রাজধানীর গুলিস্তানের ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় হতাহতদের স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (ঢামেক) এলাকা। হাসপাতালে স্বজনদের খুঁজছেন অনেকেই। আহতের মধ্যে একজন গর্ভবতীও রয়েছেন বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার রাতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের জরুরি বিভাগের বহির্বিভাগ ঘুরে দেখা গেছে, রোগী নিয়ে একের পর এক অ্যাম্বুলেন্স ভেতরে প্রবেশ করছে। জরুরি বিভাগের সামনে থেকে শুরু করে বাইরের সড়ক পর্যন্ত আহত এবং নিহতদের স্বজনদের আহাজারি চলছে।
হাসপাতালের বারান্দায় স্বামী মমিন উদ্দিনের খোঁজে অনবরত বিলাপ করে চলেছেন এক নারী। স্বজনদের কেউ ওই নারীকে সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করছেন এই বলে যে তাঁর স্বামী হালকা আঘাত পেয়েছেন। আবার কেউ বলছেন, খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু নারী বারবার বলছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি না। মমিনকে পাওয়া গেলে আমি একবার দেখতে চাই।’
খবর শুনে একপর্যায়ে মমিন উদ্দিনের শাশুড়িও আসেন হাসপাতালের জরুরি বিভাগে। মেয়ের পাশে দাঁড়িয়ে তিনিও আর্তনাদ করছিলেন। আর শাড়ির আঁচল তুলে বারবার বিলাপ করতে করতে বলছিলেন, ‘আল্লাহ, তুমি ভিক্ষা দাও।’ মমিন উদ্দিনের দুই মেয়েও হাসপাতালে এসেছে। কোনো স্বজনকে দেখলেই জিজ্ঞেস করছে, ‘বাবাকে পাওয়া গেছে?’
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে দাঁড়িয়ে কাঁপছিলেন মো: মোহসীন নামের এক ব্যক্তি। তাঁর ছোট ভাই মো: তুহিন বিস্ফোরণে পায়ে আঘাত পেয়ে হাসপাতালে ভর্তি। খবর শুনে ছুটে এসেছেন তিনি। কান্নাজড়িত কণ্ঠে মোহসীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ভাইকে খুঁজে পেয়েছি। ওর পা পুড়ে গেছে।’
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার বাসিন্দা তারা। মোহসীনরা দুই ভাই একটি জুতার দোকানে কাজ করতেন। তার ছোট ভাই তুহিন গুদাম থেকে মাল আনতে গিয়েছিলেন। এ সময় বিস্ফোরণ হয়।
সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক সাংবাদিকদের বলেন, এরইমধ্যে আহত ১২০জনকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করে যাচ্ছি।
এদিকে, এরইমধ্যে তিনজন অগ্নিদগ্ধকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়েছে। এ তথ্য ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া।