বাংলাদেশে ভয়ংকর সন্ত্রাসী এবং জঘন্য অপরাধীর সংখ্যা প্রচুর। এবং তা যেন বেড়েই চলেছে। দেশের প্রতিটি নগর, শহর, বন্দর, জেলা, উপজেলা, গ্রাম-গঞ্জ, ইউনিয়ন নানা নামের সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা উপদ্রুত। বাহিনীগুলো তাদের কর্তৃত্বাধীন এলাকার জনগণকে সন্ত্রস্ত রাখছে। এলাকার মানুষের সহায়-সম্পদ, মান-সম্মান, শারীরিক নিরাপত্তা কার্যত এদের মতি-মর্জির ওপর নির্ভর করে। অনেক ক্ষেত্রে এদের চাঁদা দিয়ে প্রকারান্তরে নিরাপত্তা কিনতে হয়। এলাকার প্রশাসন, নিরাপত্তা বাহিনী এদের শাসন করে না; বরং পরোক্ষভাবে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে সুনজরে থাকতে চেষ্টা করে। এদের সঙ্গে সখ্য গড়ে নিজের পদ-পদবি, অবস্থান সুদৃঢ় করতে প্রয়াস পায়। দুর্বৃত্তের দল বিনা বাধায় অপ্রতিরোধ্য গতিতে তাদের দুষ্কর্ম চালিয়ে জনপদের জনমানুষকে অতিষ্ঠ করে তোলে। ওপরের স্তরের নেতা-নেত্রীরা সব কিছু জেনেও না জানার ভান করেন। আসলে তাঁরা নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য দুর্বৃত্ত গোষ্ঠীকে প্রশাসনিক এবং আইনি সমর্থন দিয়ে যান।
অপকর্মের মূল ভূমিকায় থাকে দুর্বৃত্ত গোষ্ঠী, যারা সন্ত্রাসী হতে পারে, লুটেরা হতে পারে কিংবা হতে পারে দখলদার অথবা প্রতারক। সবাই জানে দেশের আর্থিক খাত থেকে হাজার হাজার, সত্যি বলতে কী লক্ষাধিক কোটি টাকা লুটেরা পরিচালক এবং গ্রাহকরা সরিয়ে নিয়েছে। এ টাকা আর ফিরে আসবে বলে মনে হয় না। আন্তর্জাতিক সংস্থা, দাতাগোষ্ঠী এবং গণদাবির চাপে কর্তৃপক্ষ ধীরে ধীরে ঋণখেলাপি লুটেরাদের নাম প্রকাশ করতে শুরু করেছে। যদিও কর্তৃপক্ষ আপ্রাণ চেষ্টা করে, যাতে ঋণখেলাপির বিশদ পরিচয় লোকে না জানতে পারে। তারা শুধু ঋণখেলাপির কম্পানির নাম উল্লেখ করে; কিন্তু কম্পানির মালিকের নামধাম বাধ্য না হলে উল্লেখ করে না। এতদ্সত্ত্বেও যাদের নামধাম প্রকাশ পেয়েছে, তারা নেতৃস্থানীয় রাজনীতিবিদ নন। এরা ব্যবসায়ী অথবা সামাজিক পরগাছা। প্রতারণামূলক কাজের মাধ্যমে এরা জীবিকা অর্জন করে, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের টাকা হাতিয়ে নেয়। আর্থিক অঙ্গনে ও সামাজিক বলয়ে এদের যে পরিচিতি এবং প্রতিষ্ঠা তাতে এ ধরনের ব্যক্তিরা শত শত বা হাজার হাজার কোটি টাকার ঋণ সংগ্রহ করতে পারে না। একটু পর্যালোচনা করলে বা খোঁজখবর নিলে বোঝা যায় ক্ষমতাধর কোনো রাজনৈতিক শক্তি এদের পেছনে রয়েছে। কাগজে-কলমে ক্ষমতাধর সমর্থনকারী গোষ্ঠীর নামধাম থাকে না। অথচ এরা লুটেরা খেলাপিদের পক্ষ হয়ে দেন-দরবার করেন। ক্ষমতা দেখান। বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দেন। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে কার্যকর সমঝোতা গড়ে তোলেন রাজনীতিবিদরা, দৃষ্টির আড়ালে থাকলেও তাদের অলিখিত প্রভাবকে সম্বল করে দুষ্কৃতকারীরা এগিয়ে যায়।
ধরা না পড়া পর্যন্ত দুর্বৃত্ত গোষ্ঠী ক্ষমতাধর রাজনীতিবিদ কিংবা প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দকে তাদের দুষ্কর্ম-অর্জিত অর্থের একাংশ নানা অজুহাতে হিসসা হিসেবে দিয়ে যায়। এটি সরাসরি ক্যাশ স্থানান্তর হতে পারে। বিকল্প হিসেবে দামি উপহার-উপঢৌকনও হতে পারে। প্লট, ফ্ল্যাট, রিসোর্ট, গাড়ি, বৃহৎ শেয়ার, এমনকি শিল্প, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের আংশিক মালিকানা অপকৌশলের মাধ্যমে উপহার-উপঢৌকন হিসেবে ক্ষমতাধর গোষ্ঠী, বিশেষ করে শীর্ষ স্তরের নেতা-নেত্রীকে প্রদান করা হয়। বাইরের লোক এটি সচরাচর জানতে পারে না। নেতা-নেত্রীরা প্রাপ্ত সম্পদের ব্যবস্থাপনায় অংশ নেন না। তারা অনেকটা সুপ্ত অংশীদার (Spleeping partner) হিসেবে থাকেন। প্রতি মাসে বা একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর সম্পদ থেকে অর্জিত মুনাফা তাদের হাতে নীরবে পৌঁছে যায়। তারা আনন্দের সঙ্গে তা ভোগ করেন। সামনে কম পরিচিত ব্যবসায়ী, শিল্পপতি; পেছনে প্রভাবশালী, ক্ষমতাধর রাজনীতিবিদ।
প্রাক-স্বাধীনতাকালেও কিছু শক্তিমান যুবক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। সরাসরি সন্ত্রাসী না হলেও পেশি প্রদর্শন করে প্রতিদ্বন্দ্বী সংগঠনের সমর্থকদের ভয় দেখাতে চেষ্টা করত। রাজনৈতিক সংগঠনের মধ্য পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ এদের চিনতেন এবং সৌজন্যমূলক আদর-আপ্যায়নের মাধ্যমে এদের খুশি রাখতে চেষ্টা করতেন। শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এদের প্রত্যক্ষ পরিচয় ছিল না। এদের খুশি করার ব্যাপারে শীর্ষ নেতৃবৃন্দের বাড়তি তৎপরতা ছিল না। সংগঠনের সমর্থনে হৈ-হুল্লোড়, হাঙ্গামা এমনকি শারীরিক আগ্রাসনে অংশ নিলেও শক্তিমান এই গোষ্ঠী কখনো সংগঠনের পদাসীন কর্মকর্তা (ঙভভরপব ইবধত্বৎ) হওয়ার জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করেনি; শক্তি প্রদর্শন তো নয়ই। তারা বড়জোর সংগঠনের কোনো উপগোষ্ঠীকে সমর্থন করেছে এবং সে গোষ্ঠীর পক্ষে কাজ করেছে। সে গোষ্ঠীকে সুরক্ষা দিয়েছে, বিরোধী গোষ্ঠীকে দাবিয়ে রাখতে চেষ্টা করেছে। সংগঠনের নেতৃত কিন্তু লব্ধ প্রতিষ্ঠ নেতা-নেত্রীর হাতেই ছিল। অর্থসম্পদের দিক থেকে শক্তিমান যুবকরা আহামরি কিছু ছিল না। তারা মাঝারি মানের রেস্টুরেন্টে বসে কখনো নগদে, কখনো বাকিতে আবার কখনো অন্যের পয়সায় চা-নাশতা সহযোগে আড্ডা দিত। সুউচ্চ মানের হোটেলে তাদের যাওয়া-আসা ছিল না। মূল রাজনৈতিক দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সামনে যেতে তারা উৎসাহিত বোধ করত না। দলের শক্তিমান বাহিনী (Musclemen) হিসেবে চলাফেরা করার আনন্দ তাদের জন্য যথেষ্ট ছিল। এর বেশি তাদের কিছু চাহিদা ছিল না।
গত কয়েক দশকে উঁচু পর্যায়ের নেতা-নেত্রীদের মধ্যে মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় ঘটেছে। অর্থসম্পদ এবং সস্তা জনপ্রিয়তার প্রতি তাঁদের লোভ-লালসা অনেক বেড়ে গেছে। তাঁবেদারি মোসাহেবি, বৈষয়িক সুবিধা প্রদানের ইচ্ছা ও সক্ষমতাকে তারা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। ফলে একনিষ্ঠ এবং নিঃস্বার্থভাবে অনুগত কর্মীকে বাদ দিয়ে সম্পদশালী, চালবাজ সদস্যকে তাঁরা সংশ্লিষ্ট এলাকার সংগঠনে পদাসীন (Office Bearer) করছেন। সত্যি বলতে কি, কেন্দ্রীয় ওয়ার্কিং কমিটি, উপদেষ্টা কমিটি কিংবা বিশেষ কমিটিতেও তাদের স্থান করে দেওয়া হচ্ছে। প্রত্যেক তাঁবেদার, মোসাহেবের পেছনে এক বা একাধিক বড় নেতা উন্নয়ক (Promoter) হিসেবে কাজ করেন। এসব তাঁবেদার সংগঠনের নীতি-আদর্শ সম্পর্কে ওয়াকিফহাল নয়, তারা সততা-নৈতিকতার ধার ধারে না; অনৈতিক, অসামাজিক এবং সন্ত্রাসী কাজে লিপ্ত হওয়া তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। এরাই হয়ে উঠেন সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদাসীন ব্যক্তি রূপে।
পদাসীন হওয়ার পর তাদের অপকর্মের দ্বার খুলে যায়। পদ-পদবি ব্যবহার করে তারা অর্থসম্পদ বৈষয়িক সুযোগ-সুবিধা সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এ লক্ষ্যে যেকোনো অনৈতিক, অসামাজিক কাজ করতে তারা দ্বিধান্বিত হয় না। সাধারণ মানুষের সুবিধা-অসুবিধা, দুঃখ-কষ্ট, যন্ত্রণা-ক্ষতি এসবের প্রতি তারা ধার ধারে না। যা করলে তাদের স্বার্থসিদ্ধি হয় তা-ই তারা করে যায়। কেউ বাধা দিলে তাকে হেনস্তা করতে প্রবৃত্ত হয়। আইন-কানুন, বিধি-বিধান অবলীলাক্রমে তারা এড়িয়ে যায়। তারা বিশ্বাস করে যে জনবল-ধনবলের বদৌলতে যেকোনো অপকর্ম-অপরাধ করে তারা পার পেয়ে যাবে। বাস্তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাদের বিশ্বাস জয়ী হয়। তারা হয়ে উঠে অপ্রতিরোধ্য। সরকারের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সাধারণ প্রশাসনের কর্মকর্তা, ঊর্ধ্বতন রাজনৈতিক নেতা-নেত্রী সবার কাছে উপহার-উপঢৌকন পৌঁছে যায়। প্রয়োজনমতো আর্থিক সমর্থনও পৌঁছে দেওয়া হয়। কখনো চাহিদা মোতাবেক, কখনো না চাইতেই। এরূপ দান-অনুদান, সাহায্য-সমর্থন পেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, বেসরকারি এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা অপরাধী-সন্ত্রাসীর প্রতি কৃতার্থ থাকেন। এদের বিরুদ্ধে তাঁরা ব্যবস্থা গ্রহণ করেন না; বরং পরোক্ষভাবে এদের যাবতীয় অপরাধ-অপকর্মকে সমর্থন-সহযোগিতা দিয়ে যান। রাষ্ট্র, সমাজ এবং সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
পদাসীন দুর্বৃত্তরা রাতারাতি ক্ষমতাধর হয়ে উঠে না। তারা সাধারণত নিম্নবিত্ত বা নিম্ন মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তান। সুযোগ পেয়ে দাঁও মেরে প্রথমে কিছুটা সচ্ছলতা অর্জন করে। তারপর ‘গডফাদার’ বা ‘গডমাদার’-এর হাত ধরে ওপরে উঠতে থাকে। গডফাদার, গডমাদার বিনিময়ে যে বৈষয়িক সুবিধা পান, তা নিতান্ত অপ্রতুল নয়। ব্যক্তি বিশেষের কাছে অনুপার্জিত আয়ের (Unearned income) একটা বড় আনন্দ রয়েছে। ‘ফাদার-মাদার’রা সে আনন্দ অবারিতভাবে উপভোগ করেন। দলে তাদের গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান খাজনা সংগ্রহের (Rent Seeking) সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়। বাড়তি আয়ের সুযোগ নেতা-নেত্রীর সঙ্গে দুর্বৃত্ত সদস্যের একধরনের মেলবন্ধন সৃষ্টি করে। দুর্বৃত্ত সদস্য সাধারণ গোছের সমস্যায় পড়লে ‘ফাদার-মাদার’ নেতা-নেত্রীরা তার সাহায্যে এগিয়ে আসেন, তাকে সুরক্ষা দেন। এ ধরনের সুরক্ষা দুর্বত্ত সদস্যকে সাহস জোগায়, তাকে অপকর্মে উৎসাহিত করে, তাকে বেপরোয়া করে তোলে। অত্যাচারে অতিষ্ঠ হলেও সাধারণ মানুষ দুর্বত্ত সদস্যের কেশাগ্র স্পর্শ করতে পারে না। তারা নীরবে অভিশাপ দিয়ে অপকর্ম সহ্য করে। অসুবিধা হয়, যখন ক্ষমতাধর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনী তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলে আদালতে সোপর্দ করে বসে। একই সঙ্গে গণমাধ্যমে তার কীর্তি-কলাপ প্রকাশ করে দেয়। ‘গডফাদার-মাদার’ বুঝতে পারেন এ সময় দুর্বৃত্ত সদস্য থেকে সরে থাকা বাঞ্ছনীয়। দুর্বৃত্ত সদস্যের সঙ্গে মেলবন্ধন তো দূরের কথা, তাদের সঙ্গে সাধারণ সম্পর্কের কথাও তারা অস্বীকার করেন। এককথায় দুর্বৃত্ত সদস্যকে তারা চটজলদি বিসর্জন দেন। সংগঠন থেকে পরিত্যক্ত হলে দুর্বৃত্তের পতন ঘটে। তার প্রভাব ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হতে থাকে। কাছের মানুষরা দূরে সরে যায়; হারিয়ে যায়। দুর্বৃত্ত সদস্যও একসময় প্রভাব-প্রতিপত্তি হারিয়ে ঝোড়ো কাকের অবয়বে বেঁচে থাকে। বেশির ভাগ সময় তার করুণ অন্তর্ধান ঘটে।
আমাদের রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা যদি অনৈতিক আয় ও সম্পদের লোভ-লালসা পরিহার করে কালোত্তীর্ণ নৈতিক মূল্যবোধ আঁকড়ে থাকেন, তবে জঘন্য অপরাধী দলে পদাসীন হওয়া তো দূরের কথা, অনুপ্রবেশই করতে পারবে না। দলের বহির্বৃত্তে অবস্থান করে সময় বিশেষে দলকে নির্দোষ সমর্থন জোগাবে, বিনিময়ে দল থেকে কোনো পদ-পদবি বা বৈষয়িক সুবিধা দাবি করবে না। সন্ত্রাসী-অপরাধীরা তাদের জগতে থাকবে। রাজনৈতিক দলের সংগঠনিক বা নীতিনির্ধারণী বিষয়ে তারা নাক গলাবে না। রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীদের বেশি কাছে তারা ঘেঁষবে না, তাদের পিঠে হাত রেখে কথা বলবে না। বড়জোর দূর থেকে সালাম দিয়ে কেটে পড়বে।
পদ-পদবি থেকে জঘন্য অপরাধী, সন্ত্রাসী, দখলদার, প্রতারকদের সরিয়ে রাজনৈতিক দলকে কলুষমুক্ত করতে হলে রাজনীতিকে রাজনীতিবিদদের হাতে ফিরিয়ে দিতে হবে। বিশাল অর্থসম্পদের লোভ-লালসা থেকে রাজনীতিবিদদের সরে আসতে হবে। রাজনৈতিক মূল্যবোধকে কোনোক্রমে বিসর্জন দেওয়া যাবে না। রাজনীতিবিদদের মূল কাজ দেশ ও জনগণের সেবা। জনগণের ভালোবাসা এবং দেশের কল্যাণ হচ্ছে তাদের বড় সম্পদ। অপরাধীদের দেওয়া অর্থসাহায্য, উপহার-উপঢৌকন রাজনীতিবিদদের চরিত্র নষ্ট করে, মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটায়। পরিণামে সংগঠন এবং রাজনীতিকের সর্বনাশ ডেকে আনে। কোনো অসতর্ক মুহূর্তে অপরাধী, সন্ত্রাসীরা যাতে রাজনীতিবিদদের পকেটে অথবা তার ঘরে পাপের অর্থ-সম্পদ পাঠিয়ে দিতে না পারে সে ব্যাপারে নেতা-নেত্রীকে সাবধান থাকতে হবে। নিজে সৎ হলেই হবে না, অসৎ ব্যক্তি কিংবা জঘন্য অপরাধী যেন সৎ রাজনীতিকদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বা নাম ব্যবহার করে অন্যায় সুবিধা না নিতে পারে, অন্যায় অর্থ অর্জন না করতে পারে অথবা সংগঠনে প্রভাব বিস্তার না করতে পারে সৎ রাজনীতিবিদ তার প্রতি কঠোর দৃষ্টি রাখবেন। ছোট ছোট ফাঁক দিয়ে বিষধর সাপ ঘরে ঢুকে পড়ে। সে ফাঁকগুলো বন্ধ করতে হবে। নিদেনপক্ষে তার প্রতি নিরন্তর সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। একটু কষ্ট হলেও ফাঁকগুলো বন্ধ করে দেওয়াই শ্রেয়।
লেখক: সাবেক মন্ত্রিপরিষদসচিব ও পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান