মানুষের শারীরিক সমস্যাগুলোর মধ্যে শ্বাসকষ্ট একটি। তবে শ্বাসকষ্ট মানেই রোগ নয়, এটি রোগের লক্ষণ। একটু দৌড়ালে বা পরিশ্রম করলে সবারই শ্বাস-প্রশ্বাস দ্রুত হতে থাকে। কিন্তু শ্বাসকষ্ট হলে ধরে নিতে হয়, এটি কোনো রোগের উপসর্গ। অনেকে শ্বাসকষ্ট হলে হাঁপানি মনে করেন। হাঁপানি হলে শ্বাসকষ্ট হয়। তবে সব শ্বাসকষ্টই হাঁপানি নয়। ফুসফুসের হাঁপানি হলো বিশেষ ধরনের শ্বাসকষ্ট। এটি হঠাৎ করে শুরু হয়। শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ার পর বুকের ভেতরে বাঁশির মতো শব্দ হয়।
একই সঙ্গে কাশি ও বুকের ভেতর শ্বাস বন্ধ ভাব অনুভূত হয়। হৃৎপি-ের বাঁ দিকের অংশ অকেজো হয়ে পড়লেও তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। এর নাম হৃদযন্ত্রের হাঁপানি। ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রের হাঁপানি উভয় রোগের ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট থাকে। চিকিৎসক রোগীর বয়স, লক্ষণ এবং বুক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে অনায়াসে বলে দিতে পারেন, রোগী কোন ধরনের হাঁপানিতে ভুগছেন। এ ছাড়া কিডনির বৈকল্যের জন্যও শ্বাসকষ্ট হতে পারে।
বিভিন্ন অঙ্গে বৈকল্য বা সমস্যার জন্য শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে। যদিও এসব ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট হয়, তবু এর কারণ ভিন্ন হওয়ায় চিকিৎসা ব্যবস্থাও ভিন্নতর হয়ে থাকে।
আমরা যেহেতু ফুসফুসের সাহায্যে শ্বাস নিয়ে থাকি, তাই ফুসফুসের যে কোনো ধরনের সমস্যা বা রোগেই শ্বাসকষ্ট হয়ে থাকে। নিউমোনিয়া সবার কাছে পরিচিত রোগ। নানা কারণে এ রোগ হতে পারে। কারণ যা-ই হোক, নিউমোনিয়ার প্রধান উপসর্গ হলো শ্বাসকষ্ট। এটি নির্ভর করে ফুসফুসের যত বেশি অংশ আক্রান্ত হবে, শ্বাসকষ্ট তত বেশি প্রকট হবে।
ক্রনিক ব্রংকাইটিসের কারণেও শ্বাসকষ্ট হয়। এ রোগের বিভিন্ন কারণের মধ্যে অতিরিক্ত ধূমপান, ধুলা এবং ধোঁয়াময় পরিবেশ এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে বংশগত কারণে হয়ে থাকে। বাহ্যিকভাবে ক্রনিক ব্রংকাইটিস রোগের সঙ্গে ফুসফুসের হাঁপানির অনেক মিল আছে, যদিও এ দুটি রোগ সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরন ও প্রকৃতির। এ রোগ হলে শ্বাসকষ্ট দিন দিন বাড়তেই থাকে এবং অনেক রোগী নিজেকে হাঁপানি রোগী বলে মনে করেন। আরও বিভিন্ন কারণে মানুষ শ্বাসকষ্টে ভুগে থাকেন। আমাদের দেশে শ্বাসকষ্টের রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তবে সঠিক এবং সুষ্ঠু চিকিৎসা গ্রহণ করলে ভালো হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।