মৃত ব্যক্তি মূলত আল্লাহ পথের যাত্রী। কাজেই তাকে সেভাবেই পরিচ্ছন্ন করে সাজিয়ে পাঠাতে হবে। মৃত ব্যক্তিকে গোসল, কাফন ও সুগন্ধি মাখানো অনেক বড় সওয়াবের কাজ।
হাদিসে বর্ণিত হয়েছে- যে ব্যক্তি কোনো মৃতকে গোসল দেয়, কাফন পরায়, সুগন্ধি লাগিয়ে দেয়, খাটিয়া বহন করে নিয়ে যায়, জানাজা পড়ে এবং তার কোনো দোষ জেনে গেলে তা গোপন রাখে- সে ওই দিনের মতো পাপ থেকে মুক্ত হয়ে যায় যেদিন তার মা তাকে প্রসব করেছে। (ইবনে মাজাহ, হাদিস নম্বর ১৪৬২।)
লাশের সঙ্গে যাওয়া
মৃত ব্যক্তির খাটিয়া নেয়ার সময়ও লাশের সম্মানের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হয়। যেমন চারজন লোক খাটিয়া বহন করা, ধীর-স্থিরভাবে খাটিয়া নিয়ে চলা, মুসল্লিদের খাটিয়ার পেছনে পেছনে হেঁটে যাওয়া, খাটিয়া রাখার আগে মুসল্লিরা না বসা, লাশ দেখে দাঁড়ানো ইত্যাদি।
রাসূল (সা.) বলেন, যখন তোমরা লাশ দেখবে দাঁড়িয়ে যাবে এবং যে ব্যক্তি তার অনুসরণ করবে, সে যেন খাটিয়া রাখার আগে না বসে। (বুখারি, হাদিস নম্বর ৩১০৩।)
মৃতের শরীরে আঘাত না দেয়া
মৃত ব্যক্তির প্রতি এতটাই আদব ও সম্মান প্রদর্শন করতে হবে যেন কোনোভাবেই মৃত ব্যক্তির শরীরে আঘাত না লাগে। এ জন্য মৃত ব্যক্তিকে গোসল দেয়া, কাফন পরানো, নিয়ে চলা, কবরে নামানোসহ সব কাজে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
হাদিসে মৃত ব্যক্তির হাড় ভেঙে ফেলাকে জীবিত মানুষের হাড় ভেঙে ফেলার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। রাসূল (সা.) বলেন, মৃত ব্যক্তির হাড় ভেঙে ফেলা জীবিত মানুষের হাড় ভেঙে ফেলার মতো। (আবু দাউদ, হাদিস নম্বর ৩২০৯।)
জানাজার নামাজ আদায়
ইমানদার ব্যক্তিকে জানাজার মাধ্যমে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় চিরবিদায় জানানো হয়। এর মাধ্যমে মৃতের আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়।
রাসূল (সা.) বলেন, যদি একশজন মানুষ কোনো মৃত ব্যক্তির জানাজার নামাজ পড়ে এবং প্রত্যেকই যদি ওই ব্যক্তির জন্য সুপারিশ করে তবে আল্লাহতায়ালা তাদের সুপারিশ কবুল করেন। (মুসলিম, হাদিস নম্বর ২২৪১।)
মৃত ব্যক্তির জন্য ক্ষমা ও শান্তি প্রার্থনা করা
ইমানদার মানুষের মৃত্যুর সংবাদ পেলে তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করা জীবিতদের পক্ষ থেকে মৃত ব্যক্তির জন্য উত্তম উপহার।
রাসূল (সা.) বলেন মৃত ব্যক্তি তার পিতা-মাতা, ভাই ও বন্ধুর দিকে দোয়ার আশায় তাকিয়ে থাকে। আল্লাহতায়ালা কবরবাসীর কাছে পৃথিবীবাসীর ছোট্ট দোয়াকেও অনেক বড় করে উপস্থাপন করেন। (শোয়াবুল ইমান, হাদিস নম্বর ৯২৯৫।)
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়