পাকিস্তান সৃষ্টির পর ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন পূর্ব পাকিস্তানে প্রথম বিরোধী দল ‘আওয়ামী মুসলিম লীগ’ সৃষ্টির মাধ্যমে দলের সভাপতি মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী এবং সাধারণ সম্পাদক জনাব সামছুল হক সাহেবের মাধ্যমে দেশের সর্বত্র স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে সোচ্চার হন তখন থেকেই।
আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠনের পর্যায়ে শেখ মুজিবুর রহমান তখন কারাবন্দী ছিলেন। কিন্তু তা সত্তে¡ও যিনি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দলে মনোনীত হন। আরো যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন খন্দকার মোশতাক আহমেদ, এ কে রফিকুল হোসেন প্রমুখ। আতাউর রহমান ছিলেন দলের সহসভাপতি। নতুন এই বিরোধী দল গঠনের সার্বিক দায়িত্ব পালন করেন দলের সাধারণ সম্পাদক সামছুল হক সাহেব। দলের ম্যানিফেস্টু একক ভাবে তার হাত ধরেই রচিত হয়।
নবগঠিত আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে শেখ মুজিবুর রহমানের কোনো প্রকার সম্মতি বা অবদান সম্পর্কে ইতিহাস থেকে কোনো কিছুই জানা যায়নি। মুসলিম লীগ নামটি এসেছিল নবাব স্যার সলিমুল্লাহর নিখিল ভারত মুসলিম লীগ হতে। ‘মুসলিম লীগ’ নামটি অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল বিধায় জনাব মওলানা আব্দুল হামিদ খান ও সামছুল হক সাহেব মুসলিম লীগ নামটির পূর্বে আওয়ামী শব্দটি সংযোজন করেছিলেন মাত্র। ‘মুসলিম লীগ’ কথাটি উপেক্ষা করার কোনো অভিপ্রায়ই তাদের ছিল না। স্বাধীন বাংলাদেশে এই দুই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব উপেক্ষিত। যা ঐতিহাসিক ভাবে এক বেদনাদায়ক ঘটনা।
পরবর্তীতে জনাব সামছুল হক সাহেব ভাষা আন্দোলনের পর গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘদিন কারাভোগ করে ভগ্নস্বাস্থ্য নিয়ে নিজ বাড়ি ফিরে এসে দেখতে পান তার স্ত্রী তাকে তালাক দিয়ে চলে গেছেন। সে দিনই প্রায় উন্মাদ অবস্থায় নিজ বাড়ি হতে বের হয়ে চিরদিনের জন্য নিরুদ্দেশ হয়ে যান। এভাবে এক ক্ষণজন্মা বিরোধী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের জীবনের যবনিকাপাত ঘটে।
সামছুল হক সাহেবের অবর্তমানে শেখ মুজিবুর রহমান দলের সাধারণ সম্পাদক এবং তারই উদ্যোগে দলের নামের ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ নামকরণ হয়। পরবর্তীতে ঐতিহাসিক ৬ দফা, ’৬৯ এর গণ-অভ্যুত্থান, শেখ মুজিবুর রহমান বঙ্গবন্ধু উপাধি ’৭০-এ জাতীয় নির্বাচনে পার্লামেন্ট সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পাওয়ার পর প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া সংসদ বসার ব্যবস্থা করে ক্ষমতা হস্তান্তর না করার দরুন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ ব্যালটের মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করার বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে লড়াই সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার দুর্বার আন্দোলনের পর্যায়ে ৩ মার্চের ’৭১ সংসদ বসার দিনক্ষণ ধার্য, অতঃপর ১ মার্চের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার বেতার ভাষণে ৩ মার্চ সংসদ বসার বন্ধ ঘোষণা প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ।
৬ দফা নিয়ে রাউন্ডটেবিল কনফারেন্স ব্যর্থ হওয়ার পর পাক হানাদার বাহিনী রাজধানী ঢাকাতে হত্যাযজ্ঞ আরম্ভ করে ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে। ২৬ মার্চ গভীর রাতে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে মেজর জিয়াউর রহমানের মাধ্যমে স্বাধীনতার ডাক আসলে মুক্তিযুদ্ধের সূচনা হয়। মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা ছিল ব্যালট মর্যাদার গণতন্ত্রের লড়াই। ৩ মার্চ সংসদ অধিবেশন বসলে শেখ মুজিবুর রহমানের আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করতেন। তখন তো মুক্তিযুদ্ধের কোনো প্রয়োজনই হতো না। ৩০ লাখ লোক শহীদ, ২ লাখ মা বোনের ইজ্জত রক্ষা পেয়ে যেত। অবস্থাদৃষ্টে ব্যালটের মর্যাদা রক্ষার জন্যই বুলেটের সম্মুখীন হতে বীর বাঙালিরা পিছ পা হয়নি। গণতন্ত্রই ছিল মুক্তিযুদ্ধের চালিকাশক্তি।
শেখ মুজিবুর রহমান গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ভাবশিষ্য ছিলেন। শহীদ সোহরাওয়ার্দী শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে লিখেছিলেন, ” He is my star organizer”, অবস্থাদৃষ্টে শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনীতির দর্শন ছিল গণতন্ত্র। সোহরাওয়ার্দী ও শেখ মুজিবুর রহমান কেউই পাকিস্তান ভাঙার পক্ষে ছিলেন না। ১৯৫৫-৫৬ সালে শেখ মুজিব পাকিস্তান গণপরিষদে দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে ঘোষণা করেন, “People can respect the constitution when they can get justice. If the people do not get justice they revolt against the Government.
১০ জানুয়ারি ’৭২ বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে এসে মুজিবনগর সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক রাষ্ট্রপতি দায়িত্ব নিবেন না, প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিবেন বলে প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদকে জানিয়ে দেন। তার ২ দিন পর তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে নেন। জাতির দুর্ভাগ্য তার দলের অঙ্গসংগঠন ছাত্রলীগের বলিষ্ঠ কিছু নেতৃবৃন্দ বঙ্গবন্ধুর সিদ্ধান্ত মেনে নেয়নি। ২২ দিন পর রাজনীতির রহস্যপুরুষ ছাত্র নেতা সিরাজুল আলম খানের নেতৃত্বে আ স ম রব গংরা বঙ্গবন্ধুকে সংসদ বিলুপ্ত করে সর্বদলীয় জাতীয় সরকার গঠনের পরামর্শ দিলে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু তা প্রত্যাখ্যান করেন। তারই ধারাবাহিকতায় ছাত্রলীগ বিভক্তি এবং নব্য রাজনৈতিক দল ‘জাসদ’ প্রতিষ্ঠিত হয়। সংসদীয় গণতন্ত্রের আদলে বঙ্গবন্ধুর হাতে অপরিসীম ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও কমিউনিস্ট পার্টির মনি সিংহ, ন্যাপের মুজাফ্ফর গংয়ের পরামর্শে ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারিতে ৪র্থ সংশোধনীর মাধ্যমে এক দলীয় ‘বাকশাল’ শাসন কায়েম করে তিনি প্রেসিডেন্টের দায়িত্বভার হাতে নেন।
একদলীয় বাকশাল শাসনব্যবস্থার মধ্যে কোনো প্রকার গণতন্ত্রের অবস্থান থাকে না। বাকশাল গঠন বঙ্গবন্ধুর আজীবনের রাজনীতির দর্শন গণতন্ত্রের বিপরীতে অবস্থান গ্রহণ করা ছিল নেহাতই বড় ভুল সিদ্ধান্ত। বঙ্গবন্ধুর আজীবন লালিত আদর্শের বিরোধী অবস্থান।
অবস্থাদৃষ্টে ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট এক মর্মান্তিক বিয়োগান্তক ঘটনা। প্রধানমন্ত্রী নন প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হন এবং ‘বাকশাল’ শাসনের চির বিলুপ্তি ঘটে। বাকশালের বিলুপ্তির দরুনই আওয়ামী লীগে ফিরে আসেন। বাকশালের বিপরীতে অবস্থানই জিয়াউর রহমানের ক্ষমতাসীন হওয়া, দল গঠন, ক্ষমতাসীন থাকা এবং পরবর্তীতে জেনারেল এরশাদের দীর্ঘ ৯ বছরকাল ক্ষমতাসীন থাকা সম্ভব হয়েছিল।
বাকশাল গঠনের পর বাকশাল তথা আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তার যে ধস নামে তারই ধারাবাহিকতায় জিয়াউর রহমান ১৯৭৮ সালে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি গঠনে অনুপ্রাণিত হন। জিয়াউর রহমান এবং তার দল বিএনপি বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়ে যান। সদ্যস্বাধীন দেশে জিয়াউর রহমানের রাজনীতি দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্যতা প্রশংসা অর্জনে সক্ষম হয়। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান হয়ে ওঠেন এক ক্ষণজন্মা পুরুষ। ৭ নভেম্বর ’৭৫ সিপাহী জনতার ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লবের প্রেরণাই জিয়াউর রহমানকে ক্ষমতায় আসার হাতছানি দিয়ে ডাকছেন, তারই ধারাবাহিকতা তার নবগঠিত বিএনপির নবরূপে স্বাধীন দেশে আবির্ভাব। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রকম্পিত রাজ পথেই তার দল বিএনপি গঠিত হয়, সেনা ছাউনিতে নয়।
জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের পূর্বে ছিলেন একজন অখ্যাত মেজর। ২৫ মার্চ দিবাগত রাতে We Revolt বলে পাক সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা, ওই রাতের গভীরে তিনি স্বাধীনতার ডাক দিয়ে রাতারাতি দেশে জনপ্রিয়তা পেয়ে যান। তিনি ছিলেন একজন সেক্টর কমান্ডার এবং Z ফোর্সের অধিনায়ক। তার নিজ হাতে যে রাজনৈতিক দল জাতীয়তাবাদী দল সৃষ্টি তা রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সংমিশ্রণেই তার সৃজন। পৃথিবীতে বহু সমরনায়ক রাজনৈতিক দল গঠন করে ইতিহাস বিখ্যাত হয়েছেন, উদাহরণস্বরূপ আমেরিকার প্রথম প্রেসিডেন্ট এবং স্বাধীনতার ঘোষণাকারী জর্জ ওয়াশিংটন, যুগোস্লাভিয়ার প্রেসিডেন্ট মার্শাল টিটু, তুরস্কের কামাল আতাতুর্ক প্রমুখ। সেনাপতি জিয়াউর রহমান তেমনি এক ক্ষণজন্মা পুরুষ। তার রাজনৈতিক দূরদর্শিতা দেশকে অনেকখানি এগিয়ে নিয়ে ছিলেন। জিয়াউর রহমান এবং তার দল স্বাধীন বাংলাদেশের অতন্দ্রপ্রহরী। তিনি বাকশাল বেষ্টনী হতে দেশকে বহুদলীয় গণতান্ত্রিক পরিমণ্ডলে নিয়ে আসেন। তার অভাবনীয় বিচক্ষণতা এবং আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তার ঈর্ষান্বিত হয়ে ১৯৮১ সালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে জেনারেল মঞ্জুরের নির্দেশে তাকে হত্যা করেও জেনারেল মঞ্জুর ক্ষমতা দখলে ব্যর্থ হন এবং তাকে জীবন বিসর্জন দিতে হয়েছিল।
পরবর্তীতে তার সহধর্মিনী বেগম খালেদা জিয়া বিএনপির নেতৃত্বে এসে গণতন্ত্রের আন্দোলন লড়াইয়ে জেনারেল এরশাদের শাসনামলে গণ-অভ্যুত্থানের বীরোচিত নেতৃত্ব দিয়ে তিনি একজন আপসহীন নেত্রী হিসেবে দেশ-বিদেশে পরিচিতি পেয়ে যান। গণতান্ত্রিক আন্দোলনে তিনি একজন শক্তিধর নেত্রী প্রমাণ করেন। ১৯৯১ সালের বিচারপতি প্রেসিডেন্ট শাহাবুদ্দিনের নিরপেক্ষ সরকারের পর্যায়ে শতভাগ সুষ্ঠু, অবাধ গ্রহণযোগ্য সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে তিনি ক্ষমতাসীন হয়ে দেশকে প্রেসিডেন্ট আদলের গণতান্ত্রিক সিস্টেম হতে সংসদীয় পদ্ধতির সরকারে রূপান্তরিত করে তিনি যে গণতন্ত্রের প্রতি বলিষ্ঠ আস্থাশীল এবং গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার জন্য তার শাসনামলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা গণতন্ত্রকে দেশের প্রশাসনের সকল অবস্থানে পৌঁছে দেয়ার বলিষ্ঠ পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
দেশে গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়ে গেলে সরকারের পরিবর্তনে সেই কাঠামোকে ধ্বংস করা সম্ভব নয়। স্বাধীন বাংলাদেশ গণতন্ত্রের মহিমায় উজ্জীবিত হবে এমনটাই ছিল বেগম খালেদা জিয়ার ঐকান্তিক কামনা। প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সময়কালেই বিরোধী দলের সমর্থনে সংবিধানে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফর্মুলা সংযোজন এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফর্মুলা দৃশ্যমান দেশ-বিদেশে গ্রহণযোগ্যতা পেয়ে যায়। ১৯৯৬ সালের এবং ২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্যতা পেয়ে যায় দেশের সর্বত্র।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফর্মুলা সংবিধানে অনেকটা পারমানেন্ট স্ট্রাকচারের অবস্থান নেয়ার পর্যায়ে প্রধান বিরোধী দল আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সংস্কারের নামে আন্দোলনের সূচনা, পরবর্তীতে আন্দোলনের তীব্রতা বাড়িয়ে দেন। আওয়ামী লীগ তথা ১৪ দলীয় জোট আপোষহীন জেদাজেদির ফলেই ১/১১ মইনউদ্দিন-ফখরুদ্দীন সরকার ক্ষমতাসীন হন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফর্মুলা ভিত্তিকে দুর্বল করে ফেলেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও তত্ত্বাবধায়ক আদলেই ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এবং ১৪ দলীয় জোট সরকার ক্ষমতাসীন হয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফর্মুলা সংস্কারের পরিবর্তে প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক ফর্মুলা সংবিধান বিরোধী আখ্যায়িত করে তার বিলুপ্তি ঘটান। দেশ থেকে গণতন্ত্রের বিলুপ্তি এখান হতে ঘটে যায়।
মূলত ২০০১ সালের নির্বাচনের পর শেখ হাসিনা তার দল এবং ১৪ দলীয় জোট অনুধাবন করতে পেরেছেন জনগণের ভোটে তাদের ক্ষমতাসীন হওয়ার পথ রুদ্ধ। ১৪ দলীয় জোটের বাম দল বিশেষ করে জাসদ হাসানুল হক ইনু, মেনন গংরা ব্যালটের চেয়ে বন্দুকের নলই ক্ষমতার উৎস যা কমিউনিস্ট কান্ট্রিতে দৃশ্যমান তাদের সেই ফর্মুলাতেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে বিরোধী গণতন্ত্রের আন্দোলনকে দমনপীড়নের মাধ্যমে দেশ থেকে গণতন্ত্র উধাও করে গণতন্ত্রের দেশে স্বৈরশাসন, কর্তৃত্ববাদী শাসন কায়েম করে নীলনকশার অংশবিশেষ গণতন্ত্রের নেত্রী খালেদা জিয়াকে প্রহসনমূলক মিথ্যা মামলায় সাজা প্রদানে কারাবন্দী রেখে দেশনেত্রীকে দেশ-বিদেশে রাজবন্দী নয় দুর্নীতির মামলায় কারাবন্দী আছেন মর্মে সরকার কৌশল এঁটেছেন।
প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জাতীয়তাবাদী দল ক্যান্টনমেন্ট থেকে নয়, স্বাধীন বাংলাদেশের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে রাজপথে দেশবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত চাহিদার অন্তর্নিহিত এক ফসল। বিএনপি স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদ্বয়ের এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের বিশ্বাসী এবং উক্তরূপ ভাবে দেশের সার্বভৌমত্ব জাতীয় পতাকাকে সমুন্নত রাখার স্বাধীনতার পক্ষের বলিষ্ঠ শক্তিমান দল। তারই ধারাবাহিকতা জিয়াউর রহমানের অবর্তমানে খালেদা জিয়া সেই দল বিএনপির ঝাণ্ডা বহন করে স্বাধীন বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব এবং নির্ভেজাল সংসদীয় গণতন্ত্রকে অক্ষু্নে রাখার এক লড়াকু অতন্দ্র প্রহরী।
বিএনপি গণতন্ত্রে জীবনধারার বিশ্বাসী এক মডারেট গণতান্ত্রিক দল। গণতন্ত্রের মাতা খালেদা জিয়া বিএনপির কোটি কোটি নেতাকর্মীর জনতার আশীর্বাদপুষ্ট। তার অনুসারী, লাখ লাখ নেতাকর্মী দেশে হারানো গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার জন্য ক্ষমতাসীন গণতন্ত্রবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অবতীর্ণ। গণতন্ত্র উদ্ধারের লড়াই সন্ত্রাসী আন্দোলন নয়, গণতন্ত্র উদ্ধারের এক মহিমার নামান্তর। রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই বাণী যত বেশি অনুধাবন করবেন, জাতির জন্য তত কল্যাণকর হবে বলে মনে করি।
লেখক : কলামিস্ট এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া বারের সিনিয়র আইনজীবী