শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৩ পূর্বাহ্ন

ইইউর এমপিদের চিঠি

এনবিডি নিউজ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১৭ জুন, ২০২৩
  • ৬৯ বার

ইউরোপীয় কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্টকে ইইউ’র ছয় এমপির চিঠি : ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনে ভূমিকা রাখার আহ্বান।’ পত্রিকার এই শিরোনামই আমাদের মনে শঙ্কা জাগাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সুশাসন ও মানবাধিকার সম্পর্কিত ইইউ-বাংলাদেশ যৌথ কমিশনের ফলাফল এবং এসব বিষয়ে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সাথে কাজ করার পরিকল্পনা সম্পর্কে আরো জানতে চেয়েছেন এ ছয় সংসদ সদস্য। চিঠির শুরুতে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি তুলে ধরে উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানানো হয়।

চিঠিতে দাবি করা হয়, বাংলাদেশে বর্তমান সরকার ক্ষমতা সুসংহত করতে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের বিচারবহির্ভূত হত্যা, অপহরণ, নির্যাতন করছে এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। ২০১৮ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস করে সংবাদপত্রের স্বাধীনতাসহ মতপ্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করা হয়েছে বলেও দাবি করা হয়। (সমকাল, ১৩ জুন, ২৩)

প্রিয় পাঠক, নিশ্চয় বুঝতে পারছেন আমাদের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়েই তারা কথা বলছেন। কেন তারা এমন কথা বলছেন? তারা তো আমাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নন, তারা তো কেবল আমাদের উন্নয়ন আর বাণিজ্যের অংশীদার। এটুকুর জন্য তারা আমাদের দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে নাক ঢুকিয়ে দেবেন, এটা কি মেনে নেবার মতো? আমরা কেন তাদের কথা শুনব? সেই কেন’র উত্তর পরে বলছি।

আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি, তার সরকার এবং দেশের মানুষ কোনো বিদেশি শক্তির কাছেই মাথা নত করবে না। সেটা সত্য বয়ান। ১৯৭১ সালে আমরা মাথা নত করিনি, সেটা মনে রাখার কথা বলছি। আবার এটাও মনে রাখতে বলছি যে, ১৯৭১ আর ২০২৩ সাল এক নয়, এক রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি নয়, ঘটনাপ্রবাহও এক নয়। তখন ছিল স্বাধীনতা অর্জনের, মুক্তিযুদ্ধের কাল আর এখন দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে ধনবাদী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার রাজনৈতিক প্রচেষ্টার উদ্যোগ। তবে, আমাদের মননে-মানসে এই সত্য বিরাজমান যে যুক্তিযুক্ত হোক বা না হোক, হুজুগেই বাঙালি চলে। বাংলাদেশ মাথা নত করতে শেখেনি, এই প্রবাহই আমাদের চেতনা নির্মাণ করেছে, সেই চেতনাই বলে, আমরা মাথা নত করব না। প্রধানমন্ত্রীর এই নবউদ্যমকে স্বাগত জানাতেই হয়, কেননা, তিনি তো নিজের ইমেজ সৃষ্টি করেছেন এভাবেই, যেখানে যুক্তির চেয়ে আবেগ অধিক। বিশ্ব ক‚টনৈতিক পরিস্থিতিতে এরকম সরাসরি কথা খাটে না।

এবার ছয় এমপির চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপিয়ান কমিশন যদি এমন সিদ্ধান্ত নেয় যে, বাংলাদেশের ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিক তৎপরতা মানবাধিকার লঙ্ঘন করে চলেছে, তাহলে কূটনৈতিক সম্পর্ক অটুট রেখেও নানা ধরনের বাণিজ্যিক বাধা সৃষ্টি করতে পারে তারা। যেমন জিএসপি প্লাস-এর অধীনে বাংলাদেশ যেসব সুযোগ সুবিধা পেয়ে আসছে তা কমিয়ে দিতে পারে। তাহলে আমাদের বৈদেশিক বাণিজ্যে যে ধস নামতে পারে, তার ধকল সামলানোর মতো শক্তি কি বাংলাদেশ অর্জন করেছে? না, করেনি। মার্কিনি বাজার আমাদের জন্য এক নম্বরে, ইউরোপিয়ান বাজার দুই নম্বরে আছে। অর্থাৎ আমাদের রফতানি আয়ের দুটি উৎসই পশ্চিমাদের হাতে। এমন কোনো জোট বা অ্যালিতে বাংলাদেশ কি আছে যারা আমাদের দুর্দিনে পাশে দাঁড়াবে? ইইউ আর যুক্তরাষ্ট্র যদি বাংলাদেশ থেকে আমদানি কমিয়ে দেয়, কোন দেশ আছে যে আমাদের চাহিদামতো আমদানি করবে আমাদের পণ্য?

সমাজতান্ত্রিক বøকের কথা ভাবুন? ন্যাটোর কথা ভাবুন, ভাবুন আসিয়ানের কথা। আমাদের দক্ষিণ এশিয়ার যে অ্যালিটি আমরা জন্ম দিয়েছিলাম, সেই সার্ককে তো চালু রাখতেই পারিনি। সার্কের সাতটি দেশ যদি নিজেদের মধ্যে ঐক্য ও সহযোগিতার পারস্পরিক অংশীদারত্ব গড়ে তুলতে পারত, আজ তাহলে ওই মানবাধিকার প্রশ্নটি স্থগিত না হোক, বাণিজ্যিক অচলাবস্থার প্রচ্ছন্ন হুমকি রুখে দেয়া যেত। সার্কের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে ঐক্যের চেয়ে অনৈক্যই প্রধান। ফলে কোনো দেশই কাউকে বিশ্বাস করতে পারে না। না পারারও রয়েছে অনেক কারণ। প্রায় ২০০ কোটি মানুষের সংস্থাটি নানান দুর্যোগ-দুর্বিপাক মোকাবিলায় পারস্পরিক অবদান রাখতে পারত। কিন্তু সেটি হয়নি। তাই, ইইউ এমপিদের আহ্বান যদি ইউরোপীয় কমিশন সত্য ও নির্মম মানবাধিকার হরণ বলে মেনে নেয়, তাহলে আমাদের রোজগারের বিশাল একটি ক্ষেত্রে, ইউরোপের ২৭টি দেশ তো বটেই, তার প্রভাবে, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যও যোগ দেবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। আমাদের প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের সাথে যতই করিডোরে ফটোসেশনে যোগ দেন না কেন, সুনাক নিজ দেশ ও সরকারের চিন্তার বাইরে যেতে পারবেন না। আর যুক্তরাষ্ট্র তো ইতোমধ্যেই আমাদের র‌্যাবের ৭ জনের ওপর স্যাঙ্কশনে এবং ভিসানীতি প্রকাশ করে যে হুমকি সৃষ্টি করেছে, তাতে করে এটাই ভাবতে হবে আমাদের যে আগামী নির্বাচনটি অবশ্যই ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার করতে হবে। নাহলে আমরা রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক সঙ্কটের মধ্যে পড়ব।

এটা ভেবে আমোদে সময় কাটানোর দিন শেষ যে আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছি। আমরা সংবিধান ফলো করে এগিয়ে যাবো। সংবিধান ভালো কিছুর জন্য, মন্দের জন্য নয়। সংবিধানের অধীনেই গত ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু যারা ক্ষমতায় গেছেন, তারাও জানেন, সেই নির্বাচন ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার হয়নি। দেশের ভোটার জনগণ যে ভোট দিতে পারেননি, তাদের সেই ক্ষোভ জাতীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত। সাবেক সিইসি বলেছেন, আমরা আর রাতের ভোট দেখতে চাই না। এই কথায় বিপুল ভোট ডাকাতির ব্যাপারে ইসির স্বীকৃতি মিলেছে। আবার যেসব মানুষ বলছেন যে, সরকারি দলের রাজনৈতিক কর্মীদের হাতে বাক্স পূর্ণ হয়েছে, তাদের সেই দাবি ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দেবারও কোনো রাজনৈতিক যুক্তি নেই সরকারের কাছে। এসব অপকর্ম, সরকারের রাজনৈতিক চেহারায় যে কলঙ্ক লেপে দিয়েছে, তা ধুয়ে ফেলার মতো কোনো সাবান পৃথিবীতে আবিষ্কার হয়নি। তবে, এই কলঙ্ক মুছে ফেলার একটি সুযোগ হয়তো আছে, তাহলো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যেসব অভিযোগ করেছে, সেগুলো মেনে নিয়ে আর যাতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা না ঘটে, তা নিশ্চিত করা এবং নির্বাচনে সবাইকে ভোট প্রয়োগের সুযোগ দেয়া।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ কিছু প্রস্তাব করেছে, যা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শান্তি রক্ষায় আমাদের সামরিক বাহিনী যে অবদান রাখছ তাকে ক্ষুণ্ণ করতে পারে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) বলেছে, বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর নির্যাতনের জন্য জাতিসঙ্ঘের উদ্বেগ প্রকাশ করা উচিত। জাতিসঙ্ঘের আন্ডার সেক্রেটারি জিন পিয়েরে ল্যাক্রোইক্সের আসন্ন বাংলাদেশ সফরে এ উদ্বেগ জানাতে আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাটি। বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীদের যাচাই-বাছাই বাড়াতেও জাতিসঙ্ঘের কাছে আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, জাতিসঙ্ঘের শান্তিরক্ষাবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জিন পিয়েরের আগামী ২৫ জুন বাংলাদেশ সফরে আসার কথা রয়েছে। সফরের প্রাক্কালে এ বিবৃতি এলো।

সোমবার বিবৃতিতে এইচআরডব্লিউ বলেছে, জাতিসঙ্ঘের শান্তিরক্ষাবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারির সফর এমন সময়ে হতে যাচ্ছে, যখন বিরোধী রাজনীতিক, প্রতিবাদকারী ও গুমের শিকার মানুষদের পরিবার এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ওপর বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। বাংলাদেশের নিরাপত্তাবাহিনী, বিশেষ করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) দীর্ঘদিন ধরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত।

বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশকে শান্তিরক্ষী বাহিনীর শীর্ষ অবদানকারী দেশ হিসেবে ভূমিকা অব্যাহত রাখতে হলে জাতিসঙ্ঘে মানবাধিকার যাচাই নীতি যথাযথভাবে প্রয়োগ করার বিষয়ে জিন পিয়েরেকে জোর দিতে হবে। জাতিসংঘের পাশাপাশি সরকারগুলোকেও নিশ্চিত করতে হবে- শান্তিরক্ষায় কর্মরতরা মানবাধিকার লঙ্ঘনের সাথে জড়িত নয়। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে উচ্চপর্যায়ের নিয়োগে জাতিসঙ্ঘ যাচাই নীতি প্রয়োগ করে। বাকি নিয়োগে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ওপর নির্ভর করে। তবে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের এখতিয়ার সীমিত।

বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে এ যাচাই নীতির দুর্বল প্রয়োগ এ বার্তাই দিচ্ছে- মানবাধিকার লঙ্ঘনের সাথে জড়িত হয়েও জাতিসঙ্ঘে কাজ করার সুযোগ থেকে বিরত রাখা যায় না। এটি জাতিসঙ্ঘের জন্য একটি নৈতিক বিপদ। (সমকাল/ ১৩ জুন, ২৩) হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এসব অভিযোগ জাতিসঙ্ঘের আন্ডার সেক্রেটারি জিন পিয়েরে যদি সত্য মনে করেন তাহলে কি হতে পারে, সেটা কি আমাদের সরকার ভেবে দেখেছেন? জিন পিয়েরে যদি এসব বিষয়ে জানতে চান, তাহলে কী জবাব দেবেন সরকার? এটা তো ঠিক যে সন্ত্রাসবাদ দমনের অংশীদার হিসেবে র‌্যাব কাজ করছিল। কিন্তু ওই কাজ করতে গিয়ে অনেক নিরীহ মানুষকে যে তারা হত্যা ও গুম করেছে, তার নজিরের কোনো ঘাটতি নেই। আর রাজনৈতিক বিরোধীদের হত্যা ও গুমের অনেক ঘটনাই দেশী বিদেশীরা জেনেছে। সে-কারণেই র‌্যাবের চিহ্নিত ৭ জনের ওপর মার্কিনি স্যাঙ্কশন। আবার শান্তিরক্ষী বাহিনীর কাজ যে দেশীয় মানবাধিকার সংস্থাগুলো লক্ষ্য রাখছে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো সংগ্রহ করছে, জাতিসঙ্ঘ তথ্য উপাত্ত রাখছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রতিদিনের ঘটনার উপাত্ত নথিভুক্ত করছে, সেটা কি মনে নেই আমাদের সরকারের? মনে রাখতে হবে এ-কারণেই যে তারা আমাদের মানবিকতার অংশীজনই কেবল নয়, আমাদের উন্নয়নেরও সহায়ক শক্তি। এদের সহযোগ বাদ দিলে বাকি থাকে কেবল চীন ও ভারত। এ-দুটি দেশ পরস্পরের রাজনৈতিক বৈরী এবং স্বার্থের ওপরে গিয়ে সাহায্য-সহযোগিতা করবে না। তাদের অর্থনৈতিক শক্তি কেবল বাণিজ্যকেন্দ্রিক। মানবিক যে পরিপ্রেক্ষিত আছে, সেখানে ভারতের সহযোগিতা শূন্য। তারা সীমান্তে পাখির মতো গুলি করে বাংলাদেশী কৃষকদের হত্যা করে। এ সপ্তাহেও একজন চাষিকে হত্যা করেছে বিএসএফ। সেই দেশের মানবিক সাহায্য আমরা পাবো না, এটাই নির্মম সত্য। আর চীন এখন বিশাল বিনিয়োগ নিয়ে গেছে মধ্যপ্রাচ্যে। নিজের দেশের মরুভূমিতে ফসল উৎপাদন করছে চীন। হয়তো মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মরুভূমিতেও ফসল উৎপাদনে বিনিয়োগ করবে তারা। তার প্রয়োজন বিপুল পরিমাণ খাদ্যশস্য। আফ্রিকার দেশগুলোতেও চীনারা ফসল উৎপাদনে বিনিয়োগ করছে অনেক বছর ধরে। মার্কিনি চাষিদের ফসল আগাম কিনে নিয়ে তা আফ্রিকার ক্ষুধায় কাতর মানুষের কাছে বিক্রি করছে কম দামে, সামান্য লাভে। আমাদের উর্বর ভূমি আছে, কিন্তু তার পরিমাণ সামান্যই। এখানে ওই সেক্টরে বিনিয়োগ করবে না চীন। চীন গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে বিনিয়োগ করবে।

কারণ তার ভূ-রাজনৈতিক ক্ষমতার এলাকা বাড়ানো দরকার মার্কিনি আগ্রাসন থামাতে। আবার দিয়াগো গার্সিয়া থেকে চীনকে সামরিক চাপে রাখতে পারছে না যুক্তরাষ্ট্র। তার প্রয়োজন বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মতো দেশের ভূমি। চীনের কাছে বাংলাদেশের প্রয়োজন এটুকুই।

আমাদের এখন এমন একটি পথ খুঁজে নেয়া প্রয়োজন, যাতে ১৭ কোটি মানুষের জন্য সামাজিক ও রাজনৈতিক সুরক্ষা পোক্ত করা যায়। আর সেটা হতে পারে প্রধানত জনগণের অধিকারে পূর্ণমাত্রায় সমর্থন দান। প্রত্যেক নাগরিক যদি তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে নির্বিঘ্নে, তাহলেই সেটা সম্ভব। কিন্তু গত পঞ্চাশ বছরের ইতিহাস বলছে, কোনো রাজনৈতিক সরকারের অধীনেই নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন হয়নি। এই দোষ বাংলাদেশের মানুষ যেমন জানে, তেমনি বিদেশীদেরও চোখে পড়েছে। পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান যতই বলেন না কেন, জনগণ গণতন্ত্র বোঝে না, বিষয়টি অতটা খারাপ নয়। আম-পাবলিক ভোটাধিকার প্রয়োগ করার অধিকারকেই গণতন্ত্র বলে মনে করে। সেটা কি ভুল? তাদের রাজনৈতিক ও সামাজিক অধিকার কায়েম হতে পারে তো ওই ভোটের মাধ্যমেই। এর চেয়ে বেশি জানলে জনগণ চিনে ফেলবে রাজনৈতিক সরকারের রাজনৈতিক গণতন্ত্র। সেখানে গণ তো নেই-ই, আছে কেবল দলতন্ত্র। এই দলতন্ত্রই আমাদের দেশে জনগণের প্রকৃত শত্রু। জনগণের সাংবিধানিক অধিকার ভোটাধিকার প্রয়োগের কথা বলি আমরা। সেটাই হবে তাদের জন্য রাজনৈতিক স্বাধীনতা। আর সেটা বাধাগ্রস্ত করলে গণতন্ত্র অন্ধকারের গলিতে ঢুকে যাবে, যা ইতোমধ্যেই আমরা দেখতে পাচ্ছি।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com