যারা এখনই সন্তান নিতে চাইছেন না, আবার নিয়মিত কোনো জন্মনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা (যেমন পিল বা কনডম) ব্যবহারেও অনীহা, তাদের জন্য ন্যাচারাল মেথড একটি উপায় হতে পারে। এটা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক স্বীকৃত একটি পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে ওভুলেশন বা ডিম্বাণু স্ফুরণের সময়টি হিসাব করে ওই সময়ে সহবাস বন্ধ রেখে বা স্বল্প সময়ের জন্য কোনো জন্মনিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।
কীভাবে গণনা করতে হবে
যে নারীরা প্রাকৃতিক বা ন্যাচারাল পদ্ধতি ব্যবহার করতে চান, তাদের পূর্ববর্তী ছয় মাসের মাসিকের হিসাব রাখতে হবে। একবার মাসিক শুরু হওয়া থেকে পরবর্তী মাসিক শুরু হওয়া পর্যন্ত কত দিনের ব্যবধান থাকে, তা লিখে রাখতে পারলেই ভালো। তারপর সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত ব্যবধানের মাসিকচক্র থেকে ১৮ দিন বিয়োগ করতে হবে আর সবচেয়ে দীর্ঘ মাসিক চক্র থেকে ১১ দিন বিয়োগ করতে হবে।
যেমন কারও মাসিকচক্রের হিসাব যদি এমন হয় যে ২৫ থেকে ৩০ দিন, তাহলে হিসাবটা হবে: ২৫-১৮ = ৭ ও ৩০-১১ = ১৯
তাহলে তার ওভুলেশনের সম্ভাবনা মাসিকের ৭ম থেকে ১৯তম দিন পর্যন্ত। এ সময়টাকে ডেঞ্জার পিরিয়ড বা ফার্টাইল পিরিয়ড বলে। এ সময় সহবাস বন্ধ রাখা বা স্বামী কনডম ব্যবহার করলে গর্ভধারণের ঝুঁকি কমে যায়।
সীমাবদ্ধতাগুলো কী
এই পদ্ধতি তাঁদের জন্যই প্রযোজ্য, যাঁদের মাসিক নিয়মিত। অনিয়মিত মাসিক যাঁদের, তাঁদের জন্য এ পদ্ধতি ফলপ্রসূ হবে না।
নানা রকম গবেষণায় দেখা গেছে, এ পদ্ধতির ফেইলর রেট অনেক বেশি, এমনকি ১৪ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে।
যারা বাচ্চা নিতে চান
যেসব দম্পতি বাচ্চা নিতে চাইছেন, তাঁরা ঠিক এভাবে হিসাব–নিকাশ করে ডেঞ্জার পিরিয়ডে সহবাস করলে ফলপ্রসূ হবে।
ওভুলেশন হওয়ার পর ডিম্বাণু সাধারণত ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত ভালো থাকে। আবার শুক্রাণু ৩-৫ দিন পর্যন্ত নারীর যোনিপথে জীবিত থাকতে পারে। এই পিরিয়ডে তাই প্রতিদিন সহবাস করতে হবে, এমন ধারণা ঠিক নয়। চিকিৎসকেরা সাধারণত এক দিন অন্তর সহবাসের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
কনসালট্যান্ট, স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগ, বিআরবি হাসপাতাল লিমিটেড