তার ব্যাট মানেই ছিল চার-ছক্কার ফুলঝুড়ি। বাউন্ডারি, ওভার বাউন্ডারিতেই রান করতে পছন্দ করতেন। এক দিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে (ওডিআই) মাত্র ৩৭ বলে করেছিলেন সেঞ্চুরি, যা অটুঁট ছিল অনেক দিন। এখনো একদিনের ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি ছক্কা তারই দখলে। এতক্ষণ যার রেকর্ড নিয়ে কথা হচ্ছে তিনি পাকিস্তানের সাবেক অলরাউন্ডার শহীদ আফ্রিদি। তুমুল জনপ্রিয় ক্রিকেটারের আজ জন্মদিন। তার জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়েছে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)।
শহীদ আফ্রিদি ১৯৮০ সালের ১ মার্চ পাকিস্তানের খাইবার পাকতুনখা প্রদেশের পেশোয়ার বিভাগের খাইবার জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। আজ সোমবার তার জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়েছে আইসিসি। নিজেদের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে আইসিসি ৪২ বছরে পা দেওয়া শহীদ আফ্রিদির জন্মদিনে এ শুভেচ্ছা জানান।
আইসিসির দেওয়া ফেসবুক পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘তখন : তার প্রথম ওডিআইয়ে ৩৭ বলে সেঞ্চুরি। এখন : ওডিআইয়ে সবচেয়ে বেশি ছক্কা। শুভ জন্মদিন শহীদ আফ্রিদি।’
১৯৯৬ সালের ২ অক্টোর পাকিস্তানের হয়ে প্রথমবারের মতো মাত্র ১৬ বছর বয়সে কেনিয়ার বিপক্ষে মাঠে নেমেছিলেন শহীদ আফ্রিদি। ১৯৯৬ সালের ৪ অক্টোবর নেমেছিলেন কেনিয়ার নাইরোবিতে ছিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ। এ ম্যাচেই বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলন আফ্রিদি। মাত্র ৩৭ বলে করেন সেঞ্চুরি। ৪০ বলে করেছিলেন ১০২। ওডিআইয়ে দ্রুততম সময়ে সেঞ্চুরি করার আফ্রিদির এ রেকর্ড অনেক দিন অক্ষুন্ণ ছিল।
শহীদ আফ্রিদি জাতীয় দল থেকে অবসর নিলেও ক্রিকেট ছাড়েননি এখনো। খেলে যাচ্ছেন দেশি-বিদেশি ফ্রাঞ্চাইজি লিগে। তার পারফর্ম্যান্সের কাছে এখনো হার মানছে তরুণরা। সম্প্রতি খেলেছেন আবুধাবি টি-টেন লিগে। খেলা ছাড়ার বিষয়ে সম্প্রতি তিনি জানিয়েছেন, ভক্তদের ইচ্ছায় আরও দু-এক বছর ব্যাট-বলের লড়াই চালিয়ে যাবেন তিনি।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রেকর্ড ৪৭৬টি ছক্কা হাঁকানোর কীর্তিও আছে শহীদ আফ্রিদির। এছাড়া বল হাতে টি-টোয়েন্টিতে ৯৭ উইকেট নিয়েছেন, যা সংক্ষিপ্ত এই ফরম্যাটে এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ক্যারিয়ারে ৩৯৮টি ওয়ানডে ম্যাচে ৮০৬৪ রান আর ৩৯৫ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েছেন আফ্রিদি। পাকিস্তানের হয়ে একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে ৫২৩টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার রেকর্ডও আছে তার।
২৭ টেস্ট খেলা আফ্রিদি ক্যারিয়ারে মাত্র ৫ সেঞ্চুরি আর ৮ ফিফটি রয়েছে। অন্যদিকে ৯১ টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে রয়েছে ১৪১৬ রান করেন।
পুরো ইনিংসে নিজের মোট রানের অধিকাংশ রানই আফ্রিদি সংগ্রহ করেন চার-ছক্কা মেরে। এ জন্য তার নামের আগে ভক্তরা যোগ করেছে ‘বুম বুম’। তবে ব্যাটসম্যান আফ্রিদির চেয়েও ম্যাচ ঘোরাতে বল হাতে কারিশমা দেখান আফ্রিদি।
৩৯৮ ওয়ানডেতে নিয়েছেন ৩৯৫ উইকেট। সংখ্যায় উইকেট অনেক না হলেও স্পিন বোলার আফ্রিদির বলের গতি প্রায়ই ব্যাটসম্যানদের বিভ্রান্ত করে দেয়।
আফ্রিদির সবচেয়ে বড় কীর্তি পাকিস্তানের হয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতা। এছাড়া ২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অভিষেক আসরে সিরিজ সেরা আর পরের আসরের ফাইনালে ম্যাচসেরা নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।২০০৯ সালে দ্বিতীয় আসরে পাকিস্তান প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতার স্বাদ পায়। সেবার সেমিফাইনাল আর ফাইনালে ফিফটি করেছিলেন তিনি।