সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৯ পূর্বাহ্ন

থ্যালাসেমিয়া : সামগ্রিক পরিস্থিতি ও করণীয়

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১১ জানুয়ারী, ২০২২
  • ৩২৪ বার

থ্যালাসেমিয়া একটি জন্মগত ও বংশগত রোগ- যার প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কম থাকা। বংশগত মানে, উত্তরাধিকার সূত্রে এ রোগের বিস্তার ঘটে মা-বাবার কাছ থেকে জিনের মাধ্যমে। এটি চলতে থাকে বংশপরম্পরায় প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে, যুগ যুগ ধরে আমাদের অজান্তেই। জিন (এবহব) হলো বংশগতির ধারক ও বাহক। তবে এটা একটা অনিরাময়যোগ্য। কিন্তু প্রতিরোধযোগ্য রোগ। এর প্রমাণ আমরা দেখতে পাই সাইপ্রাস, ইতালি বা গ্রিস- এসব দেশের দিকে তাকালেই। এসব দেশে এক সময় থ্যালাসেমিয়ার প্রাদুর্ভাব খুব বেশি ছিল। ১৯৭০ সালের দিকে এবং এক সময় এসব দেশকে থ্যালাসেমিয়া রোগীদের চিকিৎসার জন্য ইউরোপের অন্য দেশ থেকে রক্ত সংগ্রহ করতে হতো। বর্তমানে এসব উন্নত দেশে নতুন থ্যালাসেমিয়া রোগীর জন্ম নেই বললেই চলে। ইতালিতে এখন মাত্র ৮০ হাজারের মতো থ্যালাসেমিয়া রোগী আছেন। তাদের গড় বয়স ৪০-৫০ বছরের মধ্যে। সাইপ্রাসে এক সময় (১৯৬০-৭০ সাল) বিটা থ্যালাসেমিয়ার বাহকের খুব বেশি ছিল- প্রায় ১৪ শতাংশ। তবে বর্তমানে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার তথা সার্কভুক্ত দেশ মালদ্বীপে বিটা থ্যালাসেমিয়ার বাহকের হার সবচেয়ে বেশি এবং তা প্রায় ১৭ শতাংশ। এই রোগে আক্রান্ত শিশুকে হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি মোকাবিলা করার জন্য আজীবন তাকে অন্যের রক্তের ওপর নির্ভরশীল হয়ে বেঁচে থাকতে হয় অর্থাৎ তাকে আজীবন পরনির্ভরশীল হয়ে বাঁচতে হয়। রক্তের বিকল্প শুধুই রক্ত। থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগীদের রক্তের লোহিত কণিকাগুলো অতিতাড়াতাড়ি ভেঙে যায়। থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের রক্ত সাধারণ সুস্থ মানুষের তুলনায় ৮-১০ গুণ বেশি তৈরি হয়। কিন্তু তাদের লোহিত রক্তকণিকার আয়ুষ্কাল খুবই কম। আর এটিই তাদের জন্য রক্তস্বল্পতার (অহবসরধ) প্রধান কারণ। থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত কারও কারও লোহিত রক্ত কণিকা মাত্র ৮-১০ দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকে- যেখানে সুুস্থ মানুষের লোহিত রক্তকণিকাগুলো সাধারণত ১০০-১২০ দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকে। আর এই লোহিত রক্তকণিকার স্বল্পআয়ুর জন্য দায়ী জেনেটিক ত্রুটি অর্থাৎ গ্লোবিন জিনের গঠনে বিভিন্ন ধরনের ত্রুটি। এটিকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় মিউটেশন (গঁঃধঃরড়হ)।

আমাদের শরীরের ভেতর যে কোষগুলো (ঈবষষ) আছে, এর কেন্দ্রস্থলে থাকে নিউক্লিয়াস এবং তার মধ্যে (ঈবহঃৎব) থাকে ক্রোমোজোম (ঈযৎড়সড়ংড়সব)। বিজ্ঞানী স্ট্রাসবার্গার (ঝঃৎধংনঁৎমবৎ) ১৮৭৫ সর্বপ্রথম ক্রোমোজোম আবিষ্কার করেন। প্রত্যেক মানুষের নিউক্লিয়াসে ২৩ জোড়া ক্রোমোজোম থাকে। এর মধ্যে ২২ জোড়া অটোজোম এবং এক জোড়া সেক্স ক্রোমোজোম থাকে। কাজের ওপর ভিত্তি করে দেহজ বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণকারী ক্রোমোজোমকে অটোজম (অঁঃড়ংড়সব)- যার সংখ্যা ৪৪টি (২২ জোড়া) এবং যৌন বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণকারী ক্রোমোজোমকে যৌন বা লিঙ্গ নির্ধারক ক্রোমোজোম (ঝবী ঈযৎড়সড়ংড়সব) বলে এবং এগুলোর সংখ্যা ২টি (১ জোড়া)। পুরুষ বা ছেলেদের সেক্স ক্রোমোজোম দুটি ভিন্ন ভিন্ন (ঢণ) হয়। মেয়েদের দুটি সেক্স ক্রোমোজোম একই রকম- এগুলোকে বলা হয় (ঢঢ)। ক্রোমোজোমের কাজ হলো মাতা-পিতা থেকে জিন সন্তানসন্ততিতে বহন করে নিয়ে যাওয়া। এর মাধ্যমে আসলে দৃশ্যমান বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য মা-বাবা থেকে সন্তানের মধ্যে প্রবেশ করে। সাধারণত মানবদেহের প্রতিটি বৈশিষ্ট্যের জন্য এক জোড়া করে জিন দায়ী (জবংঢ়ড়হংরনষব) থাকে। এই এক জোড়ার একটি আসে মায়ের শরীর থেকে, আরেকটি আসে বাবার শরীর থেকে। এই জিন দুটির যে কোনো একটি সুস্থ (ঘড়ৎসধষ) থাকলে এই রোগের লক্ষণ প্রকাশ হয় না বা দেখা যায় না। এর অর্থ হলো- যখন কোনো দম্পতির উভয়ে অসুস্থ বা ত্রুটিপূর্ণ (অনহড়ৎসধষ) গ্লোবিন জিন বহন করেন এবং দুর্ভাগ্যক্রমে উভয়ের ত্রুটিপূর্ণ কিংবা অসুস্থ জিন দুটি শিশুর শরীরে প্রবেশ করে, তখন ওই শিশু থ্যালাসেমিয়া রোগী হিসেবে জন্মগ্রহণ করে। অর্থাৎ অসুস্থ বা ত্রুটিপূর্ণ জিন বহনকারী কিংবা বাহকদের মধ্যে বিয়ে না হওয়াই থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধের একমাত্র কার্যকর উপায়। কিন্তু থ্যালাসেমিয়া জিন বহনকারী সবাই যে রোগী বা বেঁচে থাকার জন্য অন্যের রক্তের ওপর নির্ভরশীল থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত অথবা রোগী হবেন, তা নয়। এ জন্য থ্যালাসেমিয়াকে বলা হয় অটোজোমাল রিসেসিভ (অঁঃড়ংড়সধষ জবপবংংরাব) ডিজঅর্ডার। এর অর্থ হলো দুটি ত্রুটিপূর্ণ জিন ছাড়া এ রোগের লক্ষণ প্রকাশ হবে এবং শুধু একটি জিনের ত্রুটি থাকলে তাদের বাহক (ঈধৎৎরবৎ বা ঞৎধরঃ) হিসেবে আখ্যায়িত করি। কারণ তারাও সম্পুর্ণ সুস্থ ও সাধারণ মানুষের মতো জীবনযাপন করেন।

দেশে থ্যালাসেমিয়াবিষয়ক প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি : সত্তরের দশকে প্রথমবারের মতো ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল তথা সাইপ্রাস, ইতালি ও গ্রিসে মূলত থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। পরে তা সম্প্রসারিত হয়েছে ইউরোপ ও এশিয়ার অন্যান্য দেশে। যেমন- যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, থাইল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, তাইওয়ান, হংকং, কিউবা, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, জার্মানি, ইরানসহ বিভিন্ন দেশে। এসব দেশের বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে আছে বাহক নির্ণয়, জেনেটিক কাউন্সেলিং ও অনাগত সন্তানের ভ্রƒণ পরীক্ষা করা। এ ক্ষেত্রে দেশগুলোর স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান এবং এনজিওগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। সাইপ্রাস, লেবানন, ইরান, সৌদি আরব, তিউনিসিয়া, ইউএই, বাহরাইন, কাতার ও প্যালেস্টাইনসহ গাজা উপত্যকায় বিয়ের সময় পাত্র-পাত্রীর থ্যালাসেমিয়াবিষয়ক রক্ত পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। তবে এসব দেশে বাহকে বাহকে বিয়ে নিষিদ্ধ নয় এবং এরূপ ক্ষেত্রে বিয়ের সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট পাত্র-পাত্রীর এখতিয়ারাধীন। চীনেও এক সময় বিয়ে-পূর্ব থ্যালাসেমিয়ার পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। তা পরে ঐচ্ছিক করা হয়েছে। মালয়েশিয়া এবং উপমহাদেশের মালদ্বীপ ও শ্রীলংকায় বিয়ের আগে থ্যালাসেমিয়া বিষয়ে রক্ত পরীক্ষা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। সম্প্রতি পাকিস্তানের পার্লামেন্ট থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধে আইন প্রণয়ন করেছে। এই আইনে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগীর রক্তের আত্মীয়স্বজনের রক্ত পরীক্ষা বাধ্যতামূলক। এটিকে ঋধসরষু ঝপৎববহরহম বা ঈধংপধফব ঝপৎববহরহম বলা হয়। অতিসম্প্রতি ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সে দেশের সব গর্ভবতীর থ্যালাসেমিয়াবিষয়ক রক্ত পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করার জন্য একটি আইনের প্রস্তাব করেছে। তা এখনো পরীক্ষা-নিরীক্ষাধীন।

বাংলাদেশে সম্প্রতি আদালত বিয়ের আগে বর-কনের রক্ত পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল জারি করেছেন। এর কয়েকদিন পরই রাজধানীতে থ্যালাসেমিয়াবিষয়ক একটি জাতীয় কর্মশালায় আদালতের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে বিয়ের আগে থ্যালাসেমিয়াবিষয়ক রক্ত পরীক্ষার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। থ্যালাসেমিয়া মহামারী প্রতিরোধে বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা করা ও তা পক্ষদ্বয়কে অবহিত করার জন্য আইন প্রণয়ন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। পৃথিবীর যেসব দেশেই থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধ হয়েছে, সেখানেই আইন একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুসঙ্গ (ঋধপঃড়ৎ) হিসেবে কাজ করেছে। তবে যে বিষয়টি আলোচিত হচ্ছে, তা হলো আমরা এখনো প্রস্তুত নই। কিন্তু এটিও সত্য, আইনের উপস্থিতিও গণসচেতনতা আনতে সহায়তা করে এবং থ্যালাসেমিয়ার মতো একটি জটিল সামাজিক পরিস্থিতিকে প্রতিরোধে সহায়তা করবে। তা আমরা বিভিন্ন দেশের অবস্থা বিশ্লেষণ করলে সহজেই বুঝতে পারি।

আমাদের যা করণীয় : থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধ ও থ্যালাসেমিয়ামুক্ত সমাজ এবং রাষ্ট্র গঠন একটি অত্যন্ত জটিল প্রক্রিয়া। এ জন্য কয়েকটি প্রজন্ম (এবহবৎধঃরড়হ) আমাদের অতিক্রম করতে হবে হয়তো। বিশ্বের যেসব দেশে থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধ কর্মসূচি সফল হয়েছে, তা একদিনে সম্ভব হয়নি। তাদের বিভিন্ন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে আজকের অবস্থায় আসতে হয়েছে। আমরা সেসব দেশের তুলনায় অনেক পরে শুরু করলেও আমাদের সুবিধা এই যে, সেসব দেশের মতো অত বেশি সামাজিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হবে না। কারণ তাদের পরিণত অভিজ্ঞতা (ঊীঢ়বৎরবহপবং) আমাদের সামনে বিদ্যমান। তাদের অভিজ্ঞতা ও গৃহীত কর্মসূচি এবং আইন পর্যবেক্ষণ করে সহজেই আমরা আমাদের কর্মসূচি গ্রহণ করতে পারি।

প্রথমত, জনসচেতনতা : যে কোনো জনস্বাস্থ্য সমস্যা দূর করতে জনসচেতনতার বিকল্প নেই। গণসচেতনতার জন্য লিফলেট ও পোস্টারিং, বিভিন্ন প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন ও আর্টিকেল প্রকাশ, টক শো এবং সরকারি ও স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের আয়োজনে কমিউনিটিতে আলোচনা সভার আয়োজন করার প্রস্তাব ও অভিজ্ঞতা বিভিন্ন আলোচনায় এসেছে। আনুষ্ঠানিক শিক্ষার ক্ষেত্রে মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠ্যবইয়ে থ্যালাসেমিয়াকে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।

দ্বিতীয়ত, বাহক নির্ণয় : বাহক নির্ণয়ের জন্য বাংলাদেশের থ্যালাসেমিয়া আন্দোলনের সঙ্গে জড়িতদের কাছ থেকেও বিভিন্ন প্রস্তাব এসেছে। এর মধ্যে কমিউনিটিতে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে তরুণ-তরুণী, যুবক-যুবতী ও ছাত্রছাত্রীদের মঙ্গে স্ক্রিনিং কর্মসূচির কথা এসেছে। বাংলাদেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে কঠিন ও ব্যয়বহুল হবে এবং তা রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয়ের আশঙ্কা তৈরি করবে।

তৃতীয়ত, প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ : শুধু বাহক নির্ণয়ের জন্য সচেতনতা ও আইন প্রণয়নই যথেষ্ঠ নয়। সচেতনতা ও বাধ্যবাধকতার সঙ্গে সঙ্গে রক্ত পরীক্ষার প্রয়োজনীয় উপকরণ সহজলভ্য করতে হবে এবং ক্ষেত্রবিশেষে ডিএনএ অ্যানালাইসিস ও প্রিনেটাল ডায়াগনসিসের সুবিধাও তৈরি করতে হবে।

চতুর্থত, প্রিনেটাল টেস্টিং ও গর্ভপাত : সাধারণত ১০-১২ সপ্তাহেই গর্ভস্থ ভ্রƒণের জেনেটিক পরীক্ষা করা যায়। কেবল পিতা-মাতা উভয়েই যখন বাহক বা একজন বাহক, আরেকজন রোগী হন- তখনই কেবল এই পরীক্ষা করার প্রয়োজন হয়। এই পরীক্ষায় যদি প্রমাণিত হয়, গর্ভস্থ শিশু মারাত্মকভাবে আক্রান্ত অর্থাৎ বিটা থ্যালাসেমিয়া মেজর বা হিমোগ্লোবিন ই/বিটা থ্যালাসেমিয়া অথবা অন্যভাবে বলা যায়- ট্রান্সফিউশননির্ভর থ্যালাসেমিয়া (যাদের রক্তগ্রহণ করে বেঁচে থাকতে হয়), তা হলে অনাগত শিশুর ভবিষ্যৎ অবস্থা ব্যাখ্যা করে গর্ভপাতের ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করা যেতে পারে।

পঞ্চমত, বাহকে বাহকে বিয়ে নিরুৎসাহিতকরণ : থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুর জন্ম প্রতিরোধে বাহকে বাহকে বিয়ে বন্ধই একমাত্র প্রতিরোধমূলক উপায় হলেও বিষয়টি সহজ নয়। এটি আইন করে করা যায় না। তা ছাড়া এটি মানুষের মৌলিক ও মানবাধিকার আইনের পরিপন্থী। এ ধরনের আইন করা হলে বাহক ও রোগীদের সমাজে অবাঞ্ছিত করা হবে। সংক্ষেপে বলা যায়, প্রাথমিক স্বাস্থ্য কর্মসূচি ও পাঠ্যপুস্তকে থ্যালাসেমিয়াকে অন্তর্ভুক্তকরণ, বিয়ের আগে অথবা কাবিননামায় থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষার তথ্য সন্নিবেশ বাধ্যতামূলককরণ (দুজনই বাহক কিনা), প্রিনেটাল টেস্টিং ও আক্রান্ত ভ্রƒণ বিনষ্টের (অনড়ৎঃরড়হ) বিষয়ে সুস্পষ্ট আইনের উপস্থিতি এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে বাহকে বাহকে বিয়ে নিরুৎসাহিতকরণের মাধ্যমে অদূর ভবিষ্যতে আমরা থ্যালাসেমিয়ামুক্ত অথবা থ্যালাসেমিয়া নিয়ন্ত্রিত রাষ্ট্র গঠন করতে পারি। এ শতাব্দীতে থ্যালাসেমিয়ামুক্ত বাংলাদেশ আমাদের অঙ্গীকার এবং ২০৫০ সালের মধ্যেই আমরা একটি থ্যালাসেমিয়ামুক্ত বাংলাদেশ দেখতে চাই।

 

ডা. হাফিজুর রহমান

ডা. কামরুল হাসান : এমডি (হেমাটোলজি)

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com