মুখের ক্যান্সার বর্তমান সময়ের একটি জটিল রোগ। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করালে এই ক্যান্সার দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরিণতি মৃত্যু।
সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় করা গেলে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ জীবন যাপন করা সম্ভব। মুখের ক্যান্সারের সঠিক চিকিৎসা দেশেই রয়েছে।
চিকিৎসকদের মতে, মুখের ক্যান্সার শনাক্তের সহজ উপায় রয়েছে। মুখের মধ্যে কোনো ঘা বা ক্ষত যে কোনো বর্ণের হোক, ব্যথা হোক বা না হোক যদি দীর্ঘ সময় রয়ে যায় তাহলে সেটিকে অবহেলা করা যাবে না। ক্ষতের ধরন নিশ্চিত করতে ডেন্টাল ক্লিনিকে যেতে হবে, সাজসজ্জা বা স্বল্প খরচ ভেবে যেন অনুমোদনহীন চিকিৎসাকেন্দ্রে অপচিকিৎসার শিকার হতে না হয়।
মুখের ক্যান্সারের লক্ষণ ও চিকিৎসা নিয়ে যুগান্তরকে পরামর্শ দিয়েছেন রাফিস ডেন্টাল অ্যান্ড ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা ও ডিআইএবির সভাপতি মেজর জেনারেল ডা. গোলাম মহিউদ্দিন চৌধুরী।
তিনি বলেন, সাধারণত মুখের ক্যান্সার মুখের ভিতর সাদা বা লাল বর্ণের ক্ষত হয়ে শুরু হতে পারে বা কোথাও ফুলে যেতে পারে, কোথাও ব্যথা হতে পারে, অবস হয়ে যেতে পারে এবং কারো যদি বাঁধানো দাঁত থাকে যাকে আমরা ডেনচার বলি সেই দাঁতগুলো উঁচু হয়ে যেতে পারে, জিহ্বা নাড়াতে সমস্যা হতে পারে, খাবার গিলতে বা চিবাতে সমস্যা হতে পারে- এসব সমস্যা দেখা দিলেই সাবধান হতে হবে যে তার মুখে ক্যান্সারের কোনো পূর্ব লক্ষণ আছে কিনা।
যখনই কোনো সন্দেহজনক আচরণ লক্ষণীয় হবে তখনই তা চিহ্নিত করে রোগ নিরূপণ করতে হবে। সঠিকভাবে রোগ নিরূপণ করার জন্য মুখের সেই অংশের টিস্যু নিয়ে একটি পরীক্ষা করে বায়োপসি করা হয়। এছাড়া সিটি স্ক্যান, এমআরঅ্যাই ও এক্সরের সাহায্য নেয়া হয়। কখনো কখনো ক্যান্সার যথেষ্ট বড় হয়ে থাকে যার সীমা বোঝা যায় না, সেই সীমা বোঝার জন্য রেডিওলোজি পরীক্ষা করা হয়। যখনই রোগ নিরূপণ হয়ে গেল তখন আর দেরি করা উচিত নয়, তখনই চিকিৎসা শুরু করে দেয়া উচিত।
চিকিৎসা
মুখের ক্যান্সারের তিন প্রকার চিকিৎসা রয়েছে- প্রথমত সার্জারি, দ্বিতীয়ত কেমোথেরাপি, তৃতীয়ত রেডিওথেরাপি।
যখন ক্যান্সারের আকার অনেক ছোট থাকে তখন সার্জারি বেশি ফলপ্রসূ। এজন্য প্রত্যেকের উচিত প্রাথমিক অবস্থায় ক্যান্সারের চিকিৎসা দ্রুত শুরু করা। দেশে ক্যান্সারের জন্য ভালো চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে এবং অনেক ভালো চিকিৎসক রয়েছেন। কেমোথেরাপির জন্যেও ভালো ব্যবস্থা রয়েছে এমনকি রেডিওথেরাপির জন্যও অনেক ভালো ব্যবস্থা রয়েছে।
কিন্তু ক্যান্সারটি অনেক বড় হয়ে যায় এবং সার্জারির পর্যায়ে না থাকে তখন কেমোথেরাপি দিয়ে বা রেডিওথেরাপি দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কিন্তু সারিয়ে তোলা সম্ভব নয়। সব চিকিৎসা শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও রোগীর উচিত চিকিৎসকের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করা যেন এই রোগ আবার হতে না পারে এবং আবার যদিও হয় তাহলে দ্রুত চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করা।