সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :

আরো একটি পরাজয়, আরো একটি স্বপ্নভঙ্গ

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১১ নভেম্বর, ২০১৯
  • ৩৩১ বার
Mohammad Naim of Bangladesh bats during the 2nd T20I match between India and Bangladesh held at the Saurashtra Cricket Association Stadium, Rajkot on the 7th November 2019.Photo by Deepak Malik / Sportzpics for BCCI

ভারতের মাটিতে ভারতকে হারিয়ে টি-২০ শিরোপাজয়ের স্বপ্ন দেখছিল বাংলাদেশ। কিন্তু স্বপ্নটা স্বপ্নই রয়ে গেলো। খুব কাছে এসেও ধরা দিলো না। তিন ম্যাচ সিরিজের শেষটিতে ৩০ রানে হারলো বাংলাদেশ। হলো আরো একটি পরাজয়। আরো একটি স্বপ্নভঙ্গ। এ নিয়ে সপ্তমবারের মতো কোনো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের শিরোপা হাতছাড়া হলো বাংলাদেশের।

দিল্লিতে প্রথম টি-২০ ম্যাচ জিতে সিরিজ জয়ের স্বপ্ন বুনে বাংলাদেশ। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচেই হার। তাতে দমে যাননি টাইগাররা। তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে জয় তুলে নিয়ে ইতিহাস সৃষ্টির আশায় ছিল। সেটা সহজও করে এনেছিল তারা। তরুণ মোহাম্মদ নাঈম সেই দায়িত্বটি সুচারু রুপে করেও যাচ্ছিলেন। কিন্তু শিভাব দুবের বলে সাজঘরে ফিরে স্বপ্নভঙ্গের সুর তুলে গেলেন। সেই সুর বেদনাবিধুর হয়ে বাজলো শেষ সময়ে। ফলে টি-২০ সিরিজে পরাজিত হলো বাংলাদেশ।

সন্ধ্যায় টস জিতে ভারতকে ব্যাট করতে পাঠায় বাংলাদেশ। ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় ভারত। বাংলাদেশের পরিকল্পনাও এমনটা ছিল। সেই কাজটি সাড়েন বাংলাদেশের পেসার শফিউল ইসলাম। ইনিংসের নবম বলে ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে বোল্ড করেন শফিউল। আগের ম্যাচে ৪৩ বলে ৮৫ রান রোহিত এবার ২ রানের বেশি করতে পারেননি।

অধিনায়ককে হারানোর ধাক্কাটা সামলে উঠার চেষ্টা করেন আরেক ওপেনার শিখর ধাওয়ান ও লোকেশ রাহুল। দ্রুত রান তুলে বাংলাদেশের বোলারদের উপর চাপ সৃষ্টি করেন তারা। তবে পাওয়া প্লে’র শেষ ওভারে শফিউলের হাত ধরে দ্বিতীয় সাফল্য পায় বাংলাদেশ। ১৬ বলে চার বাউন্ডারি মেরে ১৯ রান করা ধাওয়ানকে থামিয়ে দেন শফিউল।

৩৫ রানের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারিয়ে চাপে পড়ে ভারত। তৃতীয় উইকেটে সর্তকতার সাথে বড় জুটি গড়ার চেষ্টা করেন রাহুল ও শ্রেয়াস আইয়ার। মারমুখী মেজাজে রানের চাকা ঘুড়িয়েছেন রাহুল। ৩৩তম বলেই টি-২০ ক্যারিয়ারে ষষ্ঠ হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান রাহুল। হাফ-সেঞ্চুরির পর ভুল শট খেলে নিজের ইনিংসের সমাপ্তি টানেন রাহুল। বাংলাদেশের পেসার আল-আমিনের শিকার হবার আগে ৭টি চারে ৩৫ বলে ৫২ রান করেন তিনি। আইয়ারের সাথে ৪১ বলে ৫৯ রান যোগ করেন রাহুল।

রাহুলের ফিরে যাবার পর রানের জন্য মারমুখী হয়ে উঠেন আইয়ার। আগেই ২টি ছক্কা হাঁকানো আইয়ার ১৫তম ওভারে বাংলাদেশের স্পিনার আফিফ হোসেনের প্রথম তিন বলেই টানা ছক্কা মারেন। ঐ ওভারের পঞ্চম বলে ১ রান নিয়ে ২৭তম বলে টি-২০ ক্যারিয়ারে প্রথম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান আইয়ার।

১৭তম ওভারের প্রথম বলে ভারতের উইকেটরক্ষক ঋসভ পান্থকে ৬ রানে বোল্ড করেন সৌম্য। একই ওভারের পঞ্চম বলে আইয়ারকেও বিদায় দিয়ে ভারতের রানের গতি কমানোর পথ তৈরি করেন সৌম্য। ১১তম ম্যাচে প্রথম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে ৩৩ বলে ৩টি চার ও ৫টি ছক্কায় ৬২ রান করেন আইয়ার।

কিন্তু পরের দিকে মনিষ পান্ডিয়ার ১৩ বলে ৩টি চারে অপরাজিত ২২ ও শিবম দুবের ৮ বলে ৯ রানে ৫ উইকেটে ১৭৪ রানের সংগ্রহ পায় ভারত।

বাংলাদেশের শফিউল ও সৌম্য ২টি করে উইকেট নেন।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকে মারকুটো ব্যাটিংয়ের পরিকল্পনা নিয়ে নেমেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু কিছু সময় পরেই সেই পরিকল্পনা বাদ দিতে হয়। কারণ তৃতীয় ওভারেই দুই বলের ব্যবধানে দুই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। লিটন দাস মিড উইকেট দিয়ে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ দেন। দুর্দান্ত কায়দায় খানিকটা দৌড়ে ওয়াসিংটন সুন্দর ক্যাচটা নেন। ক্যাচ ধরার পর শিশিরে সিক্ত ঘাসে তার পা কিছুটা পিছলে গেলেও বল হাত থেকে ছাড়েননি। লিটন আরেকবার সিরিজে ফিরলেন মাথা নিচু করে। ৮ বলে ৯ রান তুলে। তিন ম্যাচের সিরিজে ব্যর্থ বাংলাদেশের এই ওপেনার।

লিটনের আউটের পরই সৌম্য সরকার ওয়ানডাউনে খেলতে নেমে দীপক চাহারের পরের বলে ক্যাচ তুলে দেন। ত্রিশ গজের বৃত্তের কোনায় দাঁড়ানো শিভম দুবে ক্যাচটি ধরতে কোনো ভুল করেননি। শূন্য রানে আউট সৌম্য।

তৃতীয় ওভার শেষে ১২ রানে ২ উইকেট হারানো বাংলাদেশের ডাগআউটের পরিবেশ তখন দিক হারানো নাবিকের মতো। জয়ের জন্য ১৭৫ রানকে অনেক দূরের পথ মনে হচ্ছিল। স্কোরবোর্ডে ১৩ রানের সঞ্চয়ে তখন নেই ২ উইকেট।

তবে নাঈম ছিলেন। তিনি মারকুটে ব্যাটিংয়ে জয়ের স্বপ্ন দেখিয়ে যাচ্ছিলেন। দলীয় সংগ্রহ যখন ১২৬ তখনই সাজঘরে ফিরলেন নাঈম। ১০ বাউন্ডারি ও দুটি ছক্কার অনবদ্য ৮১ রানের একটি ইনিংস খেলে বিদায় নিলেন এই ওপেনার। সাথেই বিদায় নিলো বাংলাদেশের জয়ের স্বপ্ন।

ক্রিজে এলেন আফিফ হোসেন। কিন্তু শিভমের বলে রানের খাতা না খুলেই ফিরলেন তিনি। এরপর দীপক চাহালের বলে ফিরলেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ। ফিরলেন বাকি তিনজনও।

১৮ রানে ৫ উইকেটের পতন হলো। বাংলাদেশ গুটিয়ে গেলো ১৪৪ রানে। ৩০ রানে জয় নিয়ে সিরিজ জিতলো ভারত।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com