কৃষকের জীবন যাত্রার মান উন্নয়নে সরকার কাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ‘আমরা মঙ্গা শব্দটি দেশ থেকে তুলে দিতে চাই’। আজ শুক্রবার বিকেলে রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার আলমপুরে মাঠ দিবস ও শস্যকর্তন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন কৃষি মন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘এখন কৃষিতে উন্নত মানের প্রযুক্তি যুক্ত হয়েছে। উন্নত মানের বীজ ব্যবহার করে কৃষকেরা ফসলের সর্বোচ্চ উৎপাদন করছেন। আমরা টেকসই কৃষি উন্নয়নের জন্য নানা ধরনে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। বিনাধান-১৬ ও বিনাধান-১৭ জাতের চারা রোপণের ১০০ দিনের মধ্যে খেত থেকে ধান কর্তন করা যায়। এ ধান চাষ করলে কৃষক বাড়তি আবাদের সুযোগ পাবেন। ভালো উৎপাদনও হয় এ ধানের। এই ধান কেটে সরিষা, আলুর চাষ করে আউশ ধরা যায়। এ জাতের ধান কৃষকদের মধ্যে বিপ্লব ঘটাবে।’
মন্ত্রী ছাড়াও ওই সভায় বক্তব্য দেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব (গবেষণা) কমলারঞ্জন দাস, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মো. আসাদুল্লাহ, রংপুরের জেলা প্রশাসক আসিব আহসান, মহাপরিচালক বিনা ময়মনসিংহ ডা. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান লিটন, ইউএনও আমিনুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আতিয়ার রহমান, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলী হোসেন। সভাটি পরিচালনা করেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঊর্মি তাবাসসুম। এর আগে ভীমপুর মাঠে বিনা ধান-১৬ কর্তন করে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের কৃষি সচিব মেসবাহুল ইসলাম। উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের আয়োজনে অনুষ্ঠানটি বাস্তবায়ন করেন বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, রংপুর উপকেন্দ্র।
প্রসঙ্গত, উত্তরের মঙ্গা দূরীকরণসহ সমগ্র দেশের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধির জন্য বিনা’র বিজ্ঞানীরা উদ্ভাবন করেছেন আমন মৌসুমের জন্য উচ্চ ফলনশীলন ও স্বল্প জীবনকাল বিশিষ্ট আগাম জাতের বিনাধান-১৬ ও বিনাধান-১৭। বিনাধান-১৬ জীবনকাল মাত্র ৯৫-১০০দিন। গড় উৎপাদন প্রতি বিঘায় ২৪ মণ ও বিনাধান-১৭ জীবনকাল ১১০-১১৫দিন। গড় উৎপাদন বিঘাপ্রতি ২৭ মণ। এ জাতের ধানের জীবনকাল কম হওয়ায় উৎপাদন খরচও কম। অতীতে আমন ধানের জীবনকাল ছিল ১৬০-১৭০ দিন। ফলে কার্তিকের মঙ্গ দেখা যেত। বিনাধান-১৬ ও বিনাধান-১৭ চাষের ফলে মরা কার্তিককে ভরা কার্তিকে রুপান্তিরিত করা যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হচ্ছে।