সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৪ পূর্বাহ্ন

শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব, কীভাবে বুঝবেন?

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৭ নভেম্বর, ২০২১
  • ১৬৯ বার

ক্যালসিয়াম একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খনিজ। এটি শক্তিশালী হাড় এবং দাঁতের গঠনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তা ছাড়া এটি হার্ট এবং শরীরের অন্যান্য পেশীগুলোর কার্যকারিতা ঠিক রাখতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। ক্যালসিয়ামের অভাবে অস্টিওপোরোসিস, অস্টিওপেনিয়া এবং আরও অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। আসুন জেনে নেওয়া যাক, ক্যালসিয়ামের অভাবে কী কী শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়।

১) পেশীর সমস্যা : ক্যালসিয়ামের অভাবজনিত লক্ষণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো- পেশীতে টান ধরা, ব্যথা হওয়া। ক্যালসিয়াম পেশী সংকুচিত এবং শিথিল করতে সহায়তা করে। এর অভাবে পেশীগুলো তাদের স্বাভাবিক টোন বজায় রাখতে পারে না। এর ফলে পেশীর দুর্বলতা, খিঁচুনি, যন্ত্রণার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।

২) অসাড়তা এবং শিহরণ : হাইপোক্যালসেমিয়ার অন্যতম উপসর্গ হলো হাত এবং পায়ে শিহরণ কিংবা ঝি-ঝি ধরা।  এ ছাড়া ক্যালসিয়ামের গুরুতর অভাবে শরীরে অসাড়তাও সৃষ্টি হতে পারে। আমাদের শরীরের প্রতিটি স্নায়ুকোষে এর প্রয়োজন। তাই শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব ঘটলে স্নায়ু কোষগুলো সংবেদনের অনুভূতি এবং সংকেত পাঠাতে বাধাপ্রাপ্ত হয়।

৩) অত্যন্ত ক্লান্তি বোধ : ক্যালসিয়ামের অভাবে শরীরে অত্যন্ত ক্লান্তি এবং অলসতা দেখা দিতে পারে।  এর ফলে অনিদ্রার সমস্যাও হতে পারে। এ ছাড়া হালকা মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা এবং ব্রেন ফগ হতে পারে, যার ফলে মনোযোগের অভাব, ভুলে যাওয়া এবং বিভ্রান্তি দেখা দিতে পারে।

৪) নখ এবং ত্বকের সমস্যা : দীর্ঘদিন ধরে যদি ক্যালসিয়ামের অভাব দেখা দেয়, তাহলে শুষ্ক ত্বক, শুষ্ক ও ভঙ্গুর নখ, রুক্ষ চুল, একজিমা, ত্বকের প্রদাহ, ত্বকে চুলকানির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই খাদ্যতালিকায় ভিটামিন এবং ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাদ্য রাখা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

৫) অস্টিওপেনিয়া এবং অস্টিওপরোসিস : হাড় ক্যালসিয়াম ভালভাবে সঞ্চয় করে রাখতে পারে। তাই শরীরে এর অভাব দেখা দিলে শরীর হাড় থেকে প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়াম শোষণ করতে শুরু করে। যার ফলে হাড়ের গঠন দুর্বল, ভঙ্গুর এবং আঘাতের প্রবণ হয়ে ওঠে। তা ছাড়া দীর্ঘদিন যদি এর অভাব থেকে যায় তাহলে হাড়ের খনিজের ঘনত্ব হ্রাস পায় এবং এটি শরীরকে অস্টিওপেনিয়ার দিকে নিয়ে যাতে পারে। আর এই অস্টিওপেনিয়ার থেকে পরবর্তী সময়ে অস্টিওপোরোসিসও সৃষ্টি হতে পারে। এ ক্ষেত্রে হাড়গুলো অত্যন্ত পাতলা হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি ফ্রাকচার প্রবণও হয়ে ওঠে।

৬) রিকেট : ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়ামের অন্যতম অভাবজনিত রোগ হলো রিকেট। এটি মূলত বাচ্চাদের একটি রোগ। ক্যালসিয়ামের অভাব হাড়কে নরম এবং দুর্বল করে তোলে। তা ছাড়া এটি হাড়ের স্বাভাবিক গঠনেও বাধা সৃষ্টি করে।

৭) দাঁতের সমস্যা দেখা দেয় : শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব দেখা দিলে দাঁতের ক্ষয়, ভঙ্গুর দাঁত, অকালে দাঁত পড়ে যাওয়া, মাড়ির সমস্যা এবং দাঁতের শিকড় দুর্বল হয়ে যাওয়ার মতো বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।

৮) PMS-এর সমস্যা বৃদ্ধি পেতে পারে : মহিলাদের শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব দেখা দিলে প্রিমেনস্ট্রুয়াল সিন্ড্রোম (PMS) এর গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে। ২০১৭ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, দুই মাস ৫০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়ামের নিয়মিত সেবন, অংশগ্রহণকারী মহিলাদের মেজাজ ভালো রাখার পাশাপাশি তরল ধারণ হ্রাস করতেও সহায়তা করে। তা ছাড়া ২০১৯ সালের আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, শরীরে ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়ামের অভাব মাসিক চক্রের দ্বিতীয়ার্ধে পিএমএসের সমস্যা বাড়িয়ে তুলতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com