ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খল ভেঙে পড়েছে। বেড়েছে দ্রব্যমূল্য। তবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে বলেছেন, দেশে দেশে খাদ্য পাঠানোর জন্য ভারত প্রস্তুত। কিন্তু বিবিসির ভারত প্রতিনিধি সৌতিক বিশ্বাস গতকাল এক প্রতিবেদনে প্রশ্ন তুলেছেন, ভারত কি আদৌ বৈশি^ক ক্ষুধা মেটাতে পারবে?
মোদি বলেছেন, ১৪০ কোটি ভারতবাসীর জন্য ‘পর্যাপ্ত খাবার’ মজুদ রয়েছে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা যদি চায়, তা হলে যে কোনো দিন মজুদকৃত খাদ্য সরবরাহে তার দেশ রাজি আছে।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্যমতে, ইউক্রেন যুদ্ধের আগেই দ্রব্যমূল্য ১০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছিল। যুদ্ধের পর তা আরও বেড়ে গেছে, যা ১৯৯০ সালের পর থেকে সবচেয়ে বেশি।
চাল ও গম উৎপাদনে ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। এ দুই খাদ্যের ৭ কোটি ৪০ লাখ টন মজুদ রয়েছে ভারতের। এর মধ্যে ২ কোটি ১০ লাখ টন রাখা আছে কৌশলগত সংরক্ষণ ও গরিবের জন্য নাম-মাত্র দামে বিক্রির জন্য। সবচেয়ে কম দামে ভারতই বিশ্বের গম ও চাল সরবরাহ করে থাকে। তারা প্রায় ১৫০ দেশে চাল ও ৬৮ দেশে গম রপ্তানি করছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে তারা ৭০ লাখ টন গম রপ্তানি করেছে।
তবে, দিল্লিভিত্তিক সেন্টার ফর পলিসি রিসার্চের জ্যেষ্ঠ কর্তা হরিশ দামোদার বিবিসিকে বলেছেন, ‘আমাদের হয়তো এ মুহূর্তে মজুদ আছে। কিন্তু এ নিয়ে অনেক কিছুই ভাববার ব্যাপার আছে। বিশ্বকে খাওয়াতে পাগলপ্রায় হওয়ার কিছু নেই।’
দামোদারের মতো অনেক চিন্তকের মাথায় একটা বিষয় ঘুরপাক খাচ্ছে- এবার তো প্রত্যাশার চেয়ে ভারতে ফসল উৎপাদন কম হবে। দামোদার যেমন বলেছেন, ‘উৎপাদনের পরিমাণ নিয়ে আমরা অতিশয়োক্তিতে ভুগছি। আগামী দশ দিনেই বোঝা যাবে আসল চিত্রটা কী।’ এ ছাড়া জৈব সারের প্রশ্নও থাকছে। ভারতে এর মজুদ কমে গেছে। এটাও ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব। বিশ্বের পটাশ রপ্তানির ৪০ ভাগই করে থাকে রাশিয়া ও বেলারুশ। আর, সৌতিক বিশ্বাস বলছেন, ভারতেই তো মানুষ বেশি দাম দিয়ে খাবার কিনছে। সেখানে খাবারের দাম দেড় বছরের মধ্যে মার্চে সাড়ে সাত শতাংশের বেশি দাম বেড়েছে।