সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৫৫ পূর্বাহ্ন

কিডনিতে ক্যানসার হলে কী করণীয়

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২৯ আগস্ট, ২০২১
  • ১৭৬ বার

কিডনির প্রধান কাজ শরীরের অপ্রয়োজনীয় বর্জ্য প্রস্রাবের মাধ্যমে বের করে দেওয়া। আবার প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদানগুলো শোষণ করে রক্তে পৌঁছে ভারসাম্য রক্ষা করা। তবে নানা কারণে কিডনির কার্যক্ষমতা কমে যায়। এর কিছু রোগ ভালো হয়ে যায়। আবার কিছু রোগ কখনই সারে না। তেমনই একটি হলো কিডনির ক্যানসার। তাই এ ব্যাপারে সতর্কতা জরুরি।

কিডনি ক্যানসারের কারণ : ধূমপান, অতিরিক্ত ওজন, উচ্চ রক্তচাপ, পরিবারের কারও ক্যানসারের ইতিহাস থাকলে এ ক্যানসার হতে পারে। পরিবেশগত কারণ, যেমনÑ আর্সেনিক, অ্যাসবেস্টস, ক্লোরোইথাইলিন ও অন্যান্য ক্রোমিয়াম যৌগের সংস্পর্শে থাকা ব্যক্তির কিডনির ক্যানসারের ঝুঁকি তুলনামূলক বেশি। দীর্ঘদিনের কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি- যাদের ডায়ালাইসিস করতে হয়, তারাও কিডনি ক্যানসারের ঝুঁকির মধ্যে থাকেন।

উপসর্গ : চল্লিশোর্ধ্ব ব্যক্তিদের কিডনি ক্যানসারের ঝুঁকি বেশি। বয়স ৫০-৬০ বছর পেরিয়ে গেলে এ ঝুঁকি আরও বাড়ে। দুর্বলতা, রক্তহীনতা, ক্ষুধামান্দ্য, প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়া, পিঠ ও কোমর ব্যথা হওয়া এ ক্যানসারের অন্যতম উপসর্গ। যদি ক্যানসার অন্য অঙ্গে ছড়িয়ে যায়, তা হলে নতুন ধরনের উপসর্গ দেখা দেবে। যেমনÑ ক্যানসার ফুসফুসে ছড়ালে কাশির সঙ্গে রক্ত যায়, বুকে ব্যথা হতে পারে। আবার মস্তিষ্কে ছড়ালে রোগীর মাথাব্যথা, বমি, এমনকি খিঁচুনি ও অচেতন হয়ে পড়তে পারে। যদি হাড়ে ছড়ায়, তা হলে ব্যথা ও হাড় ভেঙে যেতে পারে। কাজেই এসব ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা দরকার।

পরীক্ষা : কিডনির ক্যানসার শনাক্তে চিকিৎসক প্রয়োজন অনুযায়ী রক্ত পরীক্ষা, আল্ট্রাসনোগ্রাফি, সিটিস্ক্যান, এমআরআই, এক্স-রে আইভিইউ, সিটি গাইডেড এফএনএসি অথবা এফএনএবি পরীক্ষা করতে বলেন।

চিকিৎসা : কিডনি ক্যানসারের চিকিৎসা নির্ভর করে রোগের আকার, বিস্তৃতি ও ব্যাপ্তি এবং হিস্টোপ্যাথলজি রিপোর্টের ওপর। রেডিক্যাল সার্জারি, নেফ্রন স্পেয়ারিং সার্জারি, ইমিউনোথেরাপি, বায়োলজিক্যাল থেরাপি, টার্গেটেড থেরাপি, কেমোথেরাপি ইত্যাদি পদ্ধতিতে এ রোগের চিকিৎসা করা হয়। রোগীর অবস্থা ও ক্যানসারের পর্যায়ের ওপর নির্ভর করে চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ধারণ করেন চিকিৎসক। অন্যান্য চিকিৎসার মধ্যে আছে ক্রায়োথেরাপি, রেডিওফ্রিকোয়েন্সি এব্লেশন ও ট্রান্সআর্টারিয়াল এমবোলাইজেশন। কখনো কখনো রেডিওথেরাপি চিকিৎসাও দেওয়া হয়।

কিছু প্রতিরোধ : স্বাস্থ্যকর জীবনচর্চার মাধ্যমে ক্যানসার থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে ক্যানসারের ঝুঁকিগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। যেমনÑ ধূমপান, অস্বাস্থ্যকর খাবার, আর্সেনিকসহ ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকতে হবে। স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর সুষম খাবার খেতে হবে। খাদ্য তালিকায় শাকসবজি, তাজা ফলমূল রাখতে হবে। কায়িক পরিশ্রম ও ব্যায়াম করতে হবে। পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে। উচ্চরক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। তা ছাড়া করোনাকালেও সচেতনা থেকে মনোবল শক্ত রাখা উচিত। মনে রাখবেন, শুরুতেই ধরলে পড়া যে কোনো রোগ যাই যে সারা।

লেখক : অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, অনকোলজি বিভাগ, এনাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, থানা রোড, সাভার

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com