোবাসার ভাব বিনিময়।
বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর বিভিন্ন উদ্যান, বাংলা একাডেমির বইমেলা, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস জুড়ে আজ উৎসবে মেতে উঠবে মানুষ।

ভালোবাসা দিবস উদযাপনের ইতিহাস বেশ পুরনো। এ নিয়ে একাধিক কাহিনী প্রচলিত রয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি যে গল্পটি প্রচলিত সেটি হচ্ছে সেন্ট ভ্যালেন্টাইন নামে একজন রোমান ক্যাথলিক ধর্মযাজকের ২৬৯ খ্রিষ্টাব্দের একটি ঘটনা নিয়ে। সেন্ট ভ্যালেন্টাইন নামে ওই ধর্মযাজক একই সাথে চিকিৎসক ছিলেন। তখন রোমান সম্রাট ছিলেন দ্বিতীয় ক্লডিয়াস।
বিশ্বজয়ী রোমানরা একের পর এক রাষ্ট্র জয় করে চলেছে। যুদ্ধের জন্য রাষ্ট্রে বিশাল সৈন্যবাহিনী গড়ে তোলা দরকার। কিন্তু লোকজন বিশেষ করে তরুণরা এতে উৎসাহী নয়। সম্রাটের ধারণা হলো, পুরুষরা বিয়ে করতে না পারলে যুদ্ধে যেতে রাজি হবে। তিনি তরুণদের জন্য বিয়ে নিষিদ্ধ করলেন। কিন্তু প্রেমপিয়াসী তারুণ্যকে কি নিয়মের বেড়াজালে আবদ্ধ করা যায়! এগিয়ে এলেন সেন্ট ভ্যালেন্টাইন।
ভ্যালেন্টাইন প্রেমাসক্ত তরুণ-তরুণীদের বিয়ের ব্যবস্থা করলেন। কিন্তু একদিন ধরা পড়ে গেলেন ভ্যালেন্টাইন। তাকে জেলে পোরা হলো। দেশজুড়ে এই খবর ছড়িয়ে পড়লে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে প্রতিক্রিয়া দেখা দিলো। অনেকেই ভ্যালেন্টাইনকে জেলখানায় দেখতে যান। ফুলেল শুভেচ্ছা জানাতে আসেন। কারাগারের জেলারের একজন অন্ধ মেয়েও ভ্যালেন্টাইনকে দেখতে যেত। চিকিৎসক ভ্যালেন্টাইন মেয়েটির অন্ধত্ব দূর করলেন। তাদের মধ্যেও সৃষ্টি হলো হৃদয়ের বন্ধন। ধর্মযাজক হয়েও নিয়ম ভেঙে তিনি প্রেম করেন। আইন ভেঙে তিনিও বিয়ে করেন। খবর যায় সম্রাটের কানে। তিনি ভ্যালেন্টাইনের মৃত্যুদণ্ড দেন। সে তারিখটি ছিল ২৬৯ খ্রিষ্টাব্দের আজকের এই ১৪ ফেব্রুয়ারি।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com