বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
ইসকন ইস্যুতে দেশি-বিদেশি ইন্ধন থাকতে পারে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা, যে নির্দেশ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তাদের লেজ রেখে গেছে : তারেক রহমান আইনজীবীকে ‘কুপিয়ে হত্যা করল’ ইসকন সদস্যরা অনির্দিষ্টকালের জন্য সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুল বন্ধ ঘোষণা অহিংস গণঅভ্যুত্থানের আহ্বায়কসহ ১৮ জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ ঢাকা ও চট্টগ্রামে ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনায় যুক্ত থাকলে ছাড় দেয়া হবে না : আসিফ মাহমুদ চিন্ময়কে গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়ে ভারতের বিবৃতি মানুষ কেন তাদের ওপর বিক্ষুব্ধ, গণমাধ্যমের তা স্পষ্ট করা উচিত : নাহিদ ইসলাম

যৌন হয়রানির ঘটনা বারবার, প্রকাশ্যে এলে শুরু হয় তোড়জোড়

বিডি ডেইলি অনলাইন ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২০ মার্চ, ২০২৪
  • ৩৮ বার

দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে একের পর এক যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটছে। শিকার হচ্ছেন ছাত্রীরা। কখনো কখনো নারী শিক্ষকেরাও ভুক্তভোগী হচ্ছেন।

দেশের শীর্ষ পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ে গত দুই বছরে ২৭টি যৌন হয়রানির ঘটনা পাওয়া গেছে। এসব ঘটনায় অভিযোগ জমা পড়েছে যৌন হয়রানিবিষয়ক অভিযোগ জানাতে গঠিত ‘অভিযোগ কমিটি’তে। হাইকোর্টের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এই কমিটি গঠন করা হয়। তবে অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটির কার্যকারিতা কম। অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা এই কমিটির কথা জানেনই না।

শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বলছেন, অনেক অভিযোগ এই কমিটিতে জমা হয় না। অনেক ঘটনা শিক্ষার্থীরা গোপন রাখেন হয়রানির ভয়ে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানালেও তা গোপন রাখা হয়। ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। তবে ঘটনা প্রকাশ্যে এলে সক্রিয় হয় প্রশাসন।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা যৌন হয়রানির অভিযোগ করার পর তা গোপন রাখে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রক্টর কার্যালয়। তারা ঘটনাটিতে ব্যবস্থা নেয়নি। ‘হয়রানি ও হুমকি’র মুখে ফাইরুজ ১৫ মার্চ কুমিল্লায় নিজের বাড়িতে আত্মহত্যা করেন। ঘটনার আগে ফেসবুকে লিখেছেন, তাঁর সহপাঠী রায়হান সিদ্দিকী আম্মান এর জন্য দায়ী। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ছেলেটির পক্ষ নিয়ে তাঁর (ফাইরুজ) সঙ্গে বাজে আচরণ করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অভিযোগ কমিটি কী কাজ করে, সে বিষয়ে বারবার তথ্য চেয়েও পায় না বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিযোগ কমিটি যে খুব একটা কার্যকর নয়, সেটি ইউজিসির চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীরের কথায়ও সামনে এসেছে।

ইউজিসিতে আসার আগে অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর দুই মেয়াদে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন। তিনি বলেন, বাস্তবতা হলো, যত ঘটনা ঘটে তার ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে ভুক্তভোগী অভিযোগই দায়ের করেন না। কারণ, ভুক্তভোগীরা ভাবেন অভিযোগ দিলে বিচার না-ও হতে পারে। আবার বিচার হলেও পরে এ নিয়ে বিপদে পড়ার আশঙ্কা আছে। তিনি বলেন, অভিযোগ কমিটি থাকলেও বাস্তবে অধিকাংশই সক্রিয় নয়।

অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর মনে করেন, যৌন হয়রানি প্রতিরোধে সচেতনতা দরকার। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগপ্রক্রিয়ার কাঠামোও বদলাতে হবে।

যত অভিযোগ

এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৯ সালে হাইকোর্ট যৌন হয়রানি প্রতিরোধে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অভিযোগ কমিটি গঠনের নির্দেশনা দিয়েছিলেন। ইউজিসির সূত্র জানিয়েছে, দেশের ৪৫টি পাবলিক ও ৯৭টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে, যা সেল নামেও পরিচিত। দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৫৫, বেসরকারি ১১৪ (কয়েকটি কার্যক্রমে নেই)।

অভিযোগ কমিটিতে যে ২৭টি অভিযোগ জমা পড়েছে তার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩টি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬টি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২টি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪টি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২টি।

ইউজিসির চেয়ারম্যানের কাছে জমা দেওয়া মানবাধিকার কমিশনের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত নভেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন এক শিক্ষার্থী। এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে কমিশনকে জানাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে। ২১ মার্চ প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা। ওই শিক্ষককে তদন্তকালে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজ থেকে বিরত রাখা হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে গত মাসে। ওই শিক্ষক তিন মাসের ছুটিতে রয়েছেন এবং ঘটনাটির তদন্ত চলছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় দুই বছর ধরে অভিযোগ কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন অধ্যাপক জিনাত হুদা। তিনি  বলেন, তাঁর সময়কালে এখন পর্যন্ত তিনটি অভিযোগ এসেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, তিনটির মধ্যে দুটির তদন্ত শেষ হয়েছে। আরেকটি প্রক্রিয়াধীন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে গত পাঁচ বছরে পাঁচটি অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে দুটি ২০২২ সালের জুলাইয়ের পর জমা পড়ে। পাঁচটিতেই অভিযুক্তদের বিভিন্ন ধরনের শাস্তি হয়েছে। যেমন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ৩১ জানুয়ারি রসায়ন বিভাগের এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ করেছিলেন এক ছাত্রী। এ ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় ওই অধ্যাপককে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com